লায়লা আখতার ফারহাদের
ধর্ষণ মামলায় টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে
কুমিল্লার পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হবে।
প্রিন্স মামুনের
বিরুদ্ধে লায়লা আখতার রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় ফৌজদারি বিধির ৩২৩, ৩০৭ ও ৫০৬ ধারায়
মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ০৫(১২)২০২৩)। পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে আদালত থেকে
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ ব্যাপারে সোশ্যাল
মিডিয়ার পরিচিত মুখ প্রিন্স মামুন বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে মাঝরাতে লায়লা ও আমার দু’জনার মধ্যে কিছুটা
ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তখন উত্তেজিত হয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। যা পরবর্তীতে মামলায় গড়ায়।
বিষয়টি এখন আইনিভাবে মোকাবিলা করব আমি।’
এছাড়া প্রিন্স
মামুন বলেন, ‘যিনি মামলা করেছেন
তিনি বলেছিলেন মামলাটি তুলে নেবেন। এ কারণে আমিও আর আদালতে কোনো হাজিরা দেইনি। আর আদালতে
হাজিরা না দেওয়ার জন্যই আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।’
ক্যান্টনমেন্ট
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লার পুলিশ
তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় ধর্ষণ মামলা রয়েছে।
কুমিল্লার পুলিশ প্রিন্স মামুনকে হস্তান্তর করবে।’
কে এই বহুল আলোচিত
টিকটকার প্রিন্স মামুন?
প্রিন্স মামুনের
উত্থান মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ‘টিকটক’ ও ‘লাইকি’র সুবাদে। বাংলাদেশে এসব অ্যাপ জনপ্রিয়তার
পেছনে কিছুটা হলেও মামুনের ভূমিকা আছে। নিজের করা মিউজিক ভিডিও সেখানে পোস্ট দিতেন
মামুন। সেখান থেকেই তার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা।
একটা সময়ে নাচ
শিখেছেন মামুন। সেই নাচের ভিডিও অনলাইনে শেয়ার দিতেন। শেয়ার দিতেন অনেক মজার ভিডিও।
এভাবেই তার ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনলাইন থেকে তার জনপ্রিয়তার ঢেউ এসে পড়লো অফলাইনেও।
বলা যায়, বাংলাদেশে টিকটকারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই টিকটকার মামুন। তার ফলোয়ার
বা অনুসারীর সংখ্যাও অগণিত। এখন তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে
শোরুম বা দোকান উদ্বোধন করেন।
প্রিন্স মামুন
ও লায়লা আক্তার ফারহাদ টিকটকের আলোচিত নাম। ফেসবুক-ইউটিউবের সামাজিক মাধ্যমে লায়লাকে
সঙ্গে করে বিনোদনভিত্তিক কন্টেন্ট বানিয়ে বরাবরই আলোচনায় ছিলেন মামুন। এই জুটি নানা
সময়ে আলোচনায় থেকেছেন। কখনও ঝগড়া করে, কখনও মামুনের নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ তুলে।
আবার কখনও মামুনের নামে লায়লা অভিযোগ তুলেছেন শারীরিক অত্যাচারেরও। তবে এবার সব ছাপিয়ে
লায়লা মামুনের নামে করলেন বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা!
মামলার এজাহারে
লায়লা লিখেছেন, মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার
গত তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে
মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে।
সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মত নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক
সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে
আমার বাসায় থাকার অনুমতি দিই।
তিনি আরও লিখেছেন,
২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে।
ওইদিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে
একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই
সেখানে এসে অবস্থান করতো। আমি মামুনকে একাধিকবার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে
সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
সর্বশেষ চলতি
বছরের ১৪ মার্চ মামুন আমাকে আবার ধর্ষণ করে। পরবর্তী সময়ে আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে
সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।