এশিয়ায় অর্থনীতির দিক দিয়ে সমৃদ্ধ দেশগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়া। বিশ্বে গম ও চিনির শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যেও রয়েছে দেশটি। তাই কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বাড়িয়ে তুলছে ইন্দোনেশিয়া। বিশ্বের বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া। এরই মধ্যে দেশটি গম ও ভুট্টার বিকল্প হিসেবে সোরগাম, সাগো ও কাসাভার উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টায় রয়েছে। শ্রমিক সংকট, জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতির রেকর্ড হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। চলতি বছরের নভেম্বরে দেশটিতে গ্রুপ-২০-এর শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
চলতি বছর ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইন্দোনেশিয়া মূল্যস্ফীতির চাপের মুখোমুখি হয়েছে। আবার ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটির সরকার সাময়িকভাবে পাম তেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নিজ দেশের জনগণের খাদ্য নিশ্চয়তার জন্য উদ্যোগটি নেয় দেশটির সরকার। এদিকে গম আমদানির দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রাশিয়ার আক্রমণের কারণে দেশটির গম আমদানিতে প্রভাব পড়েছে। এ প্রভাব মোকাবেলায় দেশটি সোরগাম, সাগো ও কাসাভার উৎপাদন এরই মধ্যে বাড়িয়ে চলেছে। পদক্ষেপটি অন্যান্য উৎপাদনকারী দেশ থেকে রফতানি নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে সহায়তা করবে। ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটির আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৩০০ শতাংশ বাড়াতে মন্ত্রিসভাকে রোডম্যাপ তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো।
দেশটি প্রধানত অস্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন, কানাডা, আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি করে। এ গম থেকে তাত্ক্ষণিক নুডলস তৈরি করা হয়, যা দেশটির প্রধান খাবারগুলোর একটি। অন্যদিকে, বৈশ্বিক ভুট্টা বাণিজ্যের ১ শতাংশের কম আমদানি করে ইন্দোনেশিয়া। তিন বছরের মধ্যে বিদেশ থেকে ভুট্টা আমদানি বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে জোকো উইডোডোর সরকার। এরই মধ্যে ভুট্টা আমদানি কমে আট লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। যেখানে সাত বছর আগেও এর আমদানি ছিল ৩৫ লাখ টন। দেশটিতে গবাদিপশু, বিশেষ করে পোলট্রি ফার্মে খাদ্য হিসেবে ভুট্টা ব্যবহার হয়। খাদ্যটির আমদানি রোধ করার পাশাপাশি দেশটিতে ভুট্টার দাম স্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রীয় মজুদ গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।