আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয় যেসব লক্ষণ

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
স্বাস্থ্য ডেস্ক

Image

বিশ্বজুড়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৫ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির ক্যানসারবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইএআরসি) জানিয়েছে, ২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে ক্যানসার আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ কোটি ৪১ লাখ এবং ৮২ লাখ। এক দশক পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ কোটি ও ৯৭ লাখে।

সংস্থাটির পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে আরও সাড়ে তিন কোটি, যা ২০২২ সালের চেয়ে অন্তত ৭৭ শতাংশ বেশি।

তবে ৭০ এর দশকের পর থেকে ক্যানসারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার তিনগুণ বেড়েছে। মূলত সঠিক সময়ে ক্যানসারের চিকিৎসা করালেই ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে।

যুক্তরাজ্যের ক্যানসার গবেষণা সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা জীবনের কোন না কোন সময়ে এমন কোন উপসর্গে ভুগেছেন যেটি আসলে ক্যানসারের উপস্থিতির জানান দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু মাত্র ২ শতাংশ মনে করেছেন যে এর কারণে তাদের ভুগতে হতে পারে এবং এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ একে কোন ধরণের পাত্তাই দেননি এবং এর ফলে চিকিৎসকের কাছেও যাননি। এমন কিছু লক্ষর সম্পর্কে চলুন জেনে নিই-

হুট করে ওজন কমে যাওয়া : ক্যানসার আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই কোন না কোন সময় ওজন হারাতে শুরু করে। যখন আপনি কোন ধরনের কারণ ছাড়াই ওজন হারাতে শুরু করেন, এটাকে বলা হয় ব্যাখ্যাহীন ওজন হারানো। আর এই ব্যাখ্যাহীন ওজনহীনতা ক্যানসারের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, খাদ্যনালী বা ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়ার এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

জ্বর : ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। এছাড়া ক্যানসার শরীরে ছড়িয়ে পড়লে প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়।

ক্লান্তি : এখানে ক্লান্তি বলতে বোঝায় চরম ক্লান্তিভাব যা বিশ্রাম নেয়ার পরও দূর হয় না। ক্যানসার বাড়ার সাথে সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্যানসার যেমন লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে শুরুর দিকেই ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। কিছু কোলন বা মলাশয় ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে তবে এটা সবক্ষেত্রে হয় না। এর কারণেও ক্যান্সারের সময় ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

ত্বকে পরিবর্তন : ত্বকের ক্যানসার ছাড়াও আরো কিছু ক্যানসার রয়েছে যাতে আক্রান্ত হলে আপনার ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। যেমন- ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা হাইপারপিগমেনটেশন, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, মাত্রাতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি, অন্ত্রের ক্রিয়া বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি। অন্যদিকে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, প্রস্রাবে রক্তপাত বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন যেমন আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব করা ইত্যাদি মূত্রাশয় বা প্রোস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

রক্তপাত : ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় কিংবা তা ছড়িয়ে পড়ার পর অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। কাশির সাথে রক্ত বের হওয়া ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়া আপনার যদি মলের সাথে রক্ত বের হয়, তাহলে মলদ্বারে ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

শরীরের যে কোন স্থান শক্ত হয়ে যাওয়া : অনেক ক্যানসার ত্বকের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। এ ধরনের ক্যানসার সাধারণত স্তন, অণ্ডকোষ, গ্রন্থি এবং শরীরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দেহে শক্তভাব বা মাংস জমে আছে- এ ধরনের অনুভূতি হয়। এটা এসব ক্যানসারের প্রাথমিক বা বিলম্বিত উপসর্গ হতে পারে।


আরও খবর



পিনাকীসহ দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ও ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ।

একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপপ্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে সম্প্রতি এ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসির উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন। আজ রবিবার প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি জানা গেছে।

রাজধানীর রমনা মডেল থানার এ মামলার প্রতিবেদনে পিনাকী ভট্টাচার্য পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে।

২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপপরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারীকে আসামি করা হয়।

মামলায় বলা হয়, ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের নজরে আসে। ওই পোস্টে পুলিশ সদস্যদের সম্পর্কে বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে ১৫ অক্টোবর পল্লবীর বাসা থেকে মফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ মফিজুরের দুটি মুঠোফোন জব্দ করে।

মামলা বলা হয়, আসামি মফিজুর রহমান ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই তালিকায় আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য ও মুশফিকুল ফজল আনসারী। মিরপুরে পুলিশ বাহিনীর একটি অভিযানের ঘটনাকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়। সেই তথ্য ও ছবি পাঠানো হয় পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক মেসেঞ্জারে। আলামত হিসেবে নাগরিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকার অনলাইনের একটি করে প্রতিবেদন এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে পিনাকী ভট্টাচার্যের কাছে পাঠানো কয়েকটি ছবি ও কথোপকথন তুলে ধরা হয়েছে। সেখানকার আলাপচারিতায় মুশফিকুলকে পিনাকীর কাছে বইয়ের তালিকা চাইতে দেখা গেছে।

মামলায় বলা হয়, মফিজুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার করেছেন। পরে সেই তথ্য তিনি বিদেশে অবস্থানরত পিনাকী ভট্টাচার্য, মুশফিকুল ফজল আনসারীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠিয়েছেন। পরে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। মফিজুর রহমানসহ অন্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা হয়।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, মফিজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর খুদুখখালী গ্রামে। চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করা পিনাকী ভট্টাচার্য একটি ওষুধ কোম্পানি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কয়েক বছর ধরে তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন। পিনাকী ভট্টাচার্য নানা বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে থাকেন। সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, পিনাকী ভট্টাচার্য বিদেশে অবস্থান করে সরকার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন।


আরও খবর



টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে আগের দুই ম্যাচে স্বাগতিক বোলারদের দাপটে দাঁড়াতেই পারেনি সিকান্দার রাজারা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুটিতে জিতে ২০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে টিম টাইগার্স। আজ তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল।

টস জিতে বাংলাদেশকে শুরুতে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই টস জিতেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আজ ভাগ্য সহায় হয়নি। তবে আগে ব্যাটিং পাওয়ায় ব্যাটাররা নিজেদের সামর্থ্য যাচাইয়ের সুযোগও পাচ্ছেন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়েছে বিকেল ৩টায়। আগের দুই ম্যাচে বৃষ্টির বাগড়া থাকলেও আজ এখন পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কারই আছে।

দুই ম্যাচ হাতে রেখে আজই সিরিজ নিশ্চিত করার লক্ষ্য বাংলাদেশের। অন্যদিকে, সিরিজ বাঁচাতে জয়ের বিকল্প নেই ব্যাকফুটে থাকা জিম্বাবুয়ের। দুই দলের একাদশেই আছে দুটি করে পরিবর্তন।

শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদীর জায়গায় স্বাগতিক দলে ফিরেছেন তানজিম হাসান সাকিব ও তানভীর ইসলাম। জিম্বাবুয়ে দলেও আছে দুটি পরিবর্তন। দলে ঢুকেছেন বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এবং ফারাজ করিম। বাদ পড়েছেন রিচার্ড এনগারাভা ও এইনস্লে এনদোলভু।

বাংলাদেশ একাদশ

নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী (উইকেটকিপার), তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

জিম্বাবুয়ে একাদশ

জয়লর্ড গাম্বি (উইকেটকিপার), ক্রেগ আরভিন, ব্রায়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্লাইভ মাদান্দে, জোনাথন ক্যাম্পবেল, রায়ান বার্ল, লুক জঙ্গুয়ে, ফারাজ আকরাম, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর



থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।

তার সফরে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অব ইন্টেন্ট (আগ্রহপত্র) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে গত সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, ২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউজে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপাশি জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অব ইন্টেন্ট (আগ্রহপত্র) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন এবং রানি সুথিদার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।


আরও খবর



হবিগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

হবিগঞ্জের হুরগাও গ্রামের হারুন মিয়া হত্যা মামলায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ২১ বছর পর এ মামলার রায় এলো।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ-১-এর বিচারক মো: আজিজুল হক মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জালাল মিয়া, রুহুল আমিন, কুতুব আলী, ফজল মিয়া, রফিক মিয়া, জাকির হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন।

আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ছায়েদ মিয়া, মিজান মিয়া, আব্দুল মতলিব, কালা মিয়া, জিয়াউল হক, আয়াত আলী, ইছাক মিয়া, কুতুব আলী, জজ মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া।

২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি হুরগাও গ্রামে গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে হারুন মিয়াকে হত্যা করা হয়। একই দিন তার চাচাতো ভাই সুমন আহমেদ ৪৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২১ বছরে রাষ্ট্রপক্ষ ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনকে আদালতে উপস্থাপন করে। আসামিদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন সময় স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে হত্যা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় একজন ছাড়া সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন আহমেদ।


আরও খবর