ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে কাতার। রবিবার (৫ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এ আশ্বাস দেন। স্বল্পোন্নত দেশগুলো নিয়ে কাতারে আয়োজিত পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে দেশটির আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে উদ্ধৃত করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাতারের আমির বলেছেন, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। কাতার সব সময় বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।
মোমেন বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কাতারের কাছ থেকে আরও বেশি জ্বালানি, বিশেষ করে বার্ষিক আরও ১০ লাখ মেট্রিক টন (এমটিএ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, আমরা কাতারের সাহায্য চাই। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ জ্বালানি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমি চুক্তি নবায়ন করতে চাই। আমি আরও এলএনজি চাই।
জবাবে কাতারের আমির জানতে চান বাংলাদেশ কতটা জ্বালানি চায়। তাকে বলা হয়, বাংলাদেশ আরেকটি এমটিএ অর্থাৎ ১৬-১৭ কন্টেইনার জ্বালানি চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে আমির বলেন, আপনার কাতার ছাড়ার আগে আমার জ্বালানিমন্ত্রী এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবেন।
আমির বলেন, আমি আমাদের জ্বালানিমন্ত্রীকে নির্দেশ দিচ্ছি- আপনার কাতার ত্যাগ করার আগে আমার জ্বালানিমন্ত্রী আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪০টি কন্টেইনার জ্বালানি আমদানি করছে, যার পরিমাণ ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৫ এমটিএ। শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে শেখ তামিম হ্যাঁ-সূচক জবাব দেন। আমির বলেন, আমি কথা দিচ্ছি- এ বছর বাংলাদেশ সফর করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে এবং বিভিন্ন দেশ সেখানে বিনিয়োগ করছে। কাতার সেই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারে। কাতারে যে বাংলাদেশি শ্রমিকরা রয়েছে, তাদের বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে আমিরকে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা। জবাবে শেখ তামিম বলেন, আমি সব সময় বাংলাদেশ ও বাঙালির কল্যাণ চাই।
কিউএনসিসির দ্বিপক্ষীয় সভাকক্ষে ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনারের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউএনডিপিকে নেতৃত্ব দিতে বলেছিলেন, যাতে এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েট হওয়া দেশগুলো একবারে এলডিসিগুলোর জন্য এনটাইটেলকৃত সব আন্তর্জাতিক সুবিধা না হারায়।
ইউএনডিপি প্রশাসক বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন এবং গ্রামীণ এলাকায় নগর সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের জন্য প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ছেন, তা নতুন মডেলে পরিণত হচ্ছে।
বাণিজ্য ও উন্নয়ন-বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান কিউএনসিসিতে পৃথকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।