জাতীয় সংসদ
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের বিরোধিতা করেছে জাতীয় পার্টি
(জাপা)। আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে
আয়োজিত সংলাপে এ কথা জানায় দলটি।
জাতীয় পার্টির
মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে ওই সংলাপে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। সংলাপে
প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি)-সহ অন্য কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টিসহ
দেশের মানুষের ইভিএমে আস্থা নেই দাবি করে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
ইভিএম ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এ সময় জাতীয়
পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘ইভিএমে আমাদের আস্থা নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমারও এতে কোনো আস্থা নেই। মানুষ
মনে করে ইভিএমে ভোট পাল্টে দেওয়া হলে কিছু করার নেই। কারণ ফলাফল রি-চেক করা যায় না।
ইভিএম সম্পর্কে আপনাদের এক্সপার্টদের কথা আমার মাথায় ঢোকেনি। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস
ছাড়া ইভিএম ব্যবহার যৌক্তিক হবে না।’
সংলাপে ইসির
উদ্দেশে চুন্নু আরও বলেন, ‘আপনাদের দোষারোপ করে লাভ নেই। রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা না পেলে নির্বাচনে
আপনারা অসহায়। সমস্যা আমাদের সিস্টেমের। কিছু সমস্যা নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে যতই
শক্তিশালী আইন করা হোক, কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনে ভালো হোক, সেটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি
কেউই চায় না।’
আলোচনায় জাতীয়
পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময়
ইভিএম নষ্ট হলে সেটা আপনারা ঠিক করবেন? না নির্বাচনের অন্য আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম করবেন?’
সংলাপে নির্বাচন
কমিশনার আহসান হাবীব খান ইভিএমের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, তাদের মেয়াদকালে ইভিএমে কোনো
সমস্যা হয়নি। তারা ৪ থেকে ৫০০ ভোট ইভিএমে করেছে।
ডেপুটি স্পিকার
ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন ব্যালট পেপারে
ভোট গ্রহণের দাবি করে চুন্নু বলেন, ‘আমরা চাই ওই নির্বাচনটি ব্যালট পেপারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হোক। তাহলে
নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’ নির্বাচন ইভিএমে হলে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই বলেও জানান
দলটির মহাসচিব।’
সংলাপে জাতীয়
পার্টি প্রস্তাবে আরও বলা হয়, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন, নির্বাচনী কর্মকর্তারা
নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট বিভাগে না পাঠিয়ে নিজস্ব ক্ষমতাবলে শাস্তির ব্যবস্থা
নেওয়া, দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনি খরচ ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে করে ৫০ লাখ টাকা করার
প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া নির্বাচনে
প্রার্থীতার সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়া, বকেয়া ইউটিলিটি বিল, ক্রেডিট কার্ডের বিলের
জন্য প্রার্থিতা বাতিলের বর্তমান বিধান বাতিল, সরকারি কর্মচারীদের অবসরের যাওয়ার পরে
সরকারি মালিকানাধীন বা স্বায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের
তিন বছর না গেলে নির্বাচন করতে না পারার বিধান করারও প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
মুজিবুল হক
চুন্নুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলে অংশ নেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান
সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম,
শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মো. রেজাউল ইসলাম
ভূইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান
জসিম উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।