চট্টগ্রাম জেলা
পরিষদের উদ্যোগে জেলার অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের শিক্ষাবৃত্তি
বিতরণ অনুষ্ঠান শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান
অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলাম, সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মাধ্যমিক
ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার।
স্বাগত বক্তব্য
রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল। বিভাগীয় কমিশনার বলেন,
শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য সরকার প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো
নির্মাণ করে দিচ্ছে। সেসব ভবনে সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে। ফলে, শিক্ষার্থীরা সুন্দর
ও মনোরম পরিবেশে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। স্বাধীনতা বিরোধীচক্র সব সময় মুক্তিযুদ্ধের
ইতিহাসকে বিকৃত করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কল্যাণে দিন-রাত
পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত ও সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমরা
কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন,
শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুরুত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে
হবে। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় ফাঁকি দিচ্ছে কিনা সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কলেজের পড়ালেখার
পাশাপাশি বাড়িতে পড়ালেখা করছে কিনা সে দিকে নজর দিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, তোমরাই শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার
অন্যতম কারিগর। তোমরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্ম বাজারের জন্য
দক্ষ ও উপযোগী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে সরকার।কার্যক্রমের অংশ
হিসেবে শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক দক্ষতা দেয়ার জন্য শিক্ষাক্রমে কারিগরি কোর্স অন্তর্ভুক্ত
করা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে একটি করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন
করা হচ্ছে। তিনি দেশের সাধারণ জনগণের কাছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
ও সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূমিকা তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। শিল্প-কারখানা
ও ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী কারিগরি শিক্ষানীতি, কারিকুলাম প্রণয়ন ও জব ম্যাচিং
করে কারিগরি শিক্ষাকে আরো কর্মমুখী করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে
সম্পৃক্ত সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় বাড়াতেও সরকার কাজ
করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সারা জীবনের জন্য যিনি আমাদের গঠন করে দেন তিনি আমাদের শিক্ষক।
আমাদের মানুষ হতে শেখান, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে দেন, আমাদের পুরো মনটাকে তৈরি করে দেন।
আমাদের মধ্যে স্বপ্ন জাগিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যান। আমাদের পুরো জীবনটাতে
তাদের অনন্য অসাধারণ ভূমিকা রয়েছে। শিক্ষার্থী কত নম্বর পেল, শুধু সেই নম্বর দিয়ে যেন
তার মান বিচার করতে না যাই। সে আসলে কতটা শিখলো, সে কতটা মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হলো
সেটি বিবেচ্য বিষয়। নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবন শৈশব, কৈশোর, শিক্ষা, রাজনীতি,
সংস্কৃতি, সংগ্রামী জীবন কোমলমতি ছাত্রছাত্রী ও সকলের কাছে পৌঁছানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
বিশেষ অতিথির
বক্তব্যে প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন, আজকের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই স্মার্ট বাংলাদেশ
গড়ার কারিগর। তাদেরকেই গড়তে হবে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের আগামী
দিনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম স্মার্ট মানুষে
পরিণত হবে। যেখানে বর্তমানে এআই ব্যবহার করে মেশিন টু মেশিন অটোমেশনে কাজ হচ্ছে সেখানে
আগের ধ্যান-ধারণা নিয়ে পড়ে থাকলে শিক্ষার্থীরা কাজের সুযোগ হারাবে। তাই যুগের সাথে
তাল মিলিয়ে নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন শিক্ষার্থীর প্রতিটি অর্জন
তাঁকেও গর্বিত করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের কর্ম-পরিকল্পনার
গ্রহণের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানান।
সভার প্রারম্ভে
রাখা স্বাগত বক্তব্যে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল জেলা পরিষদের
শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন
জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত
ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো: দিদারুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী
মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, সদস্য আবুল কাশেম চিশতী, দিলোয়ারা ইউসুফ, আ ম ম দিলশাদ, দেবব্রত
দাশ, মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, এইচ এম আলী আবরাহা দুলাল, ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমদ, রওশন
আরা রত্না।। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রতিবছর জেলার অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের
শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার জেলার উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর
পর্যায়ের ১৬১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ করা হয়।