চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন আবার চালানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মচারীরা। সূচি অনুযায়ী, আজ রোববার বিকেল থেকে শাটল ট্রেন নিয়মিত চলাচল করবে। তবে চবিকে ট্রেন চলাচল ক্ষেত্রে রেলওয়ের কর্মচারীরা ৬টি শর্ত দিয়েছে।
রবিবার দুপুর ১২টায় রেলওয়ে কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান সহকারী প্রক্টর মো. মোরশেদুল আলম। তিনি বলেন, আজ বিকেল থেকে শাটল ট্রেন চলাচল করবে। ক্যাম্পাস থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এই দুই সূচিতে কোনো বাস কোনো বাসের ব্যবস্থা করা হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে যাওয়ার সময় হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন।
এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেদিকে ৬৫টি যানবাহন, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব ও পুলিশ বক্স ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে ট্রেনে থাকা লোকোমাস্টার জাহেদুল ইসলাম, সহকারী লোকোমাস্টার মইনুল ইসলাম পাটোয়ারী ও গার্ড জহিরুল ইসলামকেও মারধর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ট্রেন স্টেশনে রেখেই এই তিনজন পালিয়ে যান। এর পর থেকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাটল ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন লোকোমাস্টাররা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
এরপর রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে রেলওয়ে কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এম আর মঞ্জু, রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক, রেলওয়ে কারিগর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস কে বারী, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের পাহাড়তলী শাখার সভাপতি ইকবাল আহমেদ, সম্পাদক গোলাম শাহরিয়ার ও রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিলের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী।
রেলওয়ের কর্মচারীদের দেওয়া ছয়টি শর্ত হলো- ১. পাহাড়তলী থেকে প্রতিটি ইঞ্জিন সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের (জিআরবি) কমপক্ষে চারজন সদস্য দিতে হবে; ২. বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্মচারীদের প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন মিলে বৈঠক করতে হবে। ওই বৈঠকে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে হবে; ৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা; ৪. ট্রেনের ছাদে ও ইঞ্জিনে শিক্ষার্থী উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে; ৫. ছাত্রদের সচেতনতা বাড়াতে শ্রেণিকক্ষে কাউন্সেলিং করতে হবে এবং ৬. গত বৃহস্পতিবার লোকমাস্টারদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।