বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে জাতীয় পার্টির (জেপি) কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম বাহাদুরকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যায় জড়িত সন্দেহে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানী ও মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার গাজিন্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সম্পর্কে মা-মেয়ে। তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক।
১৫ জুলাই রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার কলেজগেট এলাকায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনে থেকে সালাম বাহাদুরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে। জেপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক ছিলেন তিনি। পেশায় ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী ছিলেন। হত্যার এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ বলছে, মামলার পর তদন্তে নেমে মরদেহ উদ্ধারস্থল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের সব ক্যামেরা অকার্যকর পায়। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে উপপুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক জানান, রাজধানীর ধানমন্ডির একটি সুপার শপে ৫-৬ বছর আগে সালামের সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। পরে মেয়েটির সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে সালামের। আর এ সম্পর্কের বিভিন্ন মুহূর্ত গোপনে ধারণ করে রাখেন সালাম। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল।
তিনি আরও জানান, সালামের এমন কাজে মেয়েটি ঢাকা ছেড়ে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে নিজ বাড়িতে চলে যান। কিন্তু সালামের ব্ল্যাকমেইল চলতেই থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ জুলাই বিকালে সালাম মেয়েটির বাড়িতে যান। তিনি সেখানে যাওয়ার আগে মেয়ের পরিবার স্থানীয় কয়েকজনকে বিষয়টি জানায়। সালাম মেয়েটির বাড়িতে যাওয়ার পরই শুরু হয় নির্যাতন। স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় সালামের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য বারবার নির্যাতন করা হয়।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে সালাম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনার পথে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি টের পেয়ে অন্যরা গাড়ি থেকে নেমে যান। এরপর গ্রেপ্তার মা ও মেয়ে সালামের মরদেহ গাড়িতে করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে পালিয়ে যান। উদ্ধারের পর মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ও ক্ষত পাওয়া যায়।