ফুটবল বিশ্বকাপ
শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে বিয়ার নিষিদ্ধ করেছিল কাতার। জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, মাঠে বিয়ার খেতে
পারবেন না দর্শকরা। প্রথম ম্যাচেই সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে দেখা গেল দর্শকদের।
কাতারের স্টেডিয়ামে চিৎকার উঠল, আমাদের বিয়ার দাও।
বিশ্বকাপের প্রথম
ম্যাচে আয়োজক দেশ কাতারের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ইকুয়েডর। খেলা শুরুর কয়েক মিনিট পরেই
গ্যালারিতে উপস্থিত ইকুয়েডরের কয়েক হাজার সমর্থক চিৎকার শুরু করেন। তাঁরা বলতে থাকেন,
আমরা বিয়ার চাই। আমাদের বিয়ার দাও। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে এই স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
তাতে স্বভাবতই অস্বস্তিতে আয়োজকেরা। প্রথম ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন দেশের শাসক থেকে শুরু
করে অন্য কর্মকর্তারা। তাঁদের সামনে এ ভাবে বিরোধিতা প্রদর্শন ভাল বার্তা দিল না আয়োজকদের
জন্য।
কাতারের স্টেডিয়ামে
বিয়ার বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে সে দেশের রাজপরিবারের জন্য। তারা নির্দেশ দিয়েছে, বিশ্বকাপের
সব স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ করতে হবে মদ বা মদ জাতীয় পানীয়ের বিক্রি। রাজপরিবারের এই নির্দেশ
সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি বিশ্বকাপের আয়োজকেরা। কাতার সরকারের নির্দেশে শেষ
মুহূর্তে স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা
এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তার ছবি দেখা গেল প্রথম ম্যাচেই।
বিয়ার বিক্রি
বন্ধ হওয়া নিয়ে অবশ্য বেশি চিন্তা করতে রাজি নন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। শনিবার
দোহায় সাংবাদিক বৈঠক তিনি জানিয়েছেন, যদি এটাই তাঁদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়, তা হলে
বিয়ার পাকাপাকি ভাবে বন্ধের চুক্তিতে সই করেই দেবেন। এখানেই না থেমে তিনি বলেছেন, স্টেডিয়ামে
বিয়ার বিক্রি করা যাতে সম্ভব হয়, তার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করেছি।
তা সত্ত্বেও বলব, তিন ঘণ্টা বিয়ার না খেলেও সবাই বেঁচে থাকবেন। এই কারণেই হয়তো ফ্রান্স,
স্পেন, স্কটল্যান্ডে স্টেডিয়ামে মদ বিক্রি করা নিষিদ্ধ। হয়তো ওরা আমাদের থেকে বেশি
বুদ্ধিমান। তাই জন্যেই এই কাজ করেছে।
মাঠে যে বিয়ার
পাওয়া যাবে না, তা নয়। কিন্তু তাতে অ্যালকোহল থাকবে না। ফিফা ফ্যান ফেস্টিভ্যালেই অ্যালকোহল-যুক্ত
বিয়ার পাওয়া যাবে। এ ছাড়া নির্বাচিত কিছু হোটেলে বিয়ার ছাড়াও হুইস্কি, রাম, ওয়াইন
পাওয়া যাবে। স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রির অনুরোধে কাতার সরকার প্রথমে রাজি হলেও শুক্রবার
হঠাৎই তারা ঘুরে দাঁড়ায়। ফিফাও বিবৃতি জারি করে সিদ্ধান্ত বদলানোর কথা জানায়। এই সিদ্ধান্তে
শুধু সমর্থকেরাই নন, ক্ষুব্ধ বিয়ার উৎপাদনকারী সংস্থাও। বিপুল আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা
করছে তারা।
এত দিন পর্যন্ত
ঠিক ছিল স্টেডিয়াম এবং ফ্যান-জোনে বিয়ারের অস্থায়ী দোকানগুলি থেকে খেলার শুরুর আগের
এবং পরের ৩০ মিনিট বিয়ার বিক্রি করা হবে। স্টেডিয়াম চত্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় বিয়ার
পান করে গ্যালারিতে প্রবেশ করতে পারবেন ফুটবলপ্রেমীরা। খেলা দেখার টিকিট থাকলে তবেই
স্টেডিয়াম চত্বরে বিদেশি নাগরিকেরা বিয়ার কিনতে পারবেন। এক জন চার গ্লাসের বেশি বিয়ার
কিনতে পারবেন না। সম্ভাব্য অশান্তি এড়াতেই বিয়ার পানের ক্ষেত্রেও সীমা বেঁধে দেওয়া
হয়। কিন্তু রাজপরিবারের নতুন দাবিতে সেই ব্যবস্থাও বন্ধ হয়েছে।