প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে
যুদ্ধ করব না, আমরা যুদ্ধ করতে চাইনা শান্তি চাই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি জাতির পিতা
দিয়ে গেছেন- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় এটাই আমরা বিশ্বাস করি।’
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭১
মেকানাইজড ব্রিগেড ও মেকানাইজড ইউনিটসমূহের পতাকা-উত্তোলন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সাভার সেনানিবাসে সিএমপিসিঅ্যান্ডএস প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন
থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
এখন আন্তর্জাতিক পরীমন্ডলেও ভূমিকা রাখছে, তারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের
সঙ্গে যুক্ত। আমি চাই আমাদের সেনাবাহিনী কখনো কোনো দিক থেকে পিছিয়ে থাকবে না। আধুনিক
যত রকম যুদ্ধ সরঞ্জামাদি আছে তার সঙ্গে পরিচিতি যাতে হয় এবং সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য
রেখে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমানভাবে তারা যেন চলতে পারে সেভাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে
গড়ে তুলতে চাই।’
দেশের মর্যাদা রক্ষায় সৈনিকদের সব সময়
সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবহমান কাল ধরে
জাতীয় পতাকা একটা মর্যাদার প্রতীক। যেকোনো পতাকা প্রাপ্তি এটা বিরাট সম্মানের। এ পতাকার
মর্যাদা সব সময় সমুন্নত রাখতে হবে। পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা অর্থাৎ সেই সঙ্গে দেশের
মর্যাদা রক্ষা করা প্রতিটি সৈনিকের দায়িত্ব।’
গণতন্ত্রের ধারা অব্যহত থাকায় দেশ উন্নত
হচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে
ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র রয়েছে বলে আমরা সর্বক্ষেত্রে উন্নতি করতে পারছি। বাংলাদেশ
আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে একটা উন্নয়নের রোল মডেল
হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।’
জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে টানা
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। স্বজন
হারানোর বেদনা নিয়ে ফিরে এসেছি শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে,
তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে শুকরিয়া আদায় করি;
বাংলাদেশের জনগণের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, কারণ তারা বারবার আমাকে নির্বাচিত করে
জনগণের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আজকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া
বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিরক্ষা
ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে আমরা সিলেটে ১৭ পদাতিক ডিভিশন, রামুতে ১০ পদাতিক ডিভিশন
এবং বরিশালে ৭ পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। বিগত ৪ বছরে বিভিন্ন ফরমেশনের অধীনে
৩টি ব্রিগেড এবং ছোট-বড় ৫৮টি ইউনিট প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এছাড়াও, ২৭টি ছোট-বড় ইউনিটকে
এডহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও ৯টি সংস্থাকে পুনর্গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি মাওয়া-জাজিরাতে
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শেখ রাসেল সেনানিবাস এবং মিঠামইন, রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন সেনানিবাস
স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আর্মি এভিয়েশনের ফরোয়ার্ড
বেস এবং লালমনিরহাটে এভিয়েশন স্কুল নির্মাণের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীতে
নতুন কম্পোজিট ব্রিগেড ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড যুক্ত করেছি। তাছাড়াও অত্যাধুনিক এম.বি.টি.-২০০০
ট্যাংক, অ্যাম্ফিবিয়াস ট্যাংক ভিটি-৫, এম.এল.আর.এস রেজিমেন্ট, মর্টার রেজিমেন্ট, সেল্ফ
প্রোপেল্ড রেজিমেন্ট, এম.আই.-১৭১ এস.এইচ. হেলিকপ্টার ও কাসা সি-২৯৫ ডব্লিওয়ের মতো অত্যাধুনিক
পরিবহন বিমান, অত্যাধুনিক ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র মেটিস-এম-১, বিমান বিধ্বংসী মিসাইল
এফ.এম.-৯০, আধুনিক পদাতিক সৈনিক ব্যবস্থা প্রভৃতি সেনাবাহিনীতে যুক্ত করেছি।’