চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বুকচিড়ে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী জলকদর খালের দুপাশে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার থেকে উপজেলা প্রশাসন সীমানা নির্ধারণ অভিযান শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তারের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল খালেক পাটোয়ারী, বাঁশখালী থানার ওসি কামাল উদ্দীনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাঁশখালীর উত্তর থেকে দক্ষিণ ১৫০ বর্গমাইলের উপজেলার ঐতিহ্যের বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে জলকদর খাল। ঐতিহ্যবাহী জলকদর খাল বাঁশখালীকে ইকোনমিক জোনে রুপ দিয়েছে। ঐতিহ্যের এ জলকদর খাল প্রভাবশালী ও ভূমিদস্য সিন্ডিকেট চক্র অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। খাল দখল করে স্থাপনা ও ইমারাত নির্মাণ করেই চলছে নিয়মিত। বাঁশখালীর চাম্বল বাংলা বাজার এলাকায় জলকদর খালের দুই পাশে গড়ে তুলেছে পাকা ভবন ও দোকান।
অন্যদিকে ভাঙ্গণের কবলে দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় সংকুচিত হয়েছে জলকদর খাল। জলকদর দখল ও গতিপথে বাধা সৃষ্টি করার ফলে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে পানির স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় তলিয়ে যায় কৃষকের ফসলি জমি ও উপকূলবর্তী জনসাধারণের বসতঘর।
সম্প্রতি হাইকোর্ট জলকদর খাল উদ্ধারের জন্য প্রাথমিকভাবে সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে বাঁশখালীর জলকদর খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে সীমানা নির্ধারণ ও উদ্ধার কার্যক্রম খানখানাবাদ ঈশ্বর বাবুর হাট অংশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবেই শুরু করেছে।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগীতা করার জন্য এলাকাবাসীর প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, তবুও সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে সরাসরি উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কারো উপর অবিচার হবে না। সবাই যার যার অধিকার নিয়ে আসতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বলেন, জলকদরের মূল সীমানা নির্ধারণের জন্য হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে। নতুন করে কেউ যেন স্থাপনা নির্মাণ না করে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জলকদর খাল উদ্ধারের প্রাথমিক কাজ হিসেবে জলকদরের সীমাধানা নির্ধারণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবদুল খালেক পাটোয়ারী বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা জলকদরের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শুরু করেছি। সীমানা নির্ধারণের জন্য জেলাপ্রশাসক ৬ জন সার্ভেয়ার নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি। তারা একজন সার্ভেয়ার দিবে। আমরা সীমানা নির্ধারণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝিয়ে দিবো।