আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

কম্বোডিয়ায় সাইবার দাসত্বের শিকার বাংলাদেশিরা

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ অক্টোবর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
ফিরোজ মাহমুদ

Image

ভাই, আমার বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুরে, আমি কম্বোডিয়া থেকে বলছি। আমার এলাকার মাসুম খান আমাকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে চাঁদপুরের জাহাঙ্গীর আলম নামে এক দালালের মাধ্যমে ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কম্বোডিয়ায় পাঠায়। কম্বোডিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই অফিসিয়াল প্রয়োজনের কথা বলে আমার কাছ থেকে রেখে দেয়া হয় পাসপোর্ট। পরে এক চাইনিজ এজেন্টের কাছে আমাকে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন বাড়ি থেকে পাঁচ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) এনে না দিলে বের হতে দেবে না। এছাড়া তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না করলে অনেক নির্যাতন করে। কালও অনেক মারধর করেছে। ভাই, আপনি কি সাহায্য করতে পারবেন? একটু চেষ্টা করেন, বের করতে পারেন কি-না। যদি পারেন আমার অনেক উপকার হয়।

গত শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১টা ২২ মিনিটে কম্বোডিয়া থেকে সেখানকার এক চীনা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশি এক কর্মীর পাঠানো বার্তাটি আসে এ প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে। ওই বার্তার সূত্র ধরে কথা হয় ওই কর্মীর সঙ্গে। উঠে আসে কম্বোডিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশিদের ওপর নির্যাতনের রোমহর্ষক চিত্র।

বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়ে বিদেশে জিম্মি করা, নির্যাতন করার ঘটনা নতুন নয়। তবে এখন প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ কর্মীদের মোটা অঙ্কের বেতনের কথা বলে নেয়া হচ্ছে কম্বোডিয়ায়। সেখানে গিয়ে সাইবার দাসত্বের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। একেক জনকে ১ থেকে ৫ হাজার ডলারে বিক্রি করা হচ্ছে চাইনিজ ব্যক্তিমালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। প্রযুক্তিগত দক্ষ বাংলাদেশিদের নানারকম সাইবার ক্রাইমের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে কিংবা চলে আসতে চাইলেই করা হচ্ছে নির্যাতন। কম্বোডিয়া বিক্রি হয়ে সাইবার দাসত্বের শিকার বাংলাদেশিরা আজকের দর্পণকে জানিয়েছেন তাদের নির্মম নির্যাতন ও করুণ পরিণতির কথা।

আইওএম বাংলাদেশের তথ্যমতে, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বিদেশ যান। যাদের মধ্যে অনেকেই পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তু হন। কোনো কোনো অভিবাসী ঋণ, জোরপূর্বক শ্রম, যৌন শোষণ, জোরপূর্বক বিয়ে এবং দাসত্বের শিকার হন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়া দুই প্রান্তেই রয়েছে বাংলাদেশি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। বাংলাদেশ থেকে মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরির কথা বলে বাংলাদেশিদের কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়। কাজের কথা বলা হলেও তাদের নেয়া হয় কম্বোডিয়ায় ভ্রমণ ভিসায়। কম্বোডিয়াতে চক্রের বাংলাদেশি সদস্যরা চাইনিজ ব্যক্তিমালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের বিক্রি করে দেয়। কখনো কখনো একজনকে কয়েক দফায় একাধিক প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করা হয়। কাজের দক্ষতার ভিত্তিতে একেক জনকে ১ থেকে ৫ হাজার ডলারে বিক্রি করা হয়। কম্বোডিয়ায় পৌঁছানোর পর পরই অফিসিয়াল প্রয়োজনের কথা বলে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে রেখে দেয়া হয় পাসপোর্ট। বিক্রি করা ছাড়াও পাসপোর্ট জিম্মি করেও অনেকের কাছ থেকে আদায় করা হয় লাখ টাকা। কেউ প্রতিবাদ করলে করা হয় নির্যাতন।

করুণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন কম্বোডিয়ায় নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশিরা। তবে পরিচয় প্রকাশ পেলে আরো বেশি নির্যাতনের শিকার হতে পারে, এই শঙ্কায় তারা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।

ভুক্তভোগী ওই যুবক আরো বলেন, এ বিষয়ে তার পরিবার, তার এলাকার দালাল মাসুম খানের সাথে যোগাযোগ করলে সে খুব খারাপ ব্যবহার করে এবং নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়।

মুঠোফোনে কথা হয় ভুক্তভোগী ওই যুবকের মায়ে সাথে, তিনি আজকের দর্পণকে বলেন, তার ছেলে এইচএসসি পাস করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। কম্পিউটার অপারেটর পদে উচ্চ বেতনে চাকরির আশ্বাস দিয়ে তাদের এলাকার মাসুম খান তার ছেলেকে কম্বোডিয়ায় পাঠায়। সেখানে পাঠানোর জন্য মাসুম খান তাদের কাছে ৮ লাখ টাকা নিয়েছে। কম্বোডিয়ায় পৌঁছানোর পর আমার ছেলে বিপদের কথা শুনে এলাকার লোকজন নিয়ে মাসুম খানকে চাপ দিলে সে আমার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলে আরো ২ লাখ টাকা নেয়। আমি গরু বিক্রি করে ওই ২ লাখ টাকা দিয়েছি, কিন্তু আমার ছেলেকে ফিরে পাইনি।

এক পর্যায়ে এ ঘটনায় নাজিরপুর থানায় অভিযোগ করলে মাসুম খানকে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মাসুম আমার ছেলেকে দেশে এনে দেয়ার জন্য এক মাসের সময় নেয়। তাও এক বছর আগের কথা। এখন মাসুমের সাথে যোগাযোগ করলে আমার নানা ভয়ভীতিসহ হুমকি দেয়।

মুঠোফোনে নাজিরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগের বিষয় স্বীকার করে বলেন, উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিলো। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মাসুম ওই ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সময় নিয়েছে। এরপর আর কোনো পক্ষ যোগাযোগ করেনি।

অভিযোগের বিষয়ে মাসুম খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া পর ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখেন। ফলে তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগী ওই যুবকের পাশাপাশি কম্বোডিয়ায় থাকা আরো কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়ায় এনে বিক্রি করা হয় তাদের। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি দালাল ফারুক (আব্দুল্লাহ আল ফারুক), অপু (আব্দুল্লাহ আল মামুন) এবং আলমসহ অনেকেই। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো কেনার পর তাদের ‘দাস’ বানিয়ে রাখে। বাধ্য করা হয় নানা অপকর্ম করতে। তাদের কথামতো সবকিছু করতে হয়। না করলে চলে নির্যাতন।

দালাল চক্র নিরীহ বাংলাদেশিদের কম্পিউটার অপারেটর পদে উচ্চ বেতনে চাকরির আশ্বাস দিয়ে কম্বোডিয়া পাচার করে চাইনিজদের কাছে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন এবং বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে কম্বোডিয়া থেকে বেশ কয়েকটি জুয়ার বা বেটিং ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস পরিচালনা করে, টাকা কম্বোডিয়াতে পাচার করেন।

তারা আরো জানান, প্রথমে বাংলাদেশি গ্রাম্য দালাল এবং অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তরুণ যুবকদের টার্গেট করে তাদের উচ্চ বেতনের চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে ফারুক, আলম এবং অপু। বিশেষ করে তাদের মূল টার্গেট সদ্য ভার্সিটি পাসকৃত বেকার যুবকরা। এরপর তাদের নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা নেয়া হয় বিদেশে (কম্বোডিয়া) যাওয়ার খরচ বাবদ। উচ্চ বেতন এবং ভালো চাকরির আশায় যুবকদের পরিবারও রাজি হয়ে যায় সহজেই, এটাই এই প্রতারকদের মূল পুঁজি।

সম্প্রতি কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশিদের পাচার করে নির্যাতনের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- চক্রের মূলহোতা নাজমুল ইসলাম, তার সহযোগী নূর ইসলাম সাজ্জাদ ও সিরাজুল ইসলাম পঞ্চায়েত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। র‌্যাব জানতে পেরেছে, বাংলাদেশিদের কম্বোডিয়ায় নিয়ে সাইবার দাস বানিয়ে মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করতে বাধ্য করা হচ্ছে। মেয়েদের ভিডিও কল দিয়ে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তা রেকর্ড করা হচ্ছে। এরপর সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতে বাধ্য করানো হচ্ছে।

র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার এএসপি ফারজানা হক জানান, মানব পাচার চক্রের মূলহোতা কম্বোডিয়া প্রবাসী নাজমুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ থেকে উচ্চ বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি দেয়ার নামে ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করেন। দালালদের মাধ্যমে শিক্ষিত, কম্পিউটার বিষয়ে পারদর্শী বেকার তরুণ-তরুণীদের এ ফাঁদে ফেলা হয়। কম্বোডিয়ায় পাঠানোর খরচ বাবদ প্রাথমিকভাবে তারা ৪-৫ লাখ টাকা নেন। আগ্রহীদের প্রথমে কম্পিউটার বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে কম্বোডিয়া প্রবাসী আলীম ও শরিফুলের সহায়তায় ট্যুরিস্ট ই-ভিসা করে তাদের পাঠানো হয়। সেখানে নাজমুল তার সহযোগী রাকিব ও রফিকের সহায়তায় চাকরিপ্রত্যাশীদের আরিফের হোটেলে নিয়ে যান এবং তাদের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। হোটেলে কিছুদিন অবস্থানের পর তাদের কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য কম্বোডিয়া প্রবাসী কামাল ওরফে লায়ন কামাল ও আতিকের সহায়তায় একটি বিদেশি সংস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ফারজানা হক জানান, বিদেশি প্রশিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছদ্মনামে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে প্রতারণা, ভুয়া ও ক্লোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা আত্মসাতের কৌশল, ভুয়া নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বা চ্যাট করে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার নামে কৌশলে ডিপোজিট হাতিয়ে নেয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভয়েস কল ও ভিডিও কল রেকর্ড করে পরে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আত্মসাতের কৌশল শেখান। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের একটি বিদেশি কোম্পানির কাছে দুই-তিন হাজার ডলারে বিক্রি করে দেয়া হয়। এর পর তাদের একটি সুরক্ষিত ভবনে নিয়ে তল্লাশি করে সব রকম ইলেকট্রনিক ডিভাইস কেড়ে নেয়া হয়। পরে তাদের কম্পিউটার ল্যাবে নিয়ে যাওয়া হয়। একটি বড় ঘরে তিন-চারশ ডেস্কটপ কম্পিউটার সাজানো থাকে। সেখানে ভুক্তভোগীদের ফেসবুকে ছদ্মপরিচয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে নারীদের সঙ্গে পুরুষ এবং পুরুষদের সঙ্গে নারী হিসেবে বন্ধুত্ব গড়তে বলা হয়। এরপর সেই নারী-পুরুষদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়।

র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার জানান, কেউ টার্গেট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলে বা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। কেউ কাজ থেকে অব্যাহতি চাইলে তাকে কিনতে যে পরিমাণ ডলার ব্যয় হয়েছে, তার দ্বিগুণ ফেরত দিতে হয়। তখন ভুক্তভোগী বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করে ওই প্রতিষ্ঠানে দিয়ে কম্বোডিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি দালালদের আশ্রয়ে যান। দালালরা আবারো তাদের আরেকটি সাইবার প্রতারক কোম্পানিতে বিক্রি করে দেন। কেউ দেশে ফিরে আসতে চাইলে দেশে ফেরত যাওয়ার শর্ত হিসেবে আরো গ্রাহক সংগ্রহ করে দেয়ার শর্তজুড়ে দেয়া হয়। তখন ভুক্তভোগী নিরুপায় হয়ে নিজে মুক্তি পাওয়ার জন্য তার পরিচিত অপর বাংলাদেশিদের কম্বোডিয়ায় আসতে প্ররোচিত করেন। তবে র‌্যাব ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য কোনো সংস্থা বা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কলোম্বিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নির্যাতনের তথ্য জানে না।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো প্রবাসী আমাদের কাছে অভিযোগ করেননি। তারা হয়তো থানায় মামলা করতে পারে।’

তবে প্রবাসীরা বলছেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করতে হলে ম্যানপাওয়ার কার্ড লাগে। দালালরা কম্বোডিয়া থেকে দেশে ফেরার সময় ম্যানপাওয়ার কার্ড রেখে দেয়। তাই অভিযোগ করা যায় না।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের মধ্যে ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট মানবপাচারের বিষয়টি দেখে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে।

‘অধিকাংশ লোকজন (ভুক্তভোগী) নিজের আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার পরিচিতদের মাধ্যমে কম্বোডিয়া যান এবং প্রতারিত হন। দেশে ফিরে এসে কেউ সমঝোতা করে ফেলেন, আবার কেউ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন না। এ কারণে অনেকে দিনের পর দিন অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই সবাই সচেতন হয়ে মামলা করুন, পুলিশকে সহযোগিতা করুন’, বলেন ওই কর্মকর্তা।

কম্বোডিয়ায় কতজন বাংলাদেশি সাইবার দাসত্বের শিকার তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকই আহত হচ্ছেন। তবে কেউ মারা গেছে কিনা তার নিশ্চিত কোনো সূত্রে জানা যায়নি। কম্বোডিয়ার প্রভাবশালীদের সঙ্গে চাইনিজ এসব প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক থাকায় মৃত্যুর পর দুর্ঘটনাজনিত বা আত্মহত্যা হিসেবে দেখানো হয়। হত্যার ঘটনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় না।

কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। তবে দেশটির প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রমকল্যাণ উইং) মো. ফাহাদ পারভেজ বসুনিয়া বলেন, কম্বোডিয়ায় এসে যারা বিপদে পড়েছেন, অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরা তাদের আউট পাসে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করছি। তবে তারা কম্বোডিয়ায় আসার আগে খোঁজ নিয়ে এলে এমন পরিস্থিতিতে পড়তো না। বিপদে পড়ে তারপর দূতাবাসে যোগাযোগ করছেন।


আরও খবর



অতিতীব্র তাপদাহে ফের তিন দিনের হিট অ্যালার্ট

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তীব্র হতে অতিতীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। পুড়ছে পুরো দেশ, বিপর্যস্ত জনজীবন। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় পঞ্চম দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। যা আজ রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হয়েছে।

আবহাওয়া ও ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামীম হাসান মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে এ দফায় বাদ পড়ছে সিলেট অঞ্চল। কারণ সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির আভাস থাকছে।

সর্বশেষ ২৫ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু গরমের তীব্রতা না কমায় আজ থেকে ৫ম দফায় নতুন করে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট শুরু হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দিন দিন এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ বাড়ছে আর কমছে বজ্রঝড়ের সংখ্যা। চলতি এপ্রিল মাসে গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, প্রতি বছর এপ্রিল মাসে ৭-৮টি কালবৈশাখী-বজ্রঝড় হয়। কিন্তু এই বছর হয়েছে মাত্র একটি। এবার এ ঝড়ের সংখ্যা সামান্য। যা হয়েছে সিলেট বিভাগেই।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চূয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৪১ দশমিক ৫, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৫, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ৪০ দশমিক ৪, যশোরে ৪১ দশমিক ৬, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।


আরও খবর
বৃষ্টির পর আসছে হিট ওয়েভ

শনিবার ১৮ মে ২০২৪




টি-টোয়েন্টি সিরিজ: সন্ধ্যায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ (শুক্রবার) মাঠে নামবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।

টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এই সিরিজে টাইগার ম্যানেজমেন্ট বেশ কয়েকটি জায়গা পরীক্ষা করবে। যার প্রথমটি হলো সাইফউদ্দিন। ১৮ মাস পর দলের ফেরা এই ক্রিকেটারকে যাচাই করতে মূল একাদশে রাখবে কোচ এবং অধিনায়ক।

বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজ শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিরিজ নয়। অর্থাৎ বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে যাচাইবাছাইয়ের একটি সুযোগ থাকলেও সিরিজ জয়ই হবে টাইগারদের লক্ষ্য।

এদিকে মোস্তাফিজ না থাকায় তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে দিয়ে পেস বোলিং ডিপার্টমেন্ট সাজাতে পারে বাংলাদেশ।

এর বাইরে স্পিনার কোটায় লেগ স্পিনার রিশাদ ও অফ স্পিনার শেখ মেহেদি থাকতে পারেন। এই ৫ বোলারের সঙ্গে ব্যাটার হিসেবে লিটন দাস, বাঁহাতি তানজিদ হাসান তামিম, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলী অনিক কোচের অটোচয়েজ।

টাইগারদের সম্ভাব্য একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম,তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, শেখ মেহেদি, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।


আরও খবর



নির্বাচনে প্রভাব খাটালেই ব্যবস্থা: ইসি রাশেদা

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাজশাহী প্রতিনিধি

Image

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাবশালীরা প্রভাব খাটালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা।

শনিবার (৪ মে) সকালে রাজশাহীতে উপজেলা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

রাশেদা সুলতানা বলেন, উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, আপনারা দয়া করে আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনার মান ইজ্জত, মর্যাদা আপনি রক্ষা করবেন। প্রার্থীরা সংসদ সদস্যদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে কারো সুবিধা নিলে দয়া করে সরে আসেন। এ রকম অবস্থা যদি দাঁড়ায়, যদি অভিযোগ আসে, তাহলে প্রার্থীতা বাতিলও হতে পারে।

বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমান, রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।


আরও খবর



নোয়াখালীর গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামে নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান মিলেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এই নতুন কূপটির খনন কাজ শুরু করেছে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প।

আজ সোমবার সকাল থেকে দুই শতাধিক খনন প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক এ কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করছেন। আগামী ১২০ দিন চলবে এ খননের কাজ।

কূপটির ড্রিলিং ইনচার্জ ও বাপেক্সের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খননের জন্য ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩ হাজার ২০০ মিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যা বাখরাবাদ এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাপেক্স এর তথ্য মতে, এর আগে নোয়াখালীর এ অঞ্চল তথা বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম কূপের সন্ধান মিলে। ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কূপের সন্ধান মিললে সেগুলো ড্রিলিং করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই দুটি কূপে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালে তৃতীয় কূপের সন্ধান মিললে ড্রিলিং শেষে ওই কূপ থেকে গ্যাস প্রোডাকশনে যায় এবং ২০১৮ সালে একই কূপে ওয়ার্কওভার করে এখন প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রেডে সরবরাহ করা হচ্ছে।


আরও খবর



বেইলি রোড ট্র্যাজেডি : মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে, এ দিন মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে।

এ ঘটনায় ১ মার্চ পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় পরস্পর যোগসাজশে অবহেলা, অসাবধানতা, বেপরোয়া, তুচ্ছতাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিদগ্ধ ও শ্বাসনালিতে ধোঁয়া প্রবেশ করে জীবন বিপন্নসহ মারাত্মক জখম ও এর ফলে মৃত্যু ঘটানো এবং ক্ষতি সাধন করার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।


আরও খবর