আজঃ সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

সারাদেশে শহীদ মিনারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকব

প্রকাশিত:রবিবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০22 | হালনাগাদ:রবিবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০22 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, শহীদ মিনার ভাঙচুর প্রতিরোধে সারাদেশে র‌্যাবের একাধিক টিম মোতায়েন রয়েছে। আমরা সবসময় এটি মনিটরিং করছি।

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন ঘিরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, সারাদেশে শহীদ মিনারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে র‌্যাব প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আমরা শহীদ মিনারে আসবো। সারাদেশের শহীদ মিনারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ডগ স্কোয়াড দিয়ে আমরা শহীদ মিনার এলাকায় সুইপিং করছি। বোম্ব স্কোয়াডও নিয়োজিত থাকবে। আমাদের হেলিকপ্টারও প্রস্তুত আছে। ইভটিজিং রোধে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে এবং আমরা সতর্ক থাকবো।

র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, করোনা আক্রান্তের হার কমে এলেও সবাইকে অনুরোধ করবো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করবেন। সরকার কর্তৃক যে বিধিনিষেধ রয়েছে মাতৃভাষা অনুষ্ঠানে সবাই তা মেনে চলবো।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। র‍্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন তাদের নিজ নিজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকবে, টহল থাকবে ও সাদা পোশাকে সারাদেশে র‍্যাবের সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। অগ্রীম পদক্ষেপ হিসেবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ আশেপাশের এলাকা ও সারাদেশে গত ১৮ তারিখ থেকে সাদা পোশাকে র‍্যাবের সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, অবজারভেশন পোস্ট, চেকপোস্ট ও স্টেটিক ডিউটি আমরা মোতায়েন করেছি। বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, স্ট্যান্ডবাই ফোর্সের পাশাপাশি র‍্যাবের মেডিকেল টিমও থাকবে। এছাড়াও র‍্যাব সদরদপ্তরের ইন্টেলিজেন্স টিম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর ও সারাদেশে কৌশলগত স্থানে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে এবং সঙ্গে আভিযানিক দলও মোতায়েন থাকবে।

র‍্যাব ডিজি বলেন, র‍্যাব সদর দপ্তরের স্পেশাল ফোর্স ও র‍্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। যেকোনো সময় র‍্যাবের হেলিকপ্টার মুভ করাতে আমরা সক্ষম।

ভার্চুয়াল জগতে গুজব, উসকানিমূলক তথ্য ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো রোধে সাইবার অপরাধ রোধে র‍্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

যেকোনো তথ্য বা সমস্যায় র‌্যাবের এই নম্বরে ০১৭৭৭৭২০০২৯ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান র‌্যাব মহাপরিচালক।


আরও খবর



ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো আর্মেনিয়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image
এই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া। শুক্রবার (২১ জুন) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জর্জরিত আর্মেনিয়া সংঘাতের ভয়াবহতা কী তা জানে।

গাজাসহ রাফাহতে সহিংসতার অবসান ঘটাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। গত আট মাসে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এই যুদ্ধ ও ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় এখন ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে।

এর আগে, ৩০ মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে স্লোভেনিয়া সরকার। গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিও দাবি করেছেন স্লোভেনীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা শান্তির বার্তা। এর আগে, ২৮ মে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপীয় দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। দেশগুলোর নেতারা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য তাদের দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।

এই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি বড় অর্জন বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি আর্মেনিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।

আর্মেনিয়া ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে সমর্থন জানিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।

এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে এবং বিভিন্ন দেশে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নিউজ ট্যাগ: আর্মেনিয়া

আরও খবর



বিমানবন্দরে লাগেজের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিলেই লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশিত:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিদেশ থেকে আসা কোনো যাত্রী নিজের লাগেজ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিলে বা ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আনলে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে এবং তার লাগেজে থাকা পণ্য রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য বহন করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

কাস্টমসের নতুন আইন-২০২৩ অনুসারে এমন বিধান রাখা হয়েছে; যা আগামী ৬ জুন থেকে কার্যকর হচ্ছে।

গত ৩০ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা এক প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কাস্টমস আইনের ১৫৪ ধারায় বলা আছে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কাস্টমসের কাছে তার লাগেজ সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। যাত্রী বা ক্রু লাগেজে রক্ষিত পণ্য সম্পর্কে কাস্টমস কর্মকর্তার কাছে লিখিত বা মৌখিক ঘোষণা দিতে পারবেন ও কাস্টমস কর্মকর্তার প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। লাগেজ তল্লাশির আগে যাত্রী যদি রক্ষিত পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হন এবং তল্লাশিকালে ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কাস্টমস কর্মকর্তা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করতে পারবেন। এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট পণ্য বাজেয়াপ্তযোগ্য হবে।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় সংসদে কাস্টমস আইন-২০২৩ পাস হয়। পুরোনো আইনে ২২৩টি ধারা ছিল। নতুন আইনে ২৬৯টি ধারা রয়েছে। রাজস্ব সংগ্রহ ও বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার (ডব্লিউসিও) অনুমোদিত আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেনশন অনুযায়ী এবং আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা, যেমন- অনুমোদিত অর্থনৈতিক অপারেটর (এইও), পারস্পরিক স্বীকৃতি চুক্তি (এমআরএ), ইলেকট্রনিক ঘোষণা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট (পিসিএ) ইত্যাদি নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কাস্টমস আইন ১৯৬৯ অনুযায়ী, পণ্যের ক্ষেত্রে অসত্য তথ্য দিলে বা কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার অথবা ব্যর্থ হলে, সেক্ষেত্রে যাত্রীকে ওই পণ্য-মূল্যের অনধিক তিনগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান ছিল।


আরও খবর



বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। রোববার (৯ জুন) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের বাংলাদেশ-ভারতের ২০৬৫ (৮এস) নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আনোয়ার হোসেন বুড়িচং উপজেলার মিরপুর গ্রামের চারু মিয়ার ছেলে। বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি ভারত থেকে চোরাই পথে আনা চিনি বহনকারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

৬০ বিজিবির অধিনায়ক এএম জাবের বিন জব্বার বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকালে আনোয়ার হোসেন ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। ওই সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।


আরও খবর



হলি আর্টিজানে হামলা: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষা

প্রকাশিত:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার) রাত ৮টা ৪৫ মিনিট। রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা গোটা দেশকে স্তম্ভিত করেছিল। সশস্ত্র হামলাকারীরা ২২ জনকে হত্যা করে। এর মধ্যে ২ পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশি নাগরিক ছিলেন। পরে সেনা, নৌ, পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির যৌথ অভিযোগে ভয়াবহ এই ঘটনার অবসান ঘটে। অভিযানে হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীসহ আট জঙ্গি নিহত হয়।

ভয়াবহ এই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

দণ্ডিতরা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। পরে গত বছরের ৩০ অক্টোবর ৭ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। তবে এই মামলায় হাইকোর্টের রায় এখনও প্রকাশ হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ উভয়ই এ মামলা আপিলে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের রায় প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, রায়ের অনুলিপি পেলে বুঝতে পারব কোন যুক্তিতে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিমুল এহসান জুবায়ের জানান, হাইকোর্টের অনুলিপি আমরা এখনও পাইনি। রায় প্রকাশের পর আসামিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আপিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

যেদিন কী ঘটেছিল

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ঘটনার দিন গুলশান থানার রোড নম্বর-৭১ থেকে ৯২ এবং এর আশপাশ এলাকায় পেট্রোল ডিউটির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে ওয়্যারলেসে ভেসে আসে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বেকারিতে গুলির খবর। খবর পেয়েই ফোর্সসহ রাত আনুমানিক ৮টা ৫০ মিনিটে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান এসআই রিপন। হলি আর্টিজানের কাছে উপস্থিত হয়ে তারা দেখতে পান, রেস্টুরেন্টের ভেতরে কতিপয় সন্ত্রাসীরা আল্লাহ্ আকবর ধ্বনি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করছে।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। আত্মরক্ষার্থে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত গুলি ও গ্রেনেডের আঘাতে এসআই ফারুক হোসেন ও কনস্টেবল প্রদীপ চন্দ্র দাস ও আলমগীর হোসেন গুরুতর আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং এসআই রিপন কুমার দাস বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের অফিসার ও ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। এরপর পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হলি আর্টিজানের বেকারির চারপাশে কর্ডন করে ফেলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে অনবরত গ্রেনেড ও গুলি করতে থাকে।

এ অবস্থায় রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সন্ত্রাসীরা হলি আর্টিজানের বেকারির পশ্চিম দিকের বাড়ির সামনে অবস্থানরত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে অন্তত ৩০-৩৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আহত হন, কেউ কেউ মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হয়। সে সময় চারদিকে ঘিরে থাকা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-পুলিশসহ অন্য বাহিনীর সদস্যরা দৌড়ে নিরাপদ দূরত্বে যান। আহতদের সবাইকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টা ২০ মিনিটে বনানী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দিন খান মৃত্যুবরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) মো. রবিউল করিমের মৃত্যু হয়।

পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করে রাতেই সিদ্ধান্ত হয় পরের দিন ২ জুলাই অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করা হবে। এ অভিযানের মধ্য দিয়েই জিম্মিদশার অবসান ঘটান সেনা, নৌ, পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল। নিহত হয় আট জঙ্গি, আহত অবস্থায় ধরা পড়ে একজন।

রাত দেড়টায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে ২০ জন নিহত হওয়ায় কথা জানায়। আইএসের পক্ষ থেকেও হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের সৈনিক বলে দাবি করে।


আরও খবর



ঢাকার ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনহীন: গণপূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানী ঢাকার প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমাদনহীন বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‌আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। টেকসই শহর তৈরি: বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও বাধা শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বিআইআইএসএস।

সেমিনারে স্থপতি ইকবাল হাবিবের বরাত দিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেছেন, ঢাকা শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনবিহীন। এ অনুমোদনবিহীন বাড়িঘরগুলোকে যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদনের আওতায় আনা যায়, এজন্য একটি কমিটি আছে। এমন একটি কমিটি আছে, তা গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী হওয়ার আগে আমি জানতামই না।

তিনি আরও বলেন, ঢাকাই বাংলাদেশ নয়, ঢাকার বাইরেও বাংলাদেশ আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তারা ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ আছে, সেটা বুঝতে চায় না। এমনকি যারা গ্রামে থাকে তারাও মনে করে ঢাকায় চলে যাওয়া ভালো, ওটাই বাংলাদেশ। নগরায়নকে শুধু বিল্ডিং তোলা এবং কিছু মানুষের বসবাসের সুবিধা ও জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত করলে চলবে না। নগরায়নের সঙ্গে এখন প্রকৃতির বিস্তৃতির কথাও খেয়াল রাখতে হবে। ইকো-ফ্রেন্ডলি একটি অবস্থান তৈরি করতে হবে।

প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিয়ে নগরায়ন করা হচ্ছে মন্তব্য করে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আরো বলেন, নগরায়ন করতে গিয়ে প্রকৃতির কথা খেয়াল রাখা হচ্ছে না। নগরায়নের ক্ষেত্রে শুধু বিল্ডিং তুললেই হবে না, আরো অনেক কিছু দেখতে হবে। আমরা নগরায়নের নামে বুড়িগঙ্গাকে শেষ করে দিয়েছি। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, পুরো পানি ব্যবস্থাটাকেই আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। এটাকে কিভাবে উদ্ধার করা যায়, সেটাকেও নগরায়নের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা চিন্তা করতে হবে।

প্রতিদিন কৃষিজমি নগরায়নের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা নগরায়ন করতে গিয়ে যত কৃষি জমি আছে, যত জলাশয় আছে, সব তো ধ্বংস করে দিয়েছি। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য মহাপরিকল্পনা দরকার।

তিনি বলেন, প্রকৃতি ধ্বংস না করে নগরায়ন করা সম্ভব, শুধু যারা কাজটি করবেন, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে। তাদের এ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে হব, দেশটা তার এবং তার ভবিষ্যৎ বংশধরদের। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এক জায়গা থেকে সব পরিকল্পনা হওয়া উচিত। সেটা না হলেও অন্তত সমন্বয় থাকা উচিত। আমাদের সবাইকে দেশপ্রেমের জায়গা থেকে বিষয়গুলো দেখা উচিত।

তিনি বলেন, প্রকৃতি ধ্বংসের দায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। এ কাজটি আমরা সবাই মিলে করেছি। আমরা সবাই মিলে যে দুষ্কর্মটা করেছি, সেই দুষ্কর্ম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। নিজেদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

বিআইআইএসএস এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খানের স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইআইএসএস এর গবেষণা পরিচালক শেগুফতা হোসেন।

এছাড়া বিআইআইএসএস এর চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকারের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ (সিইউএস) এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, বিশ্ব ব্যাংকের নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ঈশিতা আলম অবনী, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার শাব্বির আহমেদ।

সেমিনারে আলোচকরা বলেছেন, টেকসই শহর তৈরি করা বিশ্বব্যাপী একটি অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। দ্রুত নগরায়ন, অবকাঠামোগত অগ্রগতি ও শহরমুখী অভিবাসন বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করেছে, যার ফলস্বরূপ শহরগুলোতে প্রকৃতি, মানব জীবন এবং সম্পদের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো যানজট, জলাবদ্ধতা, বায়ু-জল-মাটি দূষণ এবং ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে ভুগছে। পরিকল্পিত এবং টেকসই নগরায়ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত এবং এসডিজি ১১ এ বর্ণিত এই প্রয়োজনীয়তাকে বাংলাদেশ গুরুত্ব প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে সরকার সেই লক্ষ্যগুলি বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং তা অর্জনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সরকারের এসব প্রচেষ্টার অগ্রভাগে রয়েছে।

বক্তা ও প্যানেলিস্টরা নগরায়ণের ফলে উদ্ভূত সমস্যাদি মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং অন্যান্য মহানগরের ক্ষেত্রে গৃহীত সর্বোত্তম কার্যপদ্ধতিগুলো থেকে শিক্ষালাভের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের প্রসারের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।


আরও খবর