আজঃ মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

আবারও চোখ রাঙাচ্ছে করোনা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৪ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ আবারও ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে আবারও ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ভাইরাস। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে ৩৮৩ শতাংশ। দশমিক ৫ শতাংশ থেকে শনাক্তের হার ছাড়িয়েছে ১৩ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ প্রবেশ করেছে। এমনকি এই ঢেউয়ে সংক্রমণ দ্রুত গতিতে চূড়ার দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ব্যক্তি সচেতনতার পাশাপাশি জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে সরকারকেও ভূমিকা রাখার পরামর্শ তাদের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ৬ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত (এক সপ্তাহ) আগের সপ্তাহের তুলনায় নতুন করে শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ দশমিক ১ শতাংশ। পরের সপ্তাহেই তা (১৩ থেকে ১৯ জুন) বাড়ে ৩৮৩ শতাংশ। অধিদপ্তর বলছে, গত ২৩ থেকে ২৯ মে দেশে করোনা শনাক্ত নিম্নমুখী ছিল। ওই সপ্তাহে ২১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ কম ছিল। এর পরের সপ্তাহে সংক্রমণ আরও কমে আসে। ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ২১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আগের সপ্তাহের তুলনায় শনাক্তের হার কমে দাঁড়ায় এক দশমিক ৯ শতাংশে। তবে এর পরের সপ্তাহ থেকে করোনার সংক্রমণ আবারও ঘুরে দাঁড়ায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি থেকে এর নিচে নেমে এলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ধরা হয়। উল্টো পথে যাত্রা অর্থাৎ সংক্রমণের হার পাঁচের নিচ থেকে পাঁচ ছাড়ালে পরবর্তী ঢেউ আঘাত হেনেছে ধরা হয়। সে হিসাবে গত ২০ জুন দেশে শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ ।

 সারাদেশেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যাবে: সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরর উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, করোনা সংক্রমণ এখন সুস্পষ্টভাবেই নতুন ঘরে প্রবেশ করেছে। যদিও এখনও কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যায়নি। ঢাকা শহরেই মূলত সংক্রমণটা দেখছি। ধীরে ধীরে এটি এখন প্রায় প্রতিটা জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যাবে।

সংক্রমণ বাড়লেই দেখা যায় নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হয়। এক্ষেত্রে এবারও কী তেমন কিছু হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব না হলেও বিএ- ৪, বিএ- ৫ নামের দুটি উপ-ভ্যারিয়েন্ট মিলে এখন সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। চীনের পর উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইউরোপে ওমিক্রনের পর যে ঢেউটা এসেছে, সেটি ওমিক্রনেরই সাব-ভ্যারিয়েন্ট। আশঙ্কাজনক হলো, ওমিক্রনের মূল ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে এটি আরও দ্রুতগতিতে ছড়ায়। আশঙ্কা করছি আমাদের দেশেও এমনটি হচ্ছে। জিনোম সিকোয়েন্স করলেই বিষয়টি জানা যাবে।

দুই সপ্তাহ বাড়বে সংক্রমণ, আবারও দ্রুত নেমে যাবে

আশঙ্কা প্রকাশ করে আইইডিসিআরর এই উপদেষ্টা বলেন, সংক্রমণের গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহার পর সংক্রমণ চূড়ায় উঠতে পারে। এই সময়টাতে দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ খুবই প্রবলভাবে ওপরের দিকে উঠছে। আবার আমরা আশা করছি খুব দ্রুত তা নেমেও (সংক্রমণের চূড়া) যাবে। সম্ভবত এই দুই সপ্তাহ এভাবে উঠতেই থাকবে, তারপর কিছুদিন স্থিতিশীল থাকবে। এরপর আবার দ্রুত নেমে যাবে।

এ অবস্থায় করণীয় কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা এখনও টিকা নেননি, তারা দ্রুত নিয়ে নেবেন। যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের বুস্টার ডোজ নিতে হবে। আবার টিকা নিয়েও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে জটিলতার শঙ্কাটা কমে যাবে। আর একেবারেই যদি টিকা না নেন, তাহলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার শঙ্কা থাকবে। আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কারা কারা টিকা নেননি। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে যারা বুস্টার ডোজ নেননি তাদের অবশ্যই টিকার আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

নতুন করে করোনার সংক্রমণ নিয়ে সেভাবে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম  বলেন, সংক্রমণ যখন পাঁচ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে, আমরা বলতে পারি নতুন ঢেউয়ে প্রবেশ করেছি। এর আগে সংক্রমণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত ৭ জুন থেকে আবারও তা বাড়তে শুরু করেছে। গত বছরের এই সময়ে সংক্রমণের চূড়া অনেক ওপরে অবস্থান করছিল। এই বছর সংক্রমণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখনও তা বলা যাচ্ছে না। তবে, খুব বেশি আতঙ্ক ছড়াবে বলে মনে হয় না। কারণ, আমাদের বিশাল সংখ্যক মানুষ টিকার আওতায় চলে এসেছেন। এছাড়া ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে অনেকের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। যে কারণে সংক্রমণ ততটা বড় আকারে ছড়াবে না। যদি টিকা সেভাবে আমরা দিতে না পারতাম, তাহলে এই সময়ে অবস্থা খুবই ভয়াবহ হতো।

নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট বিস্তার লাভ করেছে কি না জানতে চাইলে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, কোনো দেশেই তো নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের খবর পাওয়া যায়নি। আমার মনে হয় পুরাতন ভ্যারিয়েন্টগুলোই নতুন করে আবার সংক্রমণ ঘটাচ্ছে।  মানুষ এখন সংক্রমণকে একদমই ভয় পায় না। মাস্ক পরা তো মানুষ ছেড়েই দিয়েছে। মাস্কই আমাদের করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারে। এমনকি এর মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স থেকেও বাঁচা যায়। কারণ, আমরা জানি মাঙ্কিপক্সও মানুষের নাক দিয়ে প্রবেশ করে।

জনসমাগম করলে অবশ্যই প্রতিক্রিয়া আসবে : অধ্যাপক নজরুল ইসলাম

সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম প্রসঙ্গে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির এই সদস্য বলেন, সভা-সমাবেশ তো সামাজিক ব্যাপার। এগুলো হবে, ঠিক আছে। কিন্তু সতর্কতা বা সচেতনতা বলে যে কিছু একটা আছে, এগুলো তো কেউ চিন্তা করেন না। আমরা যতই পরামর্শ দিই, দেশের মানুষ তো তা মানে না। সামনে ঈদ (ঈদুল আজহা) আসছে। এই সময়ে মানুষের অনেক আনাগোনা হবে। এদিকে, সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে বড় আকারের সমাবেশ করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করতে। এগুলোর একটা প্রতিক্রিয়া তো অবশ্যই আসবে। এখন আমরা তো আর বলতে পারি না যে এসব অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। আমরা এটুকুই বলব যে, সভা-সমাবেশ যতটুকু সম্ভব সীমিত করা যায়, ততই আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।

সংক্রমণের স্থায়িত্ব প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে একটি গবেষণার কাজ চলছে। রেজাল্টটা যদি আমরা পাই তাহলে আন্দাজ করতে পারব যে সংক্রমণের এই ঢেউ কত দূর যাবে বা খুব বেশি সংক্রমণ ছড়াবে কি না।

সংক্রমণ বাড়া নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শঙ্কা, আছে প্রস্তুতিও

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গত মাসেও যেখানে করোনা সংক্রমণের হার এক শতাংশের নিচে ছিল, সেটি বর্তমানে অনেক বেড়েছে। সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে হাসপাতালগুলো আবারও রোগীতে পূর্ণ হয় যাবে। সংক্রমণ আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখন আবার করোনা বাড়ছে। গত এক মাসে দেশে সংক্রমণের হার ছিল দশমিক ৬ শতাংশ, এখন সেটি পাঁচ শতাংশের ওপরে উঠে গেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এই মুহূর্তে যদি আমাদের পরীক্ষা বাড়ে, সংক্রমণের সংখ্যাও বেড়ে যাবে। তবে, একটি ভালো বিষয় হলো আমাদের হাসপাতালগুলোতে এবার রোগীর সংখ্যা অনেক কম। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন করেছি। এখন পর্যন্ত আড়াই কোটি মানুষকে বুস্টার ডোজ দিয়েছি। যারা বাকি আছেন তারা দ্রুতই বুস্টার ডোজ নিয়ে নেবেন, সুরক্ষিত থাকবেন।

জনসমাগম বর্জনের পরামর্শ কারিগরি কমিটির

এদিকে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ, সামাজিক দূরত্ব বজায়সহ সকল প্রকার জনসমাগম বর্জনের পরামর্শ দিয়েছে কোভিড সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা এই বিষয়ে বলেন, দেশে করোনার নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়ানো দরকার। আমরা দেখছি যাদের জ্বর, সর্দি, কাশি হচ্ছে; তাদের অনেকে কোভিড পরীক্ষা করছেন না। ফলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। যাদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং যারা কোভিড- ১৯ আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসছেন, তাদের অবশ্যই পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে পুনরায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিমান, স্থল ও নৌ-বন্দরগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে কোভিড- ১৯ নেগেটিভ সনদ, টিকা সনদ আবশ্যক করতে হবে।


আরও খবর



বজ্রপাতে তিন জেলায় ৬ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে নারীসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারে দুই, রাঙামাটিতে তিন এবং খাগড়াছড়িতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার দুই ইউনিয়নে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই চাষির মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন- উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্লাদিয়া এলাকার জমির হোসেনের ছেলে মো. দিদার হোসেন (২৫) এবং রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে আরাফাতুর রহমান (১৩)।

স্থানীয়দের বরাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, ভোর থেকে পেকুয়ায় থেমে থেমে বজ্রপাতসহ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে মাঠে থাকা লবণ পলিথিনে ঢেকে রাখতে যান দিদার হোসেনসহ পরিবারের আরও ২-৩ জন। এক পর্যায়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান দিদার।

তিনি বলেন, প্রায় একই সময়ে রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে করতে গিয়েছিল কিশোর আরাফাতুর রহমান। তিনিও একইভাবে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন। মৃতদের লাশ স্বজনরা বাড়ি নিয়ে গেছে বলেও জানান পেকুয়ার ইউএনও।

রাঙামাটি: রাঙামাটির সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে; এ সময় আরো অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো. নজির (৫০) এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপাকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) এবং সাজেকের লংথিয়ান পাড়ার তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।

রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা বলেন, ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, অনেক দিন পর আজ সকালে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হয়। এতে রূপাকারী ইউনিয়নে বাহারজান নামে একজন এবং সাজেকে তনিবালা ত্রিপুরা নামের আরেক নারী নিহত হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।

তিনি বলেন, এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেয়ার সময় বজ্রপাতে সাতজন আহত হয়েছেন।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শওকত আকবর বলেন, সকালে শহরের সিলেটি পাড়া থেকে নজিরকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ইয়াছিন আরাফাত উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে।

স্বজনদের বরাতে বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, বৃষ্টির সময় উঠানের পাশেই আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাত ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেজী চক্রবর্তী বলেন, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

নিউজ ট্যাগ: বজ্রপাতে মৃত্যু

আরও খবর



আনোয়ারায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত, সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মো.আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা

Image

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় নুরজাহান বেগম (৬৩) নামে এক নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটায় দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নুরজাহান বেগম হাইলধর ইউনিয়নের খাসখামা এলাকার মো. শাহ আলমের স্ত্রী।

নিহতের ফুফাতো ভাই তৌহিদুল হক জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিলেন আমার ফুফি, এমন সময় দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাস এসে তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন তিনি। এক পা ভেঙে যায় তার। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমার ফুফিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে একই জায়গায় বার বার দুর্ঘটনা ঘটনার পর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় উত্তেজিত জনতা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। কিছুক্ষণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। পরে পুলিশ এসে যানচলাচল স্বাভাবিক করে দেন।

জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমদ বলেন, দুর্ঘটনার খবরে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। সড়ক দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনার পর পুলিশ মাইক্রোবাস উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

থাইল্যান্ডকে বিশেষ অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগের সুযোগ পরীক্ষা করে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র সই হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখারও প্রস্তাব দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি। থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাগশিপ ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরণ করছে। আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।

সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান শেখ হাসিনা। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানানো হয়।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারি ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

বৈঠক শেষে সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে গতকাল বুধবার ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে থাইল্যান্ডে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছলে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেওয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ অভ্যর্থনা জানান।


আরও খবর



দেশের মানুষ আজ ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ তাদের ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য এভাবেই আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে।

বুধবার (১ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এটা শুধু বিএনপির সংগ্রাম নয়, এটা দেশের মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম। অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে মে দিবস পালন করছি, যখন দেশটা দৈত্য-দানবের কবলে পড়ে সমস্ত কিছু তছনছ হয়েছে। আমাদের অগণিত নেতাকর্মী সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মে দিবসে দেশের সকল মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, এখন আর চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আনব। এই হোক আজকের মে দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



মহেশপুরে ৪০ পিস স্বর্ণের বারসহ আটক ২

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

Image

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৪০ পিস স্বর্ণের বারসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী পলিয়ানপুর সীমান্তের ছয়ঘড়িয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলো- মহেশপুর উপজেলার ছয়ঘড়িয়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (৫৩) ও মৃত আকতার আলীর ছেলে মো. হুমায়ন কবির (৪০)।

৫৮ বিজিবি মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সালাহউদ্দিন চৌধুরী জানান, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে সোনা পাচার হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করে বিজিবি। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ছয়ঘড়িয়ায় মহেশপুর থেকে সীমান্তের দিকে যাওয়া একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তারা। সেসময় মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৪ কেজি ৬৩৩ গ্রাম ওজনের ৪০ টি স্বর্ণের বার। আটক করা হয় ওই গ্রামের জসিম উদ্দিন ও হুমায়ন কবিরকে। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করে আসামিদের মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।


আরও খবর