আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ২, শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ভোলা প্রতিনিধি

Image

ভোলা জেলার লালমোহন, মনপুরা ও তজুমদ্দিন উপজেলায়  আজ সকালে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শতাধিক বাড়ি-ঘর, গাছপালা, বিদ্যুৎ লাইন, মাঠের ফসল  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ আকস্মিক ঝড়ে লালমোহন উপজেলায় ঘর চাপা পড়ে হারিস (৬৮) ও বজ্রপাতে বাচ্চু (৪০) নিহত হন।

নিহত দুজনের পরিবারকে সরকারিভাবে ২৫ হাজার করে  মোট ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, আজকের ঝড়ে লালমোহন উপজেলায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বদরপুর ইউনিয়নে হারিস ঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন। তার বাড়ি ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নে। তিনি ভিক্ষা করতেন। এছাড়া  চরভুতা ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া গ্রামে বজ্রপাতে বাচ্চু নামে একজন নিহত হয়েছেন।

তিনি জানান, লালমোহন উপজেলায় বেশ কিছু বাড়িঘর আংশিক ও সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতি হয়েছে। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানান, ঝড়ে লালমোহন উপজেলায় নিহত দুজনের পরিবারকে জনপ্রতি ২৫ হাজার করে মোট ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে। প্রাথমিকভাবে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রচুর গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে তজুমদ্দিন, মনপুরা ও লালমোহন উপজেলায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান,  ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে লালমোহন উপজেলায় ৮ মেট্রিক টন চাল, মনপুরায় ৫ মেট্রিক টন চাল ও তজুমদ্দিনে ৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে।


আরও খবর



সারাদেশে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস পালিত

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের ৬৪ জেলায় শব্দ দূষণবিরোধী অভিযানের মধ্য দিয়ে পালিত হলো আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস। দিবসটি উদযাপনের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদফতর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সারা দেশে একযোগে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার (২৪ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালন করা হয়েছে। আসুন সবাই শব্দদূষণ হ্রাসে সচেষ্ট হই এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার দিবসটিতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিকদেও দায়িত্বশীলতা ও সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দেশের প্রথম সারির বাংলা ও ইংরেজী জাতীয় দৈনিকে দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে সচেতনতামূলক রঙিন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জনসচেতনতামূলক ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। সরকারি সকল ওয়েবসাইটে পপ-আপ প্রদর্শন করা হয়েছে ও বিটিআরসির সহযোগিতায় সকল সেল ফোনে সচেতনতামূলক বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর



মূল্যবান খনিজ জমিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ডংগিংয়ে গতবছর নতুন জ্বালানি তেলের একটি ডিপো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে চীন। আর চলতি বছরের শুরু থেকেই সেখানে নজরে আসছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ব্যস্ততা। কৌশলগত জ্বালানি মজুত হিসেবে অভিহিত ডংগিংয়ের এ বিশাল তেলের ডিপোর ধারণ ক্ষমতা ৩ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল। মূলত রাশিয়া থেকে ভর্তি হয়ে আসা ট্যাংকারগুলোই এখানে খালাস করছে তাদের তেল। দ্রুত খালাস করেই নতুন চালান ভরতে চীনা ট্যাংকারগুলো ফের ছুটছে রাশিয়ার বন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে।

যেভাবে তেলের মজুত বাড়াচ্ছে চীন

দিন দিন রাশিয়া থেকে চীনের এ জ্বালানি আমদানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে ২১ লাখ ব্যারেল তেল মস্কো থেকে আমদানি করছে বেইজিং। টানা দুবছর ধরে বেইজিংয়ের জ্বালানি সরবরাহের প্রধান উৎস মস্কো। এতো বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত জ্বালানি তেলের মজুত বর্তমানে উঠানামা করছে ২৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ব্যারেলের মধ্যে।

যেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জ্বালানি মজুতের পরিমাণ ৩৬ কোটি ব্যারেলের আশপাশে। শান্তিপূর্ণ সময়ে চীনের দৈনিক জ্বালানি চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময়ের তেলের মজুত নিজের হাতে ধরে রেখেছে চীন।

চীনের তেলের মজুত গড়ে তোলার এ পরিসংখ্যানই পশ্চিমা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক মহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য যথেষ্ট। তাদের ধারণা, সামনে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা আঁটছেন চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর অংশ হিসেবেই দ্রুত ডংগিংয়ের মতো এসব ডিপোকে তেলে ভর্তি করছে বেইজিং।

অন্যান্য খনিজের মজুতও বাড়াচ্ছে চীন

শুধু জ্বালানি তেলই নয়, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কৌশলগত প্রায় সব শিল্প কাঁচামালের মজুত গড়ে তুলছে বেইজিং। পশ্চিমা মহলের ধারণা, ভবিষ্যতে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কিংবা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকেই এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বেইজিংকে সুযোগ করে দিচ্ছে ডিসকাউন্ট দরে মস্কো থেকে তেলসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ব্যাপারে। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি অনেক সস্তায় মস্কো থেকে নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ কিনতে সক্ষম হচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলো। আর চীনের এ মূল্যবান ধাতু কিনে মজুত করার প্রবণতার গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়ার নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার ওপর আরোপ করা সর্বশেষ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের এক-তৃতীয়াংশই চীনের কব্জায়

এসব ধাতুর পাশাপাশি বেইজিংয়ের নজরে রয়েছে বর্তমান যুগের অন্যতম মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে পরিচিত লিথিয়ামের ওপরও। ব্যাটারি শিল্পের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে চীন মজুত বাড়িয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন দেশে থাকা লিথিয়ামের খনি থেকে শুরু করে পরিশোধনাগার পর্যন্ত কিনে ফেলতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গত মার্চে জানায়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বের সব লিথিয়াম সরবরাহের তিন ভাগের একভাগই চলে যাবে চীনের কব্জায়।

অবশ্য চীন অনেক আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ধাতু ও বিরল মৃত্তিকার মতো খনিজ পদার্থের মজুত গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে মার্কিন খনি বিষয়ক দফতর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের হাতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, কপার, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, ইরিডিয়াম, ট্যানট্যালাম, টিন, টাংগেস্টন, জিংক ও জিরকোনিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা পদার্থের মজুত রয়েছে। এরপরের বছরগুলোতে চীন এসব খনিজ মজুত করার তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।

চীন স্বর্ণের মজুদও বাড়াচ্ছে, টান পড়ছে সারা বিশ্বে

শুধু এসব খনিজ পদার্থই নয়, বরং স্বর্ণের মজুতও দিন দিন বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। আর এ স্বর্ণ শুধু সরকারই কিনছে না, বরং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বেড়ে গেছে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা। মূলত চীনাদের এ স্বর্ণ কেনার প্রবণতাই বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দামকে রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ডলারে।

মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনেই চীনের এ স্বর্ণ কেনার উদ্দেশ্য বলে কেউ কেউ মনে করছে। তবে এর পেছনে দেশটির জনগণের একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা আঁচ করতে পেরেই চীনের এলিট সমাজ তাদের সম্পদ দেশের বাইরে জমা করার বদলে দেশেই নিজের হাতের নাগালে রাখতে চাইছেন। আর স্বর্ণ কিনে জমা রাখার মাধ্যমেই তা সবচেয়ে ভালোভাবে সম্ভব। অর্থাৎ চীন যে তাইওয়ানকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে, সে বিশ্বাস দানা বাঁধছে চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

টার্গেট তাইওয়ান, ডেডলাইন ২০২৭

জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুত চীন যেভাবে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে নিচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের সামরিক বাহিনীকেও ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করছে বেইজিং। এমন এক সময়ে এই সামরিকীকরণ চলছে যখন তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বেরও উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আর চীনের এসব প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন সামরিক মহল। মার্কিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন শি জিনপিং তাইওয়ান দখলে তার সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আর এজন্যই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত নৌবাহিনীর সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুলিনো বলেন, অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চীন সচেতনভাবে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। যা কিনা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ক ব্লগিং সাইট ওয়ার অন দ্য রকস’-এ নিজের এক লেখায় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক স্টুডম্যান বলেন, শি জিনপিং (চীনা প্রেসিডেন্ট) তার দেশকে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য এক বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য শি জিনপিং চীনা সমাজকে সামরিকীকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বর্মে মুড়িয়ে ফেলছেন।’

এর অংশ হিসেবেই চীনা কর্তৃপক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামালের একটি কৌশলগত মজুত গড়ে তুলছে বলে মনে করেন মার্কিন এ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই বেইজিং এই মজুত গড়ে তুলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাইক স্টুডম্যান আরও বলেন, ২০২২ সালে চীনের শীর্ষে নেতৃত্বের যে রদবদল, সেখানেও শি জিনপিংয়ের এ যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে। বেছে বেছেই তাইওয়ান সম্পর্কে অভিজ্ঞদের নিজের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে চীনের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনকেই মনে করা হয় তাইওয়ান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

এমনকি তাদের মধ্যে সামিল রয়েছেন এমন একজন সামরিক কর্মকর্তা, পলিটব্যুরোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে তার আগের ধাপ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না তিনি। তাইওয়ান বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতাই পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দেয় তাকে। এ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সাবেক কমান্ডার। আর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোন সামরিক অভিযানের সার্বিক দায়িত্ব প্রথমে এই ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের ওপরেই বর্তাবে।

যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা বিশ্ব

তবে চীন যখন দ্রুত তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে, তখনও চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা মহল। জ্বালানি ও কাঁচামালের আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বেইজিংকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে এখনও দৃশ্যমান কোন শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো চিপ থেকে চীনকে বঞ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। বরং চলতি মাসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চীন সফরের মধ্যদিয়ে এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে যে, ইউরোপীয়রা চীনের সঙ্গে বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী।


আরও খবর



জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যা, এক মাসেও শেষ হয়নি তদন্ত

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার এক মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত কমিটি।

তবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারার কারণ হিসেবে পুলিশের কাছে কিছু তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি বলে জানান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেন।

গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট দেন জবি ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এরপরই কুমিল্লার বাগিচাগাঁও নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী বর্তমানে কুমিল্লা কারাগারে আটক আছেন।

আত্মহত্যার পরদিনই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবুল হোসেন, আইন অনুষদের ডিন মাসুম বিল্লাহ, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ঝুমুর আহমেদ এবং সদস্যসচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার (আইন) রঞ্জন কুমার।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, কমিটির সদস্যরা কুমিল্লায় গিয়ে অবন্তিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের মতামত জানার চেষ্টা করেছেন। পরে কারাগারে আটক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা বলেন তারা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আমরা গুছিয়ে আনছি। কিছু তথ্য আমরা কুমিল্লার স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে চেয়েছি। সেগুলো দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো পাইনি। তদন্তের স্বার্থে আমাদের কিছু ডিজিটাল এভিডেন্স যেমন- অবন্তিকার মোবাইলের কল লিস্ট, সর্বশেষ কল রেকর্ড, ফেসবুক- ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিং স্ক্রিনশট প্রয়োজন। এছাড়াও মোবাইলে আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য থাকলে সেটা এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছি। এগুলো পেলে কাজের সুবিধা হবে।

কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির পাঠানো চিঠি আমরা পেয়েছি। আইনানুযায়ী যতটুকু তথ্য আমরা দিতে পারি, তা অবশ্যই দিব। তাছাড়া আমাদের গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম এখনো চলমান আছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাস বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্তে যদি অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তবে তাকে আমরা গ্রেফতার করব। মোবাইল ফরেনসিক ও পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন পেলে আমরা পরবর্তী কাজ করতে পারব। আমাদের তদন্ত কার্যক্রম কবে শেষ করতে পারব- তা পুরোপুরি নির্ভর করছে ফরেনসিক প্রতিবেদন এবং পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন পাওয়ার ওপর।

উল্লেখ্য, আত্মহত্যার আগে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। প্রতিকার চেয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে বারবার অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাননি। উল্টো সহকারী প্রক্টর তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন বলেও উল্লেখ করেন সেই ফেসবুক পোস্টে।


আরও খবর



পুলিশের অভিযানে অপহৃত পল্লী চিকিৎসকসহ ২ জনকে উদ্ধার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

অপহরণের ২৬ ঘণ্টা পর কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছড়ার শিলখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে পল্লী চিকিৎসকসহ ২ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি।

তিনি জানান, পাহাড়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  (উখিয়া-টেকনাফ) সার্কেল মো রাসেলের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিমের অভিযানের মুখে পল্লী চিকিৎসকসহ অপহৃত দুই জনকে রেখে পালিয়ে যান অপহরণকারীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে রবিবার (২১ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর হোয়াইক্যং সড়ক (ঢালা) দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পল্লী চিকিৎসকসহ ওই দুজনকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা।

অপহৃত পল্লী চিকিৎসক জহির উদ্দিন (৫১) উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পশ্চিম থাইংখালী এলাকার মাওলানা জাকের হোসেনের ছেলে। টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর, নয়াপাড়ার মৃত মোঃ শফি মোহাম্মদ রফিক (৩২)।

অপহরণের শিকার জহির উদ্দিনের ছোট ভাই কমরুদ্দিন মুকুল জানান, তার ভাই শাপলাপুর এলাকায় প্রতিদিনের মতো চেম্বার শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। তার সঙ্গে একজন যাত্রীও ছিলেন। পথিমধ্যে শামলাপুর-হোয়াইক্যং সড়কের ঢালার নামক স্থানে আসলে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সিএনজি (অটোরিকশা) চালক বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এরপর থেকে মোবাইলে ফোন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে থাকেন অপহরণকারীরা।

প্রসঙ্গত, গত এক মাস ধরে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণের ঘটনা বন্ধ ছিল। এর আগে গত ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২৪ সালের এ পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক।


আরও খবর