আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

জি–২০ সম্মেলনকে ঘিরে ‘অচল’ দিল্লি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যদি বলা হয় লকডাউনে রাজসিক যজ্ঞ, মোটেই বাড়াবাড়ি হবে না। কিংবা যদি বলা হয়, জি২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রাণহীন দিল্লিতে, সেটাও অতিশয়োক্তি হবে না মোটেই।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে রোববার পর্যন্ত দিল্লির প্রাণকেন্দ্র নিউ দিল্লি জেলার হাল এমনই হতে চলেছে। শীর্ষ সম্মেলন নিরুপদ্রব ও নির্বিঘ্ন করে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি পুলিশ যা যা করছে, আজ পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর হাল তেমন হয়নি।

নিউ দিল্লি বা লুটিয়েন্স দিল্লি বলতে সেই এলাকাকে বোঝায়, যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সব রথীমহারথীর বাস। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকাংশ দপ্তর অবস্থিত। যেখানে পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের অবস্থান। কনট প্লেস, খান মার্কেট, বেঙ্গলি মার্কেটের মতো বিশাল ও অভিজাত বাজার রয়েছে, আছে ইন্ডিয়া গেট জুড়ে মনোরম সবুজের রমরমা। বড় বড় হোটেল, মিউজিয়াম। এক কথায় বিশ্বের পর্যটকেরা যে অঞ্চলে বছরভর ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন, এই নিউ দিল্লি এলাকা তাই।

এই জেলার মধ্যেই নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলনস্থল ভারত মন্ডপম, অনেক আগে যার নাম ছিল প্রগতি ময়দান। এই ভারত মন্ডপমেই হতে চলেছে দুই দিনের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। সে জন্য সেজেগুজে দিল্লি প্রস্তুত। অথচ কাল থেকে সেখানে প্রাণের স্পন্দন অনুভূত হবে না। হবে না কারণ, গোটা নিউ দিল্লি জেলাকে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে বেঁধে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কনট প্লেস, খান মার্কেট, গোল মার্কেট, বেঙ্গলি মার্কেটসহ নিউ দিল্লি জেলার মধ্যে থাকা সব বাণিজ্য এলাকা। কোনো দোকান খোলা হবে না সোমবার ভোরের আগে। বন্ধ রাখতে হবে সব সিনেমা-থিয়েটার হল। কোনো সরকারি যান চলবে না। শনি ও রোববার বন্ধ থাকবে দিল্লি শহরের রাস্তার পরিচিত অটোরিকশা, ট্যাক্সি। বেসরকারি যান চলাচলও বন্ধ থাকবে ওই তল্লাটে। বৈধ পাসধারী ছাড়া সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ।

বিমানবন্দর থেকে মূল শহরে আসার জন্য ন্যাশনাল হাইওয়ে খোলা রাখা হবে শুধু সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য। বাকিদের ঘুর পথে শহরে যাওয়ার রাস্তা বাতলানো হয়েছে।

এই ঝঞ্ঝাট থেকে বাঁচতে বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো তাদের কয়েকটি পরিষেবা বন্ধ রাখছে বলে জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় নেতাদের বিশেষ বিমান রাখার কারণে বিমানবন্দরেও ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই রব উঠেছে। হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ বিদেশি এয়ারক্র্যাফট রাখতে। রাজধানীর ভালো কোনো হোটেলে একটি ঘরও খালি নেই। সরকার আগে থেকে সব বুক করে ফেলেছে।

বিমানবন্দর বা রেলস্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যেতেআসতে যাত্রীদের টিকিট বা হোটেল বুকিংয়ের প্রমাণ দিতে হবে। নইলে পুলিশ থেকে ছাড় মিলবে না। দেশবিদেশের সাংবাদিকদের হাল সবচেয়ে খারাপ। ভারত মন্ডপমে যেতে হলে তাঁদের প্রত্যেককে সকাল ছয়টায় হাজির হতে হবে দক্ষিণ দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। সেখান থেকে ভারত মন্ডপম যেতেআসতে ভরসা বিশেষ শাটল বাস।

বৈধ পাস নিয়ে ভারত মন্ডপমে গাড়ি নিয়ে যাওয়া গেলেও সেখানে পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ওই অঞ্চলে যাওয়ার জন্য মেট্রোরেলের একমাত্র স্টেশন, যার নাম সুপ্রিম কোর্ট স্টেশন, তা টানা তিন দিন বন্ধ থাকবে। ওই স্টেশনে কোনো মেট্রো থামবে না। কাজেই সংবাদমাধ্যমের এত মাত্র গতি সরকারি শাটল বাস।

নিউ দিল্লি এলাকার বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, তিন দিনের বাজারহাট সবাই যেন আগেভাগে সেরে ফেলেন। অফিসকাছারি, স্কুলকলেজ, মলসহ সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে বাসিন্দাদের বলা হয়েছে অনাবশ্যক ঘোরাফেরা না করতে। এমনকি তিন দিন প্রাতর্ভ্রমণ না করারও পরামর্শ দিল্লি পুলিশের পক্ষে দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, নিউ দিল্লি জেলায় তিন দিন জোমাটো, সুইগি, অ্যামাজনের মতো সংস্থা খাবার বা অন্য কিছু ডেলিভারি দিতে পারবে না। এই তিন দিন ২০০এরও বেশি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এই তিন দিন দিল্লি মেট্রো ভোর চারটা থেকে চালানো হবে। কিন্তু নিউ দিল্লি পুরো বন্ধ থাকার ফলে কে বা কারা তাতে চাপবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সম্মেলন উপলক্ষে কনট প্লেস সাজানো হয়েছিল। সে জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি রুপি। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বলে এই অনিন্দ্যসুন্দর মার্কেট প্লেসের সৌন্দর্য বিদেশি অতিথিরা উপভোগ করতে পারবেন না। কনট প্লেসের ব্যবসায়ী সংগঠনের আক্ষেপ, তিন দিনে শুধু তাঁদের বাণিজ্যিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০০ কোটির টাকার কাছাকাছি।

লকডাউন শব্দে প্রবল আপত্তি দিল্লি পুলিশের। অথচ যা হচ্ছে তাতে নির্দ্বিধায় বলা যায় কোভিডকালে জনপ্রিয় হওয়া শব্দ লকডাউন ফিরিয়ে এনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। প্রাণহীন মহাযজ্ঞ।


আরও খবর



বান্দরবানের বাকলাইতে দুই ‘কেএনএফ’ সদস্যের মৃত্যু

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানের রুমা ও থানচির সীমান্তবর্তী বাকলাই এলাকায় দুটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে মৃতদেহ দুটি কেএনএফ সদস্যের।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে রেমাক্রী ইউনিয়নের বাকলাই এলাকায় মৃতদেহ দুটি পাওয়া যায়। তাদের পরনে কেএনএফের পোশাক থাকায় ধারণা করা হচ্ছে মৃতদেহ দুটি কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যের। তবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ জানায়, রবিবার সকালে রুমা ও থানচির বাকলাই এলাকায় দুটি মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তারা কে বা কারা সে বিষয়ে জানা না গেলেও কেএনএফের পোশাক পরিহিত বলে জানায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যায়।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, দুটি মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়েছি। আমরা মৃতদেহ উদ্ধারে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। জায়গাটি দুর্গম হওয়ায় পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে পারব।’

প্রসঙ্গত, ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় রুমা ও থানচিতে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ধরতে পরিচালিত হচ্ছে যৌথ অভিযান। এ পর্যন্ত যৌথ অভিযানে কেএনএফের ৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


আরও খবর



সোহেল চৌধুরীর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ফেনীর ছাগলনাইয়ার মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যত বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন তা ৯০ দিনের (তিন মাস) মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৫ বছর আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওই সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হালিমের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। অপর প্রার্থী এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

আদালতে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন। সোহেল চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, ২০১৯ সালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়। এর ফলে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর মধ্যে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বাতিল হওয়া দুই প্রার্থী। একইসঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোহেলকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ২০১৯ সালেই হাইকোর্ট এসব বিষয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যানের গেজেট স্থগিত করেন। পরে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। তবে আইনি জটিলতায় মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। শপথ না নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

আদালত ৫ বছর আগে জারি করা রুল আজ (১৬ মে) নিষ্পত্তি করে সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে যে বেতন-ভাতা ও সুবিধা নিয়েছেন তা রায় পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ফেরত দিতে বলেছেন। এই সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে ফেনীর জেলা প্রশাসককে তার থেকে আদায় করতে বলেছেন।

নিউজ ট্যাগ: ছাগলনাইয়া ফেনী

আরও খবর



ভারতে লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোট শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

দেশটির ১৩ রাজ্যের ৮৯টি লোকসভা আসনে ভোট গ্রহণ চলছে। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ১০২টি আসনে প্রথম ধাপে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, আজ সবচেয়ে বেশি ভোট গ্রহণ হচ্ছে দক্ষিণের রাজ্য কেরালায়। এই রাজ্যের ২০টি লোকসভা আসনের সবকটিতেই ভোট হচ্ছে। দ্বিতীয় দফা ভোটের লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, অ্যানি রাজা, শশী থারুর, নবনীত রানা, ওম বিড়লা, হেমা মালিনী, অরুণ গোভিল এবং প্রহ্লাদ জোশীর মতো প্রবীণ প্রার্থীরা।

কেরালা নানা করণেই এবার লোকসভা ভোটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। রাজ্যটির ওয়ানাড়ে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রাহুল গান্ধী। গতবারের জয়ী তিনি। এছাড়াও লড়ছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। দ্বিতীয় দফার ভোটে রাজ্যটির ২০ আসনের ভোট যুদ্ধে ২ কোটি ৭১ লাখ ভোটার ১৯৪ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। আর নানা করণে ওয়ানাড়ে, ত্রিশুর এবং তিরুবন্তপুরম এই তিন আসনের দিকে নজর গোটা দেশের।

ভোট বৈচিত্র্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চমক হচ্ছে এখানে মোট ভোটারের অর্ধেকের বেশি নারী। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, রাজ্যটির মোট ভোটারের সংখ্যা ২ কোটি ৭০ লাখ ৯৯ হাজার ৩২৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ কোটি ৩৯ লাখ ৭২৯ জন। আর পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ কোটি ৩১ লাখ ২ হাজার ২৮৮ জন। ট্রান্সজেন্ডার ভোটার রয়েছেন ৩০৯ জন।


আরও খবর



পাঁচ বছরে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ১৫৯ গুণ, স্ত্রীর ৪৮গুণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দারের ৫ বছর ব্যবধানে স্থাবর, অস্থাবর, ব্যাংক আমানতসহ বিভিন্ন সম্পত্তি বেড়েছে ১৫৯ গুন। এছাড়া তার স্ত্রী সুমি আক্তার এইবার প্রার্থী হয়েছেন।

সেখানে স্ত্রীর ব্যাংকে জমা ব্যবসাসহ সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ৪৮ গুণ। রেজবি উল কবির উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হলফনামা জমা দিয়েছেন। জমা দেওয়া সেই হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান রেজবি উল কবিরের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ও পেশা ব্যবসায়ী দেখানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ২টি মামলা থাকলেও সেগুলো নিস্পত্তি হয়েছে। গত ৫ বছরে তার নিজের নির্ভরশীল উৎস থেকে আয়, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যবসায় পুঁজি বেড়েছে। তবে ব্যাংক ঋণ কমেছে। পাঁচ বছর আগে তাঁর ব্যবসায় বাৎসরিক আয় ছিল ৫ লাখ ২৮ হাজার ৮৯ টাকা। বর্তমানে ৯৭ গুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৮ টাকা। গত ৫ বছর আগে অস্থাবর সম্পদ ছিলো ৫৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

বর্তমানে ব্যাংকের পরিশোধিত ঋণসহ অস্থাবর সম্পত্তির পরিমান দাড়িয়েছে ৬ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার ৫৪২ টাকা। যা আগের থেকে ১০০ গুন বেড়েছে। স্থাবর সম্পত্তি গত ৫ বছর আগে ছিলো ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। যা বর্তমানে ২৮০ গুণ বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ কোটি ৮ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৮ টাকা।

বর্তমানে তিনটি ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ৮৯৬ টাকা। ঋণের চাপ কমেছে ৪৩ শতাংশ। বার্ষিক আয়, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে গড়ে তার সম্পাদ বেড়েছে ১৫৯ গুণ। গত ২০১৯ সালের হলফনামায় ২ কোটি ৮৩ লাখ ৬৭ হাজার ৯৬৫ টাকা ঋণ ছিলো। গত ৫ বছর আগে তার মেসার্স পায়রা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করলেও এই বার সাথে যুক্ত করেছেন মেসার্স ফাতেমা রাইস মিল ও মেসার্স পায়রা স্বমিল এন্ড টিম্বার। তবে নগদ টাকা,নিজের নামের বাড়ি ও গাড়ি নেই।

গত ৫ বছর আগে যে সব খাত থেকে কোনো আয় ছিলোই না। শূণ্য থেকে সেই সব খাতে বর্তমানে ব্যবসায় পুঁজি ২ কোটি ৮২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪২ টাকা দেখানো হয়েছে। কৃষি খাতে বছরে আয় ১ লাখ ১৫ হাজার ২শ টাকা। শেয়ার ও ব্যাংক আমানত ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৬৫ টাকা। পেশা থেকে আয় হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ব্যাংক সুদ থেকে বাৎসরিক আয় ৮১ হাজার ৫০৩ টাকা।

এদিকে স্ত্রী সুমি আক্তার চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন,তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই ও স্ব-শিক্ষিত উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি ব্যবসায়ী। রৈশি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায় বার্ষিক আয় ৬ লাখ টাকা, নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ২৭ লাখ টাকা, ব্যবসায় পুঁজি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা,কৃষি জমি ২.৫০ একর যার মূল্য ২০ লাখ টাকা,অন্যান্য পরিসম্পদ ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করেন হলফনামায়। ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় রেজবি উল কবির জোমাদ্দার তার স্ত্রীর নামে শুধু মাত্র নগদ ২ লাখ টাকা উল্লেখ করেন। স্ত্রীর গত ৫ বছর আগে কোনো আয় না থাকলেও গড়ে সব সম্পত্তি মিলিয়ে বেড়েছে ৪৮ গুন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন,আমার বাবা ও মা মৃত্যুর পরে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া সম্পদের কারণে সম্পত্তি বেড়েছে। এছাড়া বৈধভাবে ব্যবসা করে এ সম্পদের মালিক হয়েছি। আমার হলফনামায় সব কিছু উল্লেখ করা আছে।


আরও খবর



মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস, তীব্র তাপদাহে আরও পাঁচ মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তীব্র তাপদাহে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। তাপপ্রবাহ সঙ্গী করে গতকাল বৃহস্পতিবার চলতি মৌসুমের আরও একটি উষ্ণ দিন পার করল ৪৫ জেলার মানুষ। এ অবস্থায় গতকাল থেকে সারাদেশে চলছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তিন দিনের হিট অ্যালার্ট। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বাড়বে। আগামী তিন দিনে তাপমাত্রা খুব একটা বাড়বে না, গরমও খুব একটা কমবে না। তবে এবারের তাপপ্রবাহের পর একটু একটু করে বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা। আগামী মাসের শুরুতে বৃষ্টি হলেও তাতে তাপমাত্রা কতটা কমে, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এ অবস্থায় গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির প্রার্থনা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ৩০ বছরের মধ্যে এবারের এপ্রিল উষ্ণতম।

এই বর্ষাপূর্ব মৌসুমে দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। খুলনায় গতকাল ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে।

উষ্ণতম এপ্রিল

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই এপ্রিলে ঢাকার তাপমাত্রা গত ৩০ বছরের একই সময়ের গড়ের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, এপ্রিল বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস। তবে স্বাধীনতার পর এবারের এপ্রিলই সবচেয়ে উষ্ণ যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়েও চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রার গরম অনুভূত হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট তারিখে একটি স্থানের গড় তাপমাত্রা ৩০ বছরের তাপমাত্রার গড় করে গণনা করা হয়।

ঢাকা শহরে গতকাল গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গড় তাপমাত্রা হলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এল নিনোর প্রভাবে এ তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে এবং এটি এ মাসের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনায় তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে তাপদাহের স্থায়িত্বকালও বেড়েছে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বিগত বছরের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এটি প্রতীয়মান হচ্ছে, ২০২৪ সাল উত্তপ্ত বছর হিসেবে যাবে। আমরা এ বছর তাপপ্রবাহের দিন ও হার বেশি পেতে যাচ্ছি।

এপ্রিল উষ্ণতম মাস হওয়ায় বরাবরই এ সময়ে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে উল্লেখ করে অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, এটি অস্বাভাবিক নয়। এবার টানা দুই সপ্তাহ তাপপ্রবাহ থাকায় ও বৃষ্টিহীন পরিস্থিতি বিরাজ করায় গরমের অনুভূতি বেড়েছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণটা বেশি, যে কারণে অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিক যা থাকার কথা, তার চেয়ে ৪ থেকে ৭ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা উঠছে বিভিন্ন এলাকায়।

গরমে আরও ৫ মৃত্যু

সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য বলছে, গত বুধবার রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে গরমের কারণে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে নিজ কক্ষে দায়িত্ব পালনকালে প্রচণ্ড গরমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিঙ্ক লিমিটেডের ট্রাফিক পরিদর্শক রুহুল আমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, অতিরিক্ত গরমে হার্ট অ্যাটাকে রুহুল আমিন মারা গেছেন।

এর আগে বুধবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মারা যান রতন কর্মকার (৫৮) নামে এক স্বর্ণকার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে, হিট স্ট্রোকে রতন কর্মকার মারা গেছেন।

একই রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গরমে মারা গেছে ঋতু সুলতানা নামের এক শিক্ষার্থী। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে রোদের মধ্যে ঋতু মায়ের সঙ্গে ধান শুকানোর কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাত আড়াইটার দিকে ঋতু প্রচণ্ড অস্বস্তি বোধ করলে তার বাবা স্থানীয় একজন গ্রাম্য চিকিৎসককে নিয়ে আসেন। এর আগেই ঋতু মারা যায়।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বুধবার রাতে তীব্র গরমে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে মারা যান ফাতেমা বেগম (৫৭)। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনের রোগী। চিকিৎসকদের ধারণা, হিট স্ট্রোকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকার পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রব স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী জেবীন (১৬) প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বৃষ্টি হবে কবে

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ২৯ এপ্রিলের দিকে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, তাতে আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এবার বৃষ্টি শুরু হতে পারে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চল দিয়ে। ফলে গরম খুব একটা কমবে না। তবে তাপমাত্রা আর বাড়বে না, এটি বলা যায়।


আরও খবর