মহামারিকালে অর্থনীতির
ক্ষত সারানোর পাশাপাশি বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে দেশের ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণকারী
মেগা প্রকল্পগুলোও। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দ্রুত এগিয়ে যাওয়া
প্রকল্পগুলোতে বড় অঙ্ক বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। ঘোর ক্রান্তিকালেও
উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়নে বরাদ্দ খরচে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
অদৃশ্য ভাইরাসের
তাণ্ডবে অনিশ্চয়তায় পৃথিবী, বাদ যায়নি বাংলাদেশও। অতিমারি করোনায় ধুঁকতে থাকা দিনগুলোতে
বড় হিসাব যখন টিকে থাকা। ভ্যাকসিন বন্দোবস্ত, চিকিৎসার সুব্যবস্থাসহ আর্থিক সীমাবদ্ধতার
মধ্যেও থমকে যায়নি দেশের চিত্র পাল্টে দেয়া মেগা প্রকল্পগুলো।
নতুন অর্থবছরে
সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে টাকার অঙ্কে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। স্বপ্নের পদ্মাসেতুতেও বরাদ্দ বেড়েছে গেল বছরের তুলনায়। বরাদ্দ বেড়েছে
কর্ণফুলী নদীতে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণ প্রকল্পেও।
যোগাযোগ অবকাঠামোর
নতুন সক্ষমতা গড়তে, কক্সবাজারের রামু থেকে ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলসংযোগ
প্রকল্পটিও সুদৃষ্টি পেয়েছে সরকারের। যমুনা নদীতে রেলসেতু নির্মাণও বরাদ্দ পেয়েছে গতবারের
চেয়ে বেশি। জোর দেয়া হয়েছে টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প মাতারবাড়িতেও।
এ ছাড়া মেট্রোরেল
প্রকল্পে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার পাশাপাশি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
সম্প্রসারণ প্রকল্পেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। প্রকল্পকে পূর্ণ অবয়ব দিতে
বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের আনুষঙ্গিক কাজেও।
করোনা চ্যালেঞ্জ
মাথায় নিয়েও ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পগুলো যথা সময়ে শেষ করার বিষয়ে উচ্চকণ্ঠ বাস্তবায়নকারী
কর্মকর্তারা। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের শীর্ষ কর্মকর্তা জানালেন, গাফিলতির সুযোগ
নেই স্পর্শকাতর এসব স্থাপনায়।
রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রধান কাজগুলো এই বছর হবে। ১৬ সেপ্টেম্বর
প্রথম ইউনিটের কাজ করা হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে কোনোদিন আমাদের কাজ বন্ধ থাকেনি, বর্তমানে
প্রতিদিন প্রায় ২৫-২৬ হাজার মানুষ কাজ করছে। নিউক্লিয়ার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে হলে
কোনো গাফিলতির সুযোগ নেই। এই ধরনের প্রকল্প মনিটরিংয়ের জন্য আন্তর্জাতিক কমিউনিটি থাকে
নিকট অতীতে সরকারের
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করা প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই মুখ্যসচিব মনে করেন, স্বচ্ছতা
নিশ্চিত করে বরাদ্দ ব্যয় করাই হতে হবে মূল লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রীর
সাবেক মুখ্যসচিব বলেন আবুল কালাম আজাদ বলেন, যারা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছেন
তারা টাইমলাইন মেইনটেইন করে স্বচ্ছতার সাথে নিবিড়ভাবে কাজটি পর্যবেক্ষণ করবেন। আমাদের
প্রতি মুহূর্তের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। সে জন্য করোনাকেও মোকাবিলা করতে হবে উন্নয়ন
ও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।