অবশেষে ইনিংস ঘোষণা করলো বাংলাদেশ। মিরপুর টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তোলার পর অধিনায়ক লিটন দাস থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ৬৬১ রানের। অর্থাৎ এই টেস্টে জিততে হলে ৬৬২ করতে হবে আফগানদের। যদিও টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়ার বিশ্বরেকর্ড ৪১৮ রানের।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন দুজন-নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক। শান্ত ১২৪ করে ফিরলেও মুমিনুল শেষ পর্যন্ত ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন। ১২ চার আর ১ ছক্কায় সাজানো তার ইনিংসটি। ৮১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দিন পুরোটাই ব্যাটিং করতে চায় বাংলাদেশ
গত বছর ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ৮৪ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন মুমিনুল হক। তবে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন, ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর মধ্যে ১৩টি টেস্ট খেলেছেন মুমিনুল। নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় শেষ দিকে তো নিজের ফর্মই হারিয়ে ফেলেছিলেন।
অবশেষে আফগানিস্তানকে পেয়ে ১৩ টেস্ট পর ১৪তম টেস্টে এসে তিন অংকের দেখা পেলেন টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার। নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুমিনুল হকও।
১২৩ বল খেলে সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। সেঞ্চুরির পথে ১২টি বাউন্ডারির মার মারেন মুমিনুল। তার সঙ্গে হাফসেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছে যান অধিনায়ক লিটন কুমার দাসও। ৫৩ বলে ৮টি বাউন্ডারি মেরে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।
আরও পড়ুন: মুমিনুল-লিটনের ব্যাটে ছয়শ ছাড়াল বাংলাদেশের লিড
এর আগে নাজমুল হোসেন শান্ত সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসকে খুব বেশি বড় করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে করা ১৪৬ রান ছোঁয়ার আগেই ফিরে যান সাজঘরে। তার ব্যাট থেকে আসে ১২৪ রানের ইনিংস। জহির খানের বলে আবদুল মালিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান চলতি টেস্টের সবচেয়ে সফলতম ব্যাটার।
২৭৪ রানে নাজমুল আউট হওয়ার পর অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও মাঠে নেমে থিতু হতে পারেননি। মাত্র ৮ রান করে সেই জহির খানের বলে ইবরাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ২৮২ রানের মাথায় পড়ে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেট।
এর আগে কি অসাধারণ এক জুটি গড়ে তুলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং জাকির হাসান। অথচ, সেই জুটিরই কিনা যবনিকাপাত ঘটলো একটি ঝুঁকি নিতে গিয়ে রানআউট হওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৭৩ রানের বিশাল এক জুটি গড়ার পর রানআউটে কাটা পড়ে বিদায় নেন জাকির ।। ৭১ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: লিডের পাহাড় বানিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশ
হাশমত উল্লাহ শহিদির করা ৩৫তম ওভারের ৩য় বলে নাজমুল হোসেন শান্ত বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা করেন। নাসির জামাল বলটি দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাউন্ডারি বাঁচান। বল কুড়িয়ে ফেরত পাঠান ইবরাহিম জাদরান। এরই মধ্যে তৃতীয় রান নিতে যান শান্ত। কিন্তু জাকির ক্রিজে পৌঁছার আগেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন আফসার জাজাই। ৯৫ বল খেলে ৭১ রান করে আউট হন জাকির।
প্রসঙ্গত, প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয়ে গেলেও আফগানদের দেড়শও করতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ১৪৬ রানে অলআউট করে দিয়ে প্রথম ইনিংসেই লিড নেয় ২৩৬ রানের।
দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলেই বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছিল ৩৭০ রান। ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান নিয়ে দিন শেষ করে টাইগাররা। তৃতীয় দিন সকালে ব্যাট করতে নেমে আগের দিনের দৃঢ়তাই দেখিয়েছেন শান্ত এবং জাকির।
আরও পড়ুন: দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির রেকর্ড শান্তর
এর আগে টেস্টের প্রথম দিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য ১৪৬ রান এবং মাহমুদুল হাসান জয়ের ৭৬ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৩৮২ রান। আফগানিস্তানের নিজাত মাসুদ নেন ৫ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে আফগানদের কোনো ব্যাটার ৪০ এর ঘরও স্পর্শ করতে পারেনি। ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। ৪ উইকেট নেন এবাদত হোসেন। ২টি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান মিরাজ।