মতলব উত্তর উপজেলা
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতির
অভিযোগ পাওয়া গেছে। খামারিদের ভুয়া তালিকা তৈরি করে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের
(এলডিডিপি) করোনাকালীন প্রণোদনার প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা সহযোগীদের মাধ্যমে হাতিয়ে
নিয়েছেন তিনি। এর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মতলব উত্তর উপজেলা অফিসের সুপারভাইজার’সহ অন্যান্যরা।
শুধু তাই নয়,
নানা কৌশলে ও তালিকা তৈরির নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথম
ধাপে ৮শ’ খামারির নাম অর্ন্তভুক্ত করতে টাকা নেয়া
হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে ২৯৩জনের কাছ থেকে প্রায ৯ লক্ষ টাকা
নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও সিজিএসপি
কমিটির জন্য ৩১০ জন সদস্যের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ
কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেন।
জানা গেছে, করোনাকালীন
এলডিডিপির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত খামারিদের মাঝে প্রণোদনা হিসাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে
তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়।
এ তালিকা তৈরি
করেন ওই প্রকল্পের সুপারভাইজার’সহ সংশ্লিষ্টরা।
খামারিদের জন্য এ-ক্যাটাগরিতে ১০টি গবাদিপশুর ঊর্ধ্বে ২২ হাজার টাকা, বি-ক্যাটাগরিতে
ছয় থেকে নয়টি গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ১৫ হাজার টাকা এবং সি-ক্যাটাগরিতে দুই থেকে পাঁচটি
গবাদিপশুর জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এজন্য উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভাসহ ১৪টি
ইউনিয়ন থেকে তালিকা প্রস্তুত করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
পরে তালিকাভুক্তদের
মোবাইল সিম অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হলে দেখা দেয় অনিয়ম-দুর্নীতি। দেখা যায়, ওই
তালিকার যে সংখ্যায় খামারির নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে তালিকা
তৈরির শুরুতেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেন উৎকোচ নিয়ে খামারি নয়,
এমন লোকদের তালিকা তৈরি করেন। এমনকি যাদের একটিও গবাদিপশু ও ঘর নেই, তারাও ঠাঁই পান
তালিকায়।
সম্প্রতি প্রণোদনার
এসব অর্থ খামারি নন এমন লোকজনকে দেওয়া হলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। খামারিদের মাঝে বিষয়টি
জানাজানি হলে ওই দুর্নীতির ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
এদিকে একটি সূত্রে
জানা গেছে, খামারি সোহেল বলেন, প্রকৃত খামারিদের চেনেই না প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা।
তারা লুটপাটে ব্যস্ত। ভেঙে পড়েছে এ দপ্তরের কার্যক্রম।
এ ব্যাপারে উপজেলা
প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেন নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, মাঠ
পর্যায়ের কর্মীরা কিছুটা অনিয়ম করতে পারে। আমি কোন প্রকার টাকা গ্রহণ করিনি। যদি কেউ
অনিয়ম করে থাকে আমার জানা নেই।
চাঁদপুর জেলা
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, মতলব উত্তরে প্রণোদনার তালিকা
করতে অনিয়ম হয়েছে, আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেয়া হবে।