জাপানে হাসি শেখার স্কুল খোলা হয়েছে। কেউ
চাইলে এখানে ভর্তি হয়ে কীভাবে হাসতে হয় তা জানতে পারবেন। জাপানে হাসির ক্লাস নেন এমন
একজন শিক্ষক কেইকো কাওয়ানো।
কেইকো কাওয়ানোর ক্লাসরুমে ঢুকতেই দেখা
গেল টোকিও আর্ট স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের মুখের সামনে আয়না ধরে আছে। কিছুক্ষণ পর
পর তারা আঙ্গুল দিয়ে তাদের মুখের দুইপাশ প্রসারিত করছে। মূলত কীভাবে হাসতে হয় তারা
সেটাই অনুশীলন করছে।
এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক যে, হাসি এমন
কোনোকিছু না যেটা মানুষ টাকার বিনিময়ে শিখবে। তবে জাপানে কাওয়ানোর এই হাসি শেখানোর
স্কুল ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর আগে মহামারির সময় জাপানের সর্বত্র মাস্ক পরার নিয়ম
ছিল।
আরও পড়ুন<< ভারতের ওড়িশায় আবারও ট্রেন লাইনচ্যুত
২০ বছরের তরুণী হিমাওয়ারী ইয়োশিদা স্কুলের
অন্যান্য কোর্সের মতই হাসি শেখার কোর্সটি নিয়েছেন। জব মার্কেটে ভালো কিছু করে দেখানোর
জন্য তার হাসি নিয়ে আরেকটু কাজ করা দরকার বলে মনে করেন ইয়োশিদা। তিনি বলেন, আমি কোভিডের
সময় আমার মুখের পেশীগুলো খুব একটা ব্যবহার করিনি।
কাওয়ানোর কোম্পানির নাম ইগাওইকু যার আক্ষরিক
অর্থই হাসি শিক্ষা। গত এক বছরে এই স্কুলের চাহিদা অন্তত চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসির
শিক্ষা নিতে এখানে বিপণণ এর সঙ্গে জড়িত মানুষেরা বেশি আসেন। এছাড়াও স্থানীয় সরকারি
কর্মকর্তারাও তাদের এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে সৌহার্দ্যময় সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কাওয়ানোর
শরণাপন্ন হন।
মহামারির আগে থেকেই জাপানে জ্বরের মৌসুমে
বা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময়ে জাপানে মাস্ক পরা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। মার্চে
মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সরকার নিয়মকানুন শিথিল করার পরেও অনেকেই প্রতিদিনই মাস্ক পরেন।
মে মাসে জাপানি গণমাধ্যম এনএইচকে একটি জরিপ চালিয়ে জানায়, মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ মাস্ক
পরা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছেন এবং ৫৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন তারা দুই মাস আগে যেমন মাস্ক
পরতেন এখনো তেমনটাই করে চলেছেন।
আরও পড়ুন<< ইউক্রেনের বড় আক্রমণ ভেস্তে দিল রাশিয়া, নিহত ২৫০ সেনা
হাসি শেখার ক্লাসে আসা এক চতুর্থাংশ স্কুল
শিক্ষার্থী পাঠদানের সময় মাস্ক পরে থাকেন। কাওয়ানো বলেন, তরুণরা মাস্ক পরা জীবনের সঙ্গে
অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। মাস্ক পরার কারণে অনেক নারীরা মেকাপ ছাড়াই বের হতে পারছে আবার ছেলেরা
যারা শেইভ করেনি তারাও বিষয়টি লুকাতে পারছে।
কাওয়ানো আগে একটি রেডিওতে উপস্থাপনায় ছিলেন।
২০১৭ সাল থেকে তিনি পাঠদান শুরু করেন। কীভাবে সুন্দর করে হাসতে হয়, এবং কীভাবে জাপানের
সবচেয়ে সুন্দর হাসিটি হাসতে হয় তা আরও ২৩ জনকে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন।
তার সবচেয়ে জনপ্রিয় হাসিটি হলিউড স্টাইল
স্মাইলিং টেকনিক। মূলত এই হাসিটি "ক্রিসেন্ট আইজ" এবং "রাউন্ড চিকস''
এর সমন্বয়ে গঠিত। সাধারণত শিক্ষার্থীরা তাদের ট্যাবলয়েডে হাসি রেকর্ড করেন এবং এরপর
সেটার ওপর তাদের নম্বর দেওয়া হয়। কাওয়ানো বিশ্বাস করেন, এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র হওয়ায়
সাংস্কৃতিকভাবে জাপানিরা পশ্চিমাদের চেয়ে কম হাসেন।