ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বন্ধু ও
অংশীদার হিসেবে ‘স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের
লক্ষ্যকে’ সমর্থন জানাবে
তার দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পররাষ্ট্র-প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এসেছে
বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রসঙ্গও।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেছেন,
বাংলাদেশের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থান ‘স্পষ্টভাবেই’ তুলে ধরেছেন
তারা।
শুক্রবার দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অ্যান্তনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
ওই বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে বিনয় কোয়াত্রার
কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে
‘উদ্বেগ’, সে বিষয়ে কোনো
আলোচনা হয়েছে কি-না।
উত্তরে তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্বের
অন্যান্য প্রান্তের আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের
বিষয়ে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে
ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে রাজনৈতিক সংঘাত, সহিংসতা, যা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের
অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ধারাবাহিকভাবে হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি
দিচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানের বিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই
নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ঢাকায় সহিংসতায়
হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ কয়েকটি দেশের
কূটনৈতিক মিশন। বিভিন্ন মহল থেকে সংলাপের আহ্বান জানানো হচ্ছে, কিন্তু বিবদমান কোনো
পক্ষই তাতে সাড়া দেয়নি।
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ
পশ্চিমা সরকারগুলোকে প্রতিবারই সরব হতে দেখা যায়। এবার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য
নতুন ভিসা নীতি কার্যকর করেছে, যার আওতায় ‘সুষ্ঠু নির্বাচনে
বাধাদানকারীদের’ যুক্তরাষ্ট্রের
ভিসা দেওয়া হবে না।
স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে
সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী ভারতেরও আগ্রহ থাকে। সে কারণে বাংলাদেশের বিষয়ে এর আগেও কথা হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে। তবে সেসব বিষয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত
বলেন না।
শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র
সচিব বলেন, তৃতীয় দেশের নীতি নিয়ে মন্তব্য করা আমাদের জায়গা নয়। আমি মনে করি, যখন বাংলাদেশ,
বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয় আসে, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণই তাদের
ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বন্ধু ও অংশীদার হিসাবে ‘স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ
ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের লক্ষ্যকে’ ভারত সমর্থন জানাবে বলে মন্তব্য করেন
তিনি।
বিনয় কোয়াত্রা বলেন, বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ
বন্ধু ও অংশীদার হিসাবে আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানাই এবং
স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল জাতি গড়ার যে রূপকল্প তারা ঠিক করেছে, সেক্ষেত্রে
ভারত সমর্থন অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন
প্রান্তের পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমরা খুব স্পষ্ট ছিলাম।