কাতারের মাটিতে
বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট
আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ শিরোপার আক্ষেপ ঘোচাতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে
অপেক্ষাকৃত অনেকটা দুর্বল সৌদি আরবকে সামনে পাচ্ছে আলবিসেলেস্তারা।
লুসাইল আইকনিক
স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল ৪ টায় সৌদি আরবের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। নিজের
পঞ্চম বিশ্বকাপের আসরে আসা আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনের মেসির উপরই থাকবে ম্যাচের সব
স্পটলাইট। পিএসজির হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেসিও সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ মাথায়
নিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথমবারের বিশ্ব আসরের শিরোপা হাতে তোলার অপেক্ষায় আছেন। ক্যারিয়ারের
শেষ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া ফুটবলের এই ক্ষুদে যাদুকরের জন্য আশাটা মোটেই অতিরিক্ত নয়।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী
ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছরের শিরোপাখরা কাঁটিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা সঙ্গী করে কাতারে
এসেছে লিওনেল স্কালোনির দল। দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য,
৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপ নিয়েই দেশে ফেরা।
২০১৯ কোপা আমেরিকার
ফাইনালে ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারানোর পর সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৩৬ ম্যাচে
অপরাজিত থেকে কাতারে খেলতে এসেছে আত্মবিশ্বাসী আলবিসেলেস্তারা। লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বের
কোন পরাজয়ের স্বাদ পায়নি স্কালোনির দল। সব প্রতিযোগিতায় শেষ ৫ ম্যাচে জয় পেয়েছে। সর্বশেষ
এই ৫ ম্যাচে কোন গোলও হজম করেনি লিওনেল মেসির দল। বিপরীতে প্রতি ম্যাচে অন্তত তিনটি
গোলসহ সর্বমোট ১৬ গোল দিয়েছে। বিশ্বকাপের আগে সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বুধবার তারা
সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিধ্বস্ত করেছে ৫-০ গোলে।
চার বছর আগে রাশিয়া
বিশ্বকাপে শেষ ১৬’ থেকে বিদায় নিয়ে
যতটা না হতাশা রয়েছে তার থেকে বেশি হতাশা রয়েছে টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে মাত্র একটি
জয় নিয়ে। অথচ ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল আর্জেন্টিনা। জার্মানির
কাছে অবশ্য ১-০ গোলে হেরে রানার্স-আপ শিরোপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। কাতারে
তাই গ্রুপ-সি’র সেরা দল হিসেবে পোল্যান্ড, মেক্সিকো
ও সৌদি আরবের উপরে থেকেই প্রথম পর্ব শেষ করতে চাইবে স্কালোনির দল।
এদিকে, স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপ শুরু করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু ৫-০ গোলের পরাজয়ের দুঃসহ স্মৃতি থেকে বেরিয়ে এসে এবার প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ভাল ম্যাচ উপহার দিতে চায় অ্যারাবিয়ান ফ্যালকনসরা। র্যাংকিং কিংবা শক্তিমত্তা বিচারে আর্জেন্টিনা থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে সৌদি আরব।
গত আসরে গ্রুপ
পর্ব থেকে সৌদি আরবের বিদায় প্রত্যাশিতই ছিল, এবারও অবশ্য তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু
ডাচ কোচ হার্ভে রেনার্ডের দলের এবার মূল লক্ষ্য নিজেদের সেরাটা উপহার দেওয়া।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে
শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছিল সৌদি আরব। সেটিই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে দলটির সেরা সাফল্য।
যদিও বিশ্বের ৫১তম র্যাংকধারী দলটি সেরা ফর্মে থেকে কাতারে আসেনি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায়
শেষ ১০ ম্যাচে মাত্র একটিতে জিতেছে তারা।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি
ম্যাচে পানামার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করলেও ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে গেছে ১-০ গোলে। যদিও
কাতারের পরিবেশ কিংবা আবহাওয়ায় খেলতে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে সৌদি আরব।
বিশ্বকাপের চূড়ান্ত
পর্বে এর আগে কখনই আর্জেন্টিনা-সৌদি আরব মুখোমুখি হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত এশিয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে চারটি
ম্যাচের দুটিতে জয় ও দুটিতে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। ২০১২ সালে সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচটি
গোলশুন্য ভাবে শেষ হয়েছিল।