বিএনপি-জামায়াতের
ডাকা তিন দিনের অবরোধের শেষ দিন আজ। রাজধানীতে গণপরিবহন কম দেখা গেছে। অবরোধের দ্বিতীয়
দিনের তুলনায় বেশি গণপরিবহণ দেখা গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বাসের জন্য অনেক
সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীদের। নির্দিষ্ট গন্তব্যে বাস পেতেও সমস্যায়
পড়তে হয়েছে অনেককে। ফলে ভোগান্তি দিয়েই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস শুরু হয়েছে নগরবাসীর।
এ ছাড়া দূরপাল্লার গাড়িগুলো আজও ঢাকা ছাড়ছে না।
বৃহস্পতিবার
সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায়
গণপরিবহণ চললেও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম। আগুন আতঙ্ক থেকেই গাড়ি কম চলছে বলে
কয়েকজন বাসচালক জানান।
রামপুরা এলাকায়
আন্তঃনগর পরিবহণের বেশ কিছু বাস চলতে দেখা গেছে। তবে বাসের যাত্রী ও স্টাফদের মধ্যে
আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সকাল ৭টার দিকে
উত্তরা যাওয়ার জন্য রামপুরায় বাসে উঠেন জাহিদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন,
‘হঠাৎ
উত্তরা যাওয়ার জরুরি প্রয়োজন হওয়ায় বাসে উঠলাম। মনে আগুন আতঙ্ক কাজ করছে। সকালে তুলনামূলক
পিকেটিং বেশি হওয়ায় এ আতঙ্কটা বেশি কাজ করছে।’
রাইদা পরিবহণের বাসের এক চালক বলেন, আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় বাস কম। কারণ একটি বাস পুড়লে অনেক ক্ষতি হয়। তার পরও কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন>> গাজীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ
বাড্ডা ফুটওভার
ব্রিজের নিচে বাসের জন্য অপেক্ষা করা রেজাউল বলেন, ‘অবরোধে নারীরা সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বাসের
জন্য আছি। এ রুটে এমনিতেই বাস কম। তার ওপর আবার অবরোধ। মাঝেমধ্যে দু-একটি বাস এলেও
সেখানে উঠতে পারছি না। মেয়ে মানুষের দাঁড়ানোর জায়গা নেই। একটু ফাঁকা কোনো গাড়ি আসবে
সে অপেক্ষায় থাকলেও পাচ্ছি না। কিন্তু অফিসে তো যেতে হবে। বাসে উঠতে না পারলে বিকল্প
পথ খুঁজতে হবে।
রিমার মতো সেখানে
আরও অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে উপায় না পেয়ে মোটরসাইকেল, রিকশা বা সিএনজি
অটোরিকশায় যাচ্ছেন।
রাজধানীর কাকরাইল-পল্টন
এলাকার অবস্থাও অনেকটা বুধবারের মতোই। ভিক্টর ক্লাসিক, গাজীপুর পরিবহণ, আজমেরীসহ এই
রুটে চলা গাড়িগুলো কিছু সময় পর পর সড়কে দেখা যাচ্ছে। মাতুয়াইল এলাকাতেও বলার মতো গণপরিবহণ
চোখে পড়েনি।
নগরে কিছু পরিবহণ
চললেও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে না বললেই চলে। সকালে মহাখালী থেকে হাতেগোনা এক-দুটা
গাড়ি ঢাকার বাইরে যেতে দেখা গেছে।
টার্মিনালে
এনা পরিবহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা জানান, প্রতিদিন অন্তত ১৫টির মতো গাড়ি ময়মনসিংহে
গেলেও অবরোধের তিন দিনে চার থেকে পাঁচটি গাড়ি ছেড়েছে।
অবরোধের কারণে আজও অনেকটা ফাঁকা মহাখালীর মূল টার্মিনালের বাইরের এলাকা। নগরে চলা গাড়িও খুব কম দেখা গেছে সড়কে। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়বে এমন প্রত্যাশা পরিবহণ শ্রমিকদের।
আরও পড়ুন>> সাতসকালে উত্তরায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন
মহিদুল ইসলাম
নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী সড়কের কথা জানতে চাইলে বলেন, প্রাইভেট গাড়ি যেগুলো চলছে
প্রায় সবই অফিসিয়াল। আর বাস সব ভাঙাড়িগুলো। মিরপুর থেকে মতিঝিল আসলাম কোনো ব্রেক ছাড়া।
রাস্তা এখন পর্যন্ত ক্লিয়ারই দেখেছি, পরে কী হবে বলতে পারব না।