নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিফতরের পক্ষে আইনি লড়াই লড়তে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হায়দার আলীকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তবে এ পরিস্থিতিতে সরকারের নিয়োগ করা আইনজীবী থাকলে ড. ইউনূসের মামলা লড়বেন না বলে জানিয়েছেন এ অধিদফতরের বর্তমান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
খুরশীদ আলম বলেন, সারকারি চাপমুক্ত থেকে এতদিন মামলা পরিচালনা করেছেন তিনি। এ মুহূর্তে সরকার থেকে যদিও আরও একজনকে দেয়া হয়; তবে এ মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া ভালো। একটি মামলা দুজন আইনজীবী লড়লে মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর আমার জন্যেও কষ্টের, আমাকে হাইকোর্ট-আপিল বিভাগ ফেলে আপনাদের মামলার জন্যে যেতে হয়। আপনাদের যদি অন্য আইনজীবী থাকেন তবে তিনি এটি লড়ুক, আমার কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে, কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদফতরের পক্ষে নতুন করে নিয়োগ পাওয়া ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর বলছেন, দুই আইনজীবীর একসাথে কাজ করতে তার কোনো সমস্যা নেই। এতে মামলা পরিচালনা সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন।
এর আগে শ্রম আদালতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীকে নিয়োগ দেয় সরকার।
শ্রমিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় আরও ১৮টি মামলা হয় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ জন শ্রমিক বাদী হয়ে পৃথকভাবে মামলাগুলো করেন। এ আদালতের চেয়ারম্যান (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা মামলাগুলো গ্রহণ করে আগামী ১৫ ও ১৬ অক্টোবর ড. ইউনূসকে হাজির হয়ে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মোট ২১ কোটি ৪১ লাখ ১৭ হাজার ১৬৩ টাকা পাওনা পরিশোধ না করায় শ্রম আইন ২০০৬-এর ২১৩ ধারা লঙ্ঘিত হওয়ায় এ মামলাগুলো করেন বাদীরা। গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৭ জন ও বর্তমান একজন কর্মচারী এসব মামলার বাদী। জানা যায়, কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী, লভ্যাংশের ৫ শতাংশ হারে পাওনা বুঝিয়ে না দেয়ায় এ মামলাগুলো করা হয়।
গত ৬ জুন একটি মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত। ওই মামলায় অভিযোগ গঠনের পর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সাক্ষী গ্রহণ চলছে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। ওই মামলাটিও বিচারাধীন রয়েছে।