আজঃ বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

আদালতে স্থগিতাদেশ নেই কিন্তু নিয়োগ আটকে আছে

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ এপ্রিল ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ১৮ এপ্রিল ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়োগবিধিতে বলা আছে যে উপসহকারী প্রকৌশলী পদের জন্য আবেদনের যোগ্যতা পুরকৌশলে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণির ডিপ্লোমা। একই যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একই পদে লোকবল নিয়োগের জন্য। সব মিলিয়ে ৬২৭টি পদের জন্য প্রায় দুই বছর আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়োগপ্রক্রিয়া চলাকালে কয়েকজন প্রার্থীর হাইকোর্টে রিট আবেদনের কারণে পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়াই আটকে আছে। যদিও আদালত স্থগিতাদেশ দেননি।

এরই মধ্যে সবগুলো পদের লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এলজিইডির ২৬৩ পদের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ না পাওয়ায় এসব পদেও লোক নিয়োগ করা যাচ্ছে না। এতে ছয় হাজার ৬১৩ জন চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যত্ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এলজিইডি বলছে, মাঠ পর্যায়ে তাদের উপসহকারী প্রকৌশলীর তীব্র সংকট চলছে। এ অবস্থায় নিয়োগ আটকে থাকায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

অন্যদিকে পিএসসি বলছে, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় তাদের কিছু করার নেই।

২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় (নন-ক্যাডার) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি (নম্বর-১১-৫৬) দেয়। এরই মধ্যে অন্য সব পদের বেশির ভাগেই লোক নিয়োগ হয়ে গেছে। কিন্তু এলজিইডির ২৬৩, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৭২ এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১৭২টি উপসহকারী প্রকৌশলীর পদ ও একই অধিদপ্তরের ২০ এস্টিমেটর পদে নিয়োগ স্থগিত রয়েছে।

জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষার পর পিএসসি প্রার্থীদের সব কাগজপত্র দেখে বিভিন্ন কারণে ১৬১ জনকে অযোগ্য ঘোষণা করে। এর মধ্যে ১১০ জনকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় পুরকৌশলে ডিপ্লোমা না থাকায়। এই প্রার্থীরা কনস্ট্রাকশন টেকনোলজি ও অন্যান্য বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী। তাঁদের মধ্যে ৮৬ জন গত বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তাঁরা দাবি করেন যে তাঁদের ডিপ্লোমা পুরকৌশলের সমমানের। উচ্চ আদালত গত ২৮ ডিসেম্বর আবেদনকারীদের কেন মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। রুলে সাত বিবাদীকে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগেই গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে পিএসসি এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী পদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। গত ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন দুই হাজার ২০৯ জন প্রার্থী, যাঁরা এখন ফল পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।

তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের একই পদে চাকরিপ্রার্থী তিন হাজার ৪২ জনের মৌখিক পরীক্ষা আটকে গেছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরেও একই পদের জন্য এক হাজার ১২৫ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন। একই অধিদপ্তরের এস্টিমেটর পদে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ২৩৭ জন অপেক্ষায় আছেন।

এলজিইডি সূত্র জানায়, মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার আগে পিএসসি যোগ্যতার বিধি সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানায়। সেখান থেকে এলজিইডিকে জানিয়ে মতামত চাওয়া হয়। তখন এলজিইডি নিয়োগবিধিতে যা দেওয়া আছে, সে অনুযায়ী নেওয়ার জন্য মত দেয়।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রশাসন) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, যেখানে একটি উপজেলায় চারজন করে উপসহকারী প্রকৌশলী থাকার কথা, সেখানে বেশির ভাগ জায়গায় আছে দুজন। কোথাও কোথাও একজনও রয়েছে। জটিলতার বিষয়ে তিনি বলেন, পিএসসি আমাদের চিঠি দিয়ে জানায়, মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই যেন আইনি পদক্ষেপ নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। পরবর্তীতে আমরা একটা পক্ষ হয়ে উকিল নিয়োগ করেছি। একটি শুনানিও হয়েছে।

এলজিইডির আইনজীবী মিন্টু কুমার মণ্ডল বলেন, হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হলেও কোনো স্থগিতাদেশ দেননি আদালত। এর পরও পিএসসি নিয়োগ আটকে রেখেছে।

রিটকারী শিক্ষার্থীদের একজন রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, কারিগরি বোর্ড আমাদের সিভিলের (পুরকৌশল) সমমান দিয়েছে। সে জন্য আবেদন করেছি। পিএসসি জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে; যার কারণে আমরা পরীক্ষা দিয়ে মৌখিক পর্যন্ত যেতে পেরেছি। এখন কোনো সমাধান না পাওয়ায় রিট করতে হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: এলজিইডি

আরও খবর



হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, ৭ শতাধিক অ্যাকাউন্টে লেনদেন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাত শতাধিক ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে এসব টাকা।

দুদকের এমন অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার ফয়সাল, তাঁর স্ত্রী ও স্বজনদের ৮৭টি ব্যাংক হিসাব ও ১৫টি সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে ছয় কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবরুদ্ধ এবং ১৫টি সঞ্চয়পত্রে থাকা দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

আদালতে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে ইনকাম ট্যাক্স কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে বাণিজ্য, আয়করদাতাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ গ্রহণ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎসহ অবৈধ অর্থ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

তিনি অবৈধ অর্থের প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করতে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁর সম্পদ জব্দের এ আদেশ দেন।

আদালতে করা আবেদনে বলা হয়, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ ঘুষ লেনদেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের উদ্দেশ্যে শাহজালাল ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখায় তাঁর নিজ নামে বিভিন্ন এফডিআর হিসাব খোলেন।

মেয়াদ পূর্তির পর এফডিআর ভাঙানো টাকা ও নতুন করে নগদ এনে ফারহানা আক্তার, মমতাজ বেগম, মাহমুদা হাসান, খন্দকার হাফিজুর রহমান, কারিমা খাতুনের নামে বিভিন্ন এফডিআর স্কিম খোলেন। পরে ওই অর্থ এবি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, লংকা-বাংলা ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স এবং সব শেষে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শাখায় ওই লোকজন ছাড়াও আহম্মেদ আলী, আফতাব আলী, শেখ নাসির উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের নামে সাত শর বেশি হিসাব খুলে অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করতে স্থানান্তর বা রূপান্তর বা হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ফয়সালের যত সম্পদ

কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ ১৪ জনের ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ছয় কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করেছেন আদালত। পাশাপাশি ফয়সালসহ সাতজনের নামে থাকা ১৫টি সঞ্চয়পত্রে থাকা দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ফয়সালের স্ত্রী আফসানাসহ চারজনের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের নামে ডাচ বাংলা ব্যাংকে ৫০ লাখ টাকার দুটি সঞ্চয়পত্র, তাঁর স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে চারটি সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা, আফতাব আলীর নামে দুটি সঞ্চয়পত্রে ৩০ লাখ টাকা, কাজী খালিদ হাসানের নামে একটি সঞ্চয়পত্রে ৩০ লাখ টাকা, খন্দকার হাফিজুর রহমানের নামে দুটি সঞ্চয়পত্রে ৪০ লাখ টাকা, আহম্মেদ আলীর নামে তিনটি সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা ও মাহমুদা হাসানের একটি সঞ্চয়পত্রে পাঁচ লাখ টাকা রয়েছে।

ফয়সাল ছাড়া অন্য যাঁদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ হয়েছে তাঁরা হলেনশেখ নাসির উদ্দিন, মমতাজ বেগম, রওশন আরা খাতুন, আহম্মেদ আলী, খন্দকার হাফিজুর রহমান, ফারহানা আফরোজ, আশরাফ আলী মুনির, আফতাব আলী তানির, মাহফুজা আক্তার, মাইনুল হাসান, আফসানা জেসমিন, মাহমুদা হাসান ও কাজী খালিদ হাসান। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে আফসানা জেসমিনের নামে ১০ কাঠা জমি, ২০০ বর্গমিটারের প্লট, আবু মাহমুদ ফয়সালের নামে ভাটারা, খিলগাঁও ও রূপগঞ্জে থাকা স্থাবর সম্পদ, আহমেদ আলীর নামে থাকা ফ্ল্যাট ও কার পার্কিংয়ের তিন হাজার ২২৮ বর্গফুট স্থাবর সম্পদ ও মমতাজ বেগমের নামে থাকা ১০ কাঠা জমি জব্দ করা হয়েছে।


আরও খবর



বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা কাউছ মিয়া আর নেই

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৫ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা, চাঁদপুরের কৃর্তী সন্তান, পুরান ঢাকার হাকিমপুরী জর্দার ব্যবসায়ী মো. কাউছ মিয়া (৯৪) আর নেই। সোমবার (২৪ জুন) দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৮ ছেলে ও ৮ মেয়ে রেখে গেছেন কাউছ মিয়া। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বাদ জোহর ঢাকার আরমানিটোলা মাঠে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

খবরটি নিশ্চিত করে কাউছ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, আব্বা বার্ধক্যের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর দেশে আনা হয়। পুরান ঢাকার বাসভবনে শয্যাশায়ী ছিলেন। শনিবার বিকেলে আব্বার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুইদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নেন। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চাই।

কাউছ মিয়া চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। তিনি দীর্ঘদিন চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজারে ব্যবসা করেন। পরে হাজিগঞ্জে, সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ব্যবসা করেন।

হাকিমপুরী জর্দার ব্যবসার পাশাপাশি তার বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা ছিল। ২২ বছর বয়স থেকে ব্যবসা শুরু করেন এবং টানা ৭১ বছর এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার পর তিনি চিরতরে চলে গেলেন।

কর প্রদানে সততা, আন্তরিকতা ও প্রণোদনার স্বীকৃতিস্বরূপ হাজি মো. কাউছ মিয়াকে সিআইপি মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। পরে যতবার এনবিআর করদাতার সম্মাননা দিয়েছে ব্যক্তি পর্যায় সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে প্রতিবারই অর্থাৎ টানা ২০বার তিনি শীর্ষ করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন।


আরও খবর



ইসলাম প্রচারের পর কীভাবে কোরবানির প্রচলন শুরু হয়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মক্কায় প্রতি বছরই কোরবানি দেওয়া হতো। কিন্তু তখন মক্কার বাসিন্দার বিভিন্ন দেবদেবীর নামে সেগুলো কোরবানি দিতেন। ফলে ইসলামের নবী সেই সময় মক্কায় থাকলেও তিনি এই রীতি অনুসরণ করতেন না।

নবুয়ত প্রাপ্তির প্রায় তের বছর পরে মদিনায় হিজরত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানি দেয়ার রীতি চালু হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হালাল সনদ বিভাগের উপ-পরিচালক মাওলানা মোঃ আবু ছালেহ পাটোয়ারী বলেন,ইসলামের অনেক বিধিবিধান রাসুল (সাঃ) মদিনায় আসার পর কার্যকর হয়েছে। কারণ তিনি ইসলাম প্রচার শুরু করার পর মক্কার মানুষের মধ্যে একাত্মবাদ প্রতিষ্ঠা ছিল প্রাথমিক কাজ। আর মদিনায় হিজরত করে আসার পর ইসলামের বিধিবিধান জারি হয়।

হিজরি দ্বিতীয় সনে রোজা এবং ঈদুল ফিতরের প্রবর্তন হয়েছিল। অবশ্য তার আগে থেকেই মদিনার মানুষজন অনেকটা একই আদলে উৎসব এবং রোজা পালন করতেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোঃ আতাউর রহমান মিয়াজী বলেছেন, হিজরি দ্বিতীয় সনে ঈদের প্রবর্তন করা হয়েছিল।

আনাস নামে নবী মুহাম্মদের একজন সাহাবী বা সাথীর বর্ণনা করা একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়া বলছে, মদিনায় যাওয়ার পর নবী দেখলেন যে সেখানকার মানুষ বছরে দুইটি বড় উৎসব পালন করে।

তিনি তখন জানতে চান, সেগুলো কী উৎসব?

এগুলো ছিল নওরোজ এবং মিহিরজান নামে দুটি উৎসব - যেগুলো সেখানকার বাসিন্দাদের ধর্ম এবং গোত্রের রীতি অনুযায়ী একটি শরতে এবং আরেকটি বসন্তকালে উদযাপিত হত।

অধ্যাপক মিয়াজী বলেছেন, তখন ওই দুইটি উৎসবের আদলে মুসলমানদের জন্য বছরে দুইটি ধর্মীয়, সামাজিক এবং জাতীয় উৎসব পালনের রীতি প্রবর্তন করা হয়।

সেই দুই ঈদের একটি হজের সময় পালন করা হতো, যা ঈদুল আজহা নামে পরিচিত। তবে ইসলাম প্রচারের পর ঠিক কবে আর কীভাবে প্রথম কোরবানি দেয়া হয়েছে সেই সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য পাওয়া যায় না।

কোন কোন ইতিহাসবিদ বলেন, মদিনায় আসার পর ইসলামের নবী প্রথম দুইটা দুম্বা নিজ হাতে কোরবানি দিয়েছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, একটা আমার নিজের পক্ষ থেকে আরেকটা আমরা উম্মতের পক্ষ থেকে।

মাওলানা মোঃ আবু ছালেহ পাটোয়ারী বলেন, ইসলামের অনেক কিছুই আগের পয়গম্বরদের রীতি মেনে করা হয়েছে। যেমন প্রথম দিকে বায়তুল মোকাদ্দেসের দিকে সিজদা করা হলেও পরবর্তীতে ইব্রাহিম (আঃ) এর আদর্শ অনুযায়ী কাবার দিকে সিজদা করা হয়। কোরবানির ব্যাপারটিও তেমনি এসেছে।

তিনি বলছেন, ইসলামের কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী, আদম (আঃ) থেকে কোরবানি শুরু হয়েছে। তবে সুরা কাওসার ও সুরা হজে কোরবানি করার নির্দেশনা পাওয়া যায়। এই সুরা কাওসার নাজিল হয়েছিল হিজরতের আগেই, রাসুল (সাঃ) মক্কায় থাকার সময়। আর সুরা হজ মক্কা ও মদিনায় মিলিয়ে নাজিল হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

এই দুইটি সুরাতেই কোরবানি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পাটোয়ারি বলছেন, এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, রাসুল (সাঃ) মক্কায় থাকার সময় থেকেই কোরবানির বিষয়টা এসেছে।

তবে তিনি প্রথম কবে কোরবানি দিয়েছেন, সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

মাওলানা মোঃ আবু ছালেহ পাটোয়ারী জানাচ্ছেন, তিরমিজি হাদিসে উল্লেখ আছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর বলেছেন, হিজরতের পরে রাসুল (সাঃ) ১০ বছর মদিনায় ছিলেন, ১০ বছরেই কোরবানি করেছেন। আর আনাস ইবনে মালিক বলেছেন, রাসুল (সাঃ) দুইটা শিং ওয়ালা নাদুস-নুদুস দুম্বা জবাই করেছেন আর বলেছেন একটি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে একটা আমার পক্ষ থেকে।

আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, তিনি সবসময়ে দুটা দুম্বা কোরবানি দিতেন, বলেন পাটোয়ারি।

যারা হজ বা ওমরাহ করতে যেতেন, তারা কোরবানির জন্য উট বা দুম্বার মতো পশু সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। এসব পশুকে বলা হতো হাদি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোঃ আতাউর রহমান মিয়াজী বলেন, ষষ্ঠ হিজরিতে বা ৬২৮ খৃষ্টাব্দে যখন রাসুল (সাঃ) ওমরাহের উদ্দেশ্যে রওনা হন, তখন হুদাইবিয়ায় বাধা দেয়া হলে তিনি তাবুতে অবস্থান করেন। হুদাইবিয়ার সন্ধি হলে তিনি সেই সময় নিজের ও পরিবারের জন্য উট কোরবানি দেন।

এ সময় তিনি ৬৩টি উট কোরবানি দেন বলে জানা যায়। সেই সময় ইসলামের বিধিবিধানে উট, মহিষ, গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কোরবানি দেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মাওলানা মোঃ আবু ছালেহ পাটোয়ারী বলেছেন, ষষ্ঠ হিজরিতে ওমরাহ করতে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পশুগুলোকে সাথে করে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম ছিল। তখন কোরবানি ছাড়া আরেকটা রীতি ছিল। পশুগুলোর সিনায় কেটে দাগ লাগিয়ে মক্কার দিকে ছেড়ে দেয়া হতো, যাতে বোঝা যেতো যে এগুলো কোরবানির পশু। হুদাইবিয়ার সন্ধির পর কিছু পশু কোরবানি দেয়া হয়, আর কিছু পশুকে সিনায় দাগ লাগিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

পাটোয়ারি বলছেন, দশম হিজরিতে রাসুল (সাঃ) মক্কা বিজয়ের পর সেই বছর তিনি নিজে আনুষ্ঠানিকভাবে হজ করেন এবং কোরবানি দেন।

এর আগের বছর সাহাবী আবুবকরের নেতৃত্বে একটি দলকে হজের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই দলের সঙ্গেও কোরবানির জন্য হাদি বা পশু ছিল।


আরও খবর



চলতি অর্থবছরে ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমেছে ১৫ শতাংশ

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৩ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারায় ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমেছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই- মার্চ) ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। পাশাপাশি নিষ্পত্তি কমেছে ২০ শতাংশেরও বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২- ২৩ অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) সময়ে ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ৬১৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের। যা চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে ৫২৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলারে। সে হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে এলসি খোলা কমেছে ৯০ কোটি ৫ লাখ ডলারের। এলসি খোলার হার কমেছে ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছিল ৬০৩ কোটি ২৩ লাখ ডলারের। চলতি ২০২৩- ২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ভোগ্যপণ্যের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮২ কোটি ১৮ লাখ ডলারের। সে হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ১২১ কোটি ৫ লাখ ডলারের এলসি কম নিষ্পত্তি হয়েছে। শতকরা হিসাবে এলসি নিষ্পত্তির হার হ্রাস পেয়েছে ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আমদানিকারকরা জানান, ডলার-সংকটের চাপ সামলাতে বিলাসী পণ্যের ওপর কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করা হলেও তা একটা পর্যায়ে নিত্যপণ্যের ওপরও পড়েছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় আমদানিকারকেরা পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডলার সরবরাহ করে পণ্য আমদানি করা হয়েছে। তবে এত দামে ডলার কিনে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা সত্ত্বেও আমদানির জন্য এলসি খোলা এবং নিষ্পত্তি দুটোই কমেছে। এতে পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ১ হাজার ৭৯১ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে শিল্পের কাঁচামালের এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৭৬৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের। সে হিসাবে ২৫ কোটি ২৬ লাখ ডলারের এলসি কম খোলা হয়েছে। একইভাবে গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ২ হাজার ৮২ কোটি ১৪ লাখ ডলারের। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ৬২৭ কোটি ২৯ লাখ ডলারের। সে হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ৪৫৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের এলসি কম নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: এলসি আমদানি

আরও খবর



‘পুলিশ কেন পুলিশকে গুলি করেছে জানতে তদন্ত করা হচ্ছে’

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে কাউসার আলী নামে এক পুলিশ সদস্য মনিরুল ইসলাম নামে আরেক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে। কাউসার কি কারণে মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেছে তা জানতে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। শনিবার (৮ জুন) দিবাগত ২ টা ৩০ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইজিপি এ তথ্য জানান।

আইজিপি বলেন, ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে আমাদের দুইজন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিল। এদের মধ্যে কনস্টেবল কাউসার আলীর গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান । এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়ি চালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তার শরীরে ৩ রাউন্ড গুলি লেগেছে। আক্রমণকারী কনস্টেবলকে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং তাকে নিরস্ত্র করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মনিরুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা কিছু গুলির খোসা এবং বিশ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছি।

প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ কি জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বলেন, ঘটনার কারণ জানতে আমরা কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আক্রমণকারীকে আমরা ইতিমধ্যে আটক করেছি, ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানাটা খুব কঠিন হবে না।

এর আগে, গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম ঘটনা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এক পুলিশ সদস্য আরেক পুলিশ সদস্যকে গুলি করেছে।


আরও খবর