আফগানিস্তানের
রাজধানী কাবুলের একটি অভিজাত এলাকায় বসবাসরত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাসভবন লক্ষ্য করে
হামলা চালিয়েছে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি। আফগান সরকারি বাহিনী সেই হামলা প্রতিহত করেছে
এবং চার সশস্ত্র ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাবুলের ‘গ্রিন জোন’ খ্যাত শেরাপুর এলাকায় মঙ্গলবার ওই হামলার
সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদি বাসায় ছিলেন না। তাঁর পরিবার নিরাপদে
রয়েছে। ঘটনার পর পরই বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদি এক টুইট বার্তায় নিরাপদে থাকার কথা উল্লেখ
করে লিখেছেন, ‘ভয় পেয় না, সব কিছু ঠিক আছে’।
শেরাপুর মূলত
অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। আফগানিস্তানের প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা
সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণার পর পরই আফগানিস্তানজুড়ে
জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানদের লাগাতার হামলা ও একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নেওয়ার খবরের
মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
আফগান স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় ‘সব হামলাকারীকে
হত্যা’ করা হয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের
পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য তালেবানকেই দায়ী করা হয়েছে। জাতিসংঘ এরই মধ্যে দেশব্যাপী
এই লড়াই ও সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সেখানে প্রচুর বেসামরিক মানুষ হত্যার শিকার
হচ্ছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী শিবির কিংবা পাশের দেশে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
আফগান নিরাপত্তা
বাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চার হামলাকারী
নিহত হয়েছে। ইতালিয়ান মেডিকেল চ্যারিটি ইমার্জেন্সি নিশ্চিত করেছে যে, হামলায় আহত ১১
জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,
রাতে শেরাপুর এলাকা ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। পরে সেখানে কয়েকটি ছোট বিস্ফোরণ
ও প্রচণ্ড গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়।
আফগানিস্তানে
দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর
থেকেই দেশটিতে সংঘাত বেড়েছে। আফগান বাহিনীর হাত থেকে একের পর এক অঞ্চল দখল করে নিচ্ছে
তালেবান।
তালেবান যোদ্ধারা
গত কয়েকদিনে তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীতে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী সেপ্টেম্বর
সময়সীমার মধ্যে সেনা প্রত্যাহার শেষের পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকেই আফগানিস্তানে দ্রুত
তালেবানের প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে।