জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুতে জাতীয়
পার্টির মহাসচিবের পদটি খালি হয়েছে। এ পদে আসতে কয়েকজন নেতা ইতোমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু
করেছেন। দলটির নেতারা বলছেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যানকে দলের মহাসচিব
নির্বাচিত করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। ফলে, জাপার পরবর্তী মহাসচিব কে হবেন তা নির্ভর করছে
দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ইচ্ছার ওপর।
জাপা সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে দলটির
মহাসচিব হওয়ার আলোচনায় চারজনের নাম এসেছে। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান
এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো.
মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব
(রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী
যদিও রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান
রাঙ্গা আগেও জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলেন। এক্ষেত্রে তাদের দুজনের সম্ভাবনা খুব বেশি
নেই। নতুন কেউ মহাসচিব হতে পারেন।
জাতীয় পার্টির পরবর্তী মহাসচিব কাকে মনোনয়ন
দেওয়া হবে— জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের
বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ
বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বর্তমানে দলের আটটি সাংগঠনিক বিভাগে আটজন অতিরিক্ত মহাসচিব
আছেন। ফলে, নতুন মহাসচিব না থাকলেও তেমন কোনো ঝামেলা হবে না।’
তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির
এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, অভিজ্ঞতার দিক বিবেচনায় জাপার পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে
রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙ্গা এগিয়ে আছেন। কিন্তু আমিন হাওলাদারের বিষয়ে
সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নীতিবাচক। আর রাঙ্গাকে সরিয়ে বাবুলকে মহাসচিব করেছিলেন চেয়ারম্যান
নিজেই। ফলে, এখন আবার তাকে ফিরিয়ে আনবে বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত মহাসচিব
(রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সম্ভাবনাই বেশি।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার এক
কো-চেয়ারম্যান বলেন, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের মহাসচিব হওয়ার ইচ্ছা
অনেক দিনের। যদিও তিনি প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছুই বলেননি। এখন যেহেতু পার্টির সিনিয়র
কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ফলে, তার পক্ষে পার্টির মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা
নেই। তাই এবার হয়তো কাজী ফিরোজ রশীদের পার্টির
মহাসচিব হওয়ার স্বপ্ন পূরণও হতে পারে।
এ বিষয়ে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বাবলু
ভাইয়ের আগে আমি পার্টির মহাসচিব ছিলাম। এখন যদি পার্টির পক্ষ থেকে আমাকে মহাসচিবের
দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।
তবে, জাপা চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র
জানায়, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। এটি বিবেচনায়
নিলে হাওলাদারের সম্ভাবনাই বেশি।
কে হতে পারেন জাপার মহাসচিব— প্রশ্ন রাখা
হয় ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আসলে পার্টির
মহাসচিব কে হবেন তা ঠিক করবেন দলের চেয়ারম্যান ও পার্টির কো-চেয়ারম্যানরা বসে। তবে,
এখন পরিবর্তনের সময়। পার্টিতে তরুণরা যদি দায়িত্বশীল পদে আসেন, তাহলে আমরা তরুণ ভোটারদের
আকৃষ্ট করতে পারব। তবে, সিদ্ধান্ত যা-ই হোক আমরা সবাই মেনে নেব।’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন থাকার পর গত শনিবার (২ অক্টোবর) মৃত্যুবরণ করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন
আহমেদ বাবলু।