সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার ১১
বছরের কারাদণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আই অ্যাম নট ভেরি হ্যাপি।
কারণ বিচার বিভাগের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন, তিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন। আমি একজন
আইনজীবী, বিচার বিভাগের সঙ্গে সারাজীবনই সম্পৃক্ত। আমার জন্য এটি সুখকর হতে পারে না।
তিনি বলেন, অন্যায় করলে বিচার হবেই। প্রমাণিত
হচ্ছে— কেউ আইনের ঊর্ধ্বে
নয়, এটি অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী
এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইতিহাসে কোনো বিচারপতি
এ রকম অন্যায় করেননি। যে কারণে বিচার করার প্রয়োজন হয়নি। অন্যায় হলে নিশ্চয়ই বিচার
হতো। পৃথিবীতে অনেক নজির আছে। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে-ফ্রেঞ্চ রেভল্যুশনেও দেখবেন, সেটি
এখানে বড় কথা নয়। সেটিকে উদাহরণ হিসেবেও আনা উচিত নয়।
আনিসুল হক বলেন, আমরা ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল
পর্যন্ত কী দেখেছি—এই দেশে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করলেও
একটা মামলা হয় না। এ সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু হত্যা
মামলা, জেল হত্যা মামলা, মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার এবং অন্যান্য যেসব দুর্নীতির
বিচার হয়েছে, সেসবের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে— দেশে আইনের শাসন
আছে। অন্যায় করলে আদালত এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। অন্যায়ের বিচার হবে এবং প্রতিরোধ
হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত
৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুদকের এ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে ১১
বছরের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি তাকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এসকে সিনহাসহ এ মামলার মোট আসামি ১১ জন।
এর মধ্যে আট আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এ ছাড়া দুই আসামি খালাস পেয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন— ফারমার্স ব্যাংকের
সাবেক এমডি একেএম শামীমকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের অডিট
কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট
স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন,
ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা
রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী— এই ছয় আসামির
প্রত্যেকের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার অপর দুই আসামি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা খালাস পেয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা, সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।