বরগুনায় মধ্যে রাতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে এক পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে কান কেটে গুরুতর জখম করে স্বজনদের মারধর করে ঘরবাড়ি ভাংচুর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মৃত্যু আলী খানের ছেলে নাসির গং ও মৃত্যু আতাহার হোসেন এর ছেলে মোঃ কামরুল হাসান (দোদল) গং এর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় গৌরিচন্না ইউনিয়নের মোসলেম আলীর ছেলে আঃ মোতালেব (৪৮) বাদী হয়ে থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় একজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াধীন আছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) গভীর রাত একটার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের গৌরীচন্না বাজার সংলগ্ন এলাকায় বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর স্থাপন এবং ওই পরিবারের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে ৩ জনকে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আঃ মোতালেব।
আরো জানা যায়, হামলার পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহতরা হলো, ওই এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র মোঃ ইমরান (১৮), মোতালেব এর ভাগিনা সিয়াম (১৭), মোতালেব এর বোন মেরি বেগম (৪০)। এদের মধ্যে গুরুতর ইমরানকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন এবং অন্যান্যরা বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর ইমরানের ডান পাশের কানসহ গলা পর্যন্ত অঙ্গহানি হয়েছে। তবে অবস্থার অবনতি হলে যে কোনো সময় তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করতে পারে বলে জানিয়েছেন শেবাচিমের নাক কান গলা বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আঃ মোতালেব এর বাবা মোঃ মোসলেম আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল মোতালেবের ক্রয় ও হেবা কৃত জমি নিয়ে প্রতিবেশী আলী খানের ছেলে নাসির খান ও তার পরিবারদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
আব্দুল মোতালেবের জমি প্রতিপক্ষ নাসির খান ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক জবরদখল করার চেষ্টা চালায়। দখল করতে প্রায় সময় মোতালেব তার পরিবারকে বিভিন্ন ভয়-ভীতিসহ খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছে। তখন বিভিন্ন সময় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ থানা প্রশাসনকে অবগত করলে প্রতিপক্ষ নাসির আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
আব্দুল মোতালেব জানান, আমার ক্রয় কৃত জমি এলাকার এক প্রভাবশালীর হুকুমে প্রতিপক্ষ নাসির গং ও কামরুল হাসান গং কোর্টের রায় অমান্য করে এই হামলা এবং জবর দখলের ঘটনা ঘটিয়েছে।
আমরা পরিবার ৯৯৯ বারবার ফোন দিয়েও আত্মরক্ষা হয়নি। প্রায় তিন ঘন্টা ব্যাপী ঘর তোলা ও হামলা চালিয়ে প্রতিপক্ষরা ওই পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়।
নাসির খান বলেন, ওইদিনের হামলার ঘটনায় আমি জরিত ছিলাম না এবং শুধু শুধু মামলায় দিয়ে আমাকে হয়রানি করতেছে এবং উল্টো আমার স্ত্রীর উপরে হামলা করেছে ওরা।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আঃ হালিম বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত। তবে এ ঘটনার মামলায় একজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।