আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

জয়পুরহাটে নিজ বাড়িতে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটে জোসনা কুন্ডু (৬৫) নামের এক বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দুপুরে জয়পুরহাট শহরের হরিবাসর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বৃদ্ধার ছেলে নিশিত কুমার কুন্ডু (৩২) কে আটক করেছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জোসনা কুন্ডু পৌরসভার হরিবাসর মোড় এলাকার মৃত হরিকুন্ডুর স্ত্রী।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, ওই বৃদ্ধা নিজ বাড়িতে তার ছেলেসহ বাস করেতেন। দুপুরে দিকে স্থানীয়রা তার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করে।

তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হত্যা রহস্য উদঘাটনে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে সিআইডি, ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। ওই বৃদ্ধার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে সে মাদকাসক্ত ছিলেন বলেও জানান পুলিশ সুপার।

নিউজ ট্যাগ: জয়পুরহাট

আরও খবর



নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন প্রকল্প নিচ্ছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সোমবার এ উদ্দেশ্যে সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণপূর্তমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নও সম্ভব হলে গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন গণপূর্তমন্ত্রী।

সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো.মোস্তাফিজুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি ও তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন গণপূর্তমন্ত্রী।

প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় বনায়ণ, উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ, খেলার মাঠ, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর ব্যবস্থা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুযোগ রাখার পরামর্শ দেন গণপূর্তমন্ত্রী।

প্রাথমিকভাবে তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় টঙ্গীর দত্তপাড়ায় তিনটি পর্যায়ে ১০০টি বহুতল ভবনে, ১২ হাজার ৬০০ ফ্ল্যাট নির্মাণের যে প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন।

সভায় জানানো হয়, ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৭টি ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ২ হাজার ১৪২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ২য় পর্যায়ে ৪৭টি ভবনে ৫ হাজার ৯২২টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬টি ভবনে ৫ হাজার ৪৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ সময় মন্ত্রী রাজধানীর কড়াইল বস্তি ও টি এন্ড টি কলোনীর বস্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে পৃথক পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন।

৭৫০ বর্গফুট গ্রস আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের অভিন্ন ডিজাইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান স্থপতিকে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে জানান উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী।

উল্লেখ্য যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উত্তরা আবাসন প্রকল্পে (তৃতীয় পর্যায়) নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি নির্দিষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উক্ত জমিতে নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্যও নির্দেশনা প্রদান করেন গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী।

ইতোমধ্যে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এসব ফ্ল্যাটে তারা স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাস করছে।

এছাড়া সিরাজগঞ্জের কোবদাস পাড়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্বল্প আয়ের মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত, ভূমিহীন বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে সরকারের এসব জনহিতকর কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বসাধারণের মাঝে ইতিবাচক প্রচারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন।


আরও খবর



বাবর আলীর এভারেস্ট জয়

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ রবিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান।

গত ১ এপ্রিল হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১১ বছর প্রতীক্ষার পর তৃতীয় মেরুতে উড়ল লাল-সবুজের পতাকা।

যদিও বাবরের অভিযান এখনো শেষ হয়নি, তার লক্ষ্য শুধু এভারেস্ট নয়, সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসেও। রবিবার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারও শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছে যাবেন এর চূড়ায়।

উল্লেখ্য, ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। এর পর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন তিনি। সাইকেলিংয়ের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এই তরুণ।


আরও খবর



দেশের মানুষ আজ ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ তাদের ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য এভাবেই আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে।

বুধবার (১ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এটা শুধু বিএনপির সংগ্রাম নয়, এটা দেশের মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম। অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে মে দিবস পালন করছি, যখন দেশটা দৈত্য-দানবের কবলে পড়ে সমস্ত কিছু তছনছ হয়েছে। আমাদের অগণিত নেতাকর্মী সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মে দিবসে দেশের সকল মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, এখন আর চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আনব। এই হোক আজকের মে দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন, তদন্ত হলেও সমাধান নেই

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ৩২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবার এর কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্ঘটনা এড়াতে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ফলে নিয়মিত বিরতিতে আগুন লাগছেই। রবিবার (৪ মে) চাঁদপাই রেঞ্জের ছিলা এলাকায় আগুন লাগে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বনরক্ষী ও স্থানীয়রা।

অগ্নিকাণ্ড এড়াতে বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জোরালোভাবে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ তিনটি হলো, সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ের সঙ্গে মিশে যাওয়া নদী ও খাল খনন, অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে নজরদারির ব্যবস্থা করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদীর কোলঘেঁষে বনের পাশ দিয়ে কাঁটাতার অথবা নাইলনের রশির নেট দিয়ে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় তিনটি সুপারিশই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

সুন্দরবনে ২২ বছরে ৩২ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৯০ একর বনভূমি। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো ২০০২ সালের ২২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের কটকাতে। ওই ঘটনায় পুড়ে যায় প্রায় এক একর ছন বন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলি ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় পুড়ে যায় তিন একর বনভূমি। একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়াবেড় এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় ৯ শতক ছন বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের অধীন কদলতেজী এলাকায় পুড়ে যায় প্রায় তিন একর বন। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একই এলাকার তুলাতলায় পুড়ে যায় ৪.৫ একর বনভূমি। এরপর ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকা এলাকায় আগুন লাগে। এর কিছু দিন পর ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়ায়ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

এর একদিন পর কলমতেজির টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকার দেড় একর, ১ মে নাংলির পঁচাকুড়ালিয়া এলাকার ৫০ শতক, তিন দিন পর ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২.৫ একর বনভূমি। ২০০৭ সালে ৩ দফায় (১৫ জানুয়ারি, ১৯ মার্চ ও ২৮ মার্চ) একই এলাকার প্রায় ১৫ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় প্রায় পাঁচ একর বন পুড়ে যায়। পরে ২০১১ সালের মার্চ মাসে দুই দফা বনে আগুন লাগে। এতে প্রায় সাড়ে তিন একর বন পুড়ে যায়। প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে যায় ২০১৪ সালের ২৫ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকার আগুন লাগে। ১৩ এপ্রিল একই এলাকায় ফের আগুন লাগে। পুড়ে যায় ৮.৫ একর বন।

১৮ এপ্রিল আব্দুল্লাহর ছিলায় এবং ওই বছরের ২৭ এপ্রিল তুলতলার বিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় আগুন লাগে। ২০২১ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুড়েছে দানসাগর টহল ফাঁড়ি এলাকার প্রায় চার শতক বনভূমি।

প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার পরে আগুনের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও পরে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে সুপারিশসহ রিপোর্টও পেশ করে। তবে সেসব রিপোর্টের প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যায় না।

জানা গেছে, শুধু আগুনেই পুড়ছে না সুন্দরবন। বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদই ধ্বংস করে চলছে প্রতিনিয়ত একশ্রেণির চক্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাঘ, হরিণ হত্যাসহ বনের সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। এই অবস্থার মধ্যে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার দেশের ফুসফুসখ্যাত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনে আয়তন ছিল বর্তমানের দ্বিগুণ। কমতে-কমতে বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন এখন দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যা দেশের সংরক্ষিত বনভূমির সর্বমোট ৫১ ভাগ। ২৪ ঘণ্টায় দুবার সমুদ্রের জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবন।

সংরক্ষিত এই বনের তিনটি এলাকাকে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ইউনেসকো ৭৯৮তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। বর্তমানে যা সমগ্র সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এলাকা। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুরসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি রয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, লোনা পানির কুমির, গুইসাপ, কচ্ছপ, ডলফিন, অজগর, কিংকোবরাসহ ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তর জলাভূমিও। সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ দশমিক এক বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। ১৯৯২ সালে সমগ্র সুন্দরবনের এই জলভাগকে রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া সুন্দরবনের সমুদ্র এলাকার পরিমাণ এক হাজার ৬০৩ দশমিক দুই বর্গ কিলোমিটার।

এই জলভাগে ৪৫০টি ছোট-বড় নদী ও খালে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার।

ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে হারিয়ে গেছে এক প্রজাতির বন্য মহিষ, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।

করোনাকালে গোটা সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা রেড অ্যালার্ট জারি করে পর্যটক, জেলে-বনজীবীদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন অধিদফতর। এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও হুমকিতে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য বনে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে বনরক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল কবির বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা বনজীবীদের বিড়ি সিগারেটের আগুনে অনেক সময় আগুন লাগে। এ জন্য আমরা বনজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ মতে ওয়াচ টাওয়ার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ, হরিণ হত্যার পাশাপাশি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও আগুন দস্যুদের হাত থেকে সুন্দরবন রক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিংসহ সব ধরনের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।


আরও খবর



ফরিদপুরে বিজিবি মোতায়েন

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই সহোদর ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জেলাজুড়ে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে চার প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর নিকটে এবং বাঘাটে বাজার এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে।

এর আগে সকালে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা গেছে, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে সমবেত হয় পাঁচ শতাধিক জনতা। আনুমানিক আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মধুখালীর ঈদগাঁ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি মহাসড়কে উঠে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে কামারখালী সেতুর দিকে এগোতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকে। একাধিক ভাগে বিভক্ত বিক্ষোভকারী মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, নওয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি ও বাগাটের ঘোষঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

বাগাটের ঘোষঘাটে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি এনে অবরোধ করে এবং সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওয়াপাড়ার মোড়ে একটি ইটভর্তি ট্রাক সড়কের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষোভকারীরা জানায়, পুলিশের হামলায় তাদের চারজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে এবং বাকি একজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ওই মহাসড়কের মালেকা চক্ষু হাসপাতাল থেকে ফরিদপুরের দিকে এবং বাগাটের ঘোষঘাট এলাকা থেকে কামারখালী সেতুর দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

মধুখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন বলেন, ডুমাইনের পঞ্চপল্লীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধুখালী উপজেলার পাইলট স্কুল থেকে নওয়াপাড়া পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। কোথাও বুঝিয়ে আর কোথাও টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে নিবৃত্ত করা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ এমদাদ হুসাইন বলেন, বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে এ ঘটনায় হতাহত বা জানমালের ক্ষতিসাধনের ঘটনা ঘটেনি।

নিউজ ট্যাগ: বিজিবি মোতায়েন

আরও খবর