ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রী। সিলেট ১(সদর উপজেলা- সিটি করপোরেশন এলাকা) আসনে
আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন ভোট যুদ্ধে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
সিলেটের ১৯টি আসনে অন্য প্রার্থীরা যখন টেনশনে, তখন ভোটের মাঠে ‘চাপমুক্ত’ এ হেভিওয়েট প্রার্থী।
নিজের এলাকায় সংসদ সদস্য হয়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গত ৫ বছর। এবার ভোটের
মাঠেও ‘অপ্রতিদ্বন্দ্বী’ তিনি। এ প্রার্থীকে নিয়ে অনেকটা নির্ভার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. এ কে আব্দুল মোমেনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের
তিনবারের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। কিন্তু নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন না
করার ইস্যুতে রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এতে ড. মোমেনের কপালে দুশ্চিন্তার
ভাঁজ নিমিষেই সরে গেলো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে ধন্যবাদ
জানিয়েছেন ড. মোমেন। এছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পান পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য
ও মহানগরের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। কিন্তু ড. মোমেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না
করার ঘোষণা দিয়ে আগেবাগেই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ান। এ জন্য স্বশরীরে বাবুলের
গোটাটিকর অফিসে উপস্থিত হয়ে কৃতজ্ঞতা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
অবশ্য হেভিওয়েট এই প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
করবেন আরো চার প্রার্থী। আক্ষরিক অর্থে ড. মোমেনের সঙ্গে শিক্ষা, পরিচিতিসহ সব সূচকে
পিছিয়ে তারা। যে কারণে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে নির্ভার ড. মোমেন। তার
সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক, ন্যাশনাল পিপলস
পার্টির (এনপিপি) ইউসুফ আহমদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস’র মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী এবং
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আব্দুল বাছিত।
এ আসনের ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা
গেছে, হেভিওয়েট এই প্রার্থীর সঙ্গে অন্য প্রার্থীরা ভোটের মাঠে সার্বিক ভাবে দুর্বল।
কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অনেকে ভোটের মাঠে থাকলেও তাদের অনেকের ব্যক্তি পরিচয় নেই,
নেই জনসম্পৃক্ততা। উপরন্তু তারা ক্ষমতাসীন দলের হেভিওয়েটদের বিপক্ষে গিয়ে প্রার্থী
হয়েছেন, অনেকে সব কেন্দ্রে অ্যাজেন্ট দিতে পারবেন কিনা, তা দেখার বিষয়!
সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী
ড. এ কে আব্দুল মোমেন সুবাহনিঘাট- মেন্দিবাগ এলাকায় লিফলেট বিতরণের
মাধ্যমে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করেছেন। তিনি নগরীর সুবাহনিঘাট কাঁচা বাজার,
ছালিম ম্যানসনের ব্যবসায়ী - ক্রেতাদের সাথে কুশল
বিনিময় করে নৌকার পক্ষে তিনি ভোট চান।
এসময় ড. মোমেন আবার নির্বাচিত হলে দেশের সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে সিলেটকে একটি আলোকিত সম্প্রীতি উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার আশ্বাস দেন।
জনসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র,
স্পেশাল পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরি আবদাল, জাতীয় পার্টি জেপি-এর সভাপতি ইফতেখার
আহমদ লিমন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, এডভোকেট আফসার আহমেদ, ২৩ নং ওয়ার্ড
কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শোয়েব আহমদ শামীম, রুহুল মানিক ছুটন,আকিব হাসান, কবির আহমদ সোহেল প্রমুখ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ
হবে আগামী ৭ই জানুয়ারি। গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান
নির্বাচন কমিশনার।
তফসিল অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র
দাখিল, ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর বাছাই, ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল ও শুনানি, ১৭ ডিসেম্বরের
মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণায় নামেন প্রার্থীরা।
আগামি ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচারের সময় বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।