ভাড়াটে যোদ্ধা দল ওয়াগনার রুশ সেনাদের
বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ২৩ জুন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও ওয়াগনার নেতা
ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের ফলস্বরূপ বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল।
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রিগোজিন বিদ্রোহের
ঘোষণা দিয়েছিলেন। দক্ষিণের শহর রোস্তভের দিকে সৈন্য পাঠান। এর পরই মস্কোর দিকে এগিয়ে
যেতে থাকেন। তবে সেদিনের বিদ্রোহের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না ওয়াগনার সেনারা।
রাশিয়ায় বিদ্রোহে অংশ নেওয়া ওয়াগনার দলের
এক জুনিয়র কমান্ডারের সাক্ষাৎকারে এ তথ্য উঠে আসে। সাক্ষাৎকার নেওয়া এ জুনিয়র কমান্ডারের
নাম গ্লেব (ছদ্মনাম)।
আরও পড়ুন<< রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কিমের বৈঠক
গ্লেব জানান, বিদ্রোহ শুরুর সময়ে তিনি
রুশ-অধিকৃত লুহানস্ক অঞ্চলের ব্যারাকে তার ইউনিটের সঙ্গে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বলেন,
বিদ্রোহের দিন আসলে কি ঘটতে যাচ্ছে, ‘সে বিষয়ে কোনো
ধারণা ছিল না’ তিনি ও তার সহযোদ্ধাদের।
২৩ জুন ভোরে তারা ইউক্রেন ত্যাগকারী ওয়াগনার
যোদ্ধাদের একটি কলামে যোগদানের ডাক পান। আদেশটি একজন ওয়াগনার কমান্ডারের কাছ থেকে এসেছিল
বলে জানান তিনি। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণে গ্লেব তার নাম প্রকাশ করেননি।
তবে জানিয়েছেন, এই ওয়াগনার কমান্ডার প্রিগোজিন
ও ওয়াগনার কমান্ড কাউন্সিলের আদেশে কাজ করেছিলেন। সে সময় সেনাদের কলামটি আসলে কোথায়
যাচ্ছে তা কাউকে বলা হয়নি। তবে গ্লেব যখন বুঝতে পারেন এটি সম্মুখসারির যুদ্ধক্ষেত্র
থেকে সরে যাচ্ছে তখন তিনি অবাক হয়েছিলেন।
ওয়াগনার সৈন্যরা রাশিয়ার সীমান্ত অতিক্রম
করে রোস্তভ অঞ্চলে প্রবেশ করার সময় তারা কোনো প্রতিরোধের সম্মুখীন হননি বলে জানান গ্লেব।
বলেন, ‘আমি কোনো সীমান্তরক্ষীকে
দেখিনি। তবে পথে ট্রাফিক পুলিশ আমাদের স্যালুট দিয়েছিল।’
আরও পড়ুন<< তিউনিশিয়ায় ৯০১ অভিবাসন প্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার
যদিও ওয়াগনারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত
চ্যানেলগুলো টেলিগ্রামে জানিয়েছিল, বুগায়েভকা চেকপয়েন্টে ওয়াগনার সেনারা আসার সঙ্গে
সঙ্গে সীমান্তরক্ষীরা তাদের অস্ত্র রেখে দিয়েছিল।
রোস্তভ-অন-ডন অঞ্চলের কাছাকাছি যেতেই শহরের
সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভবন ঘেরাও ও সামরিক বিমানবন্দর দখল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল
ওয়াগনার সৈন্যদের। আর গ্লেবের ইউনিটকে বলা হয়েছিল ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি)
আঞ্চলিক অফিসের নিয়ন্ত্রণ নিতে।
গ্লেব জানায়, তারা ভবনটির কাছে গিয়ে দেখতে
পায় এটি পুরোপুরি তালাবদ্ধ। ভবনটি খালি বলে মনে হয়েছিল তাদের। ভেতরে কেউ আছে কিনা তা
পরীক্ষা করার জন্য একটি ড্রোনও ব্যবহার করেছিল তারা। অবশেষে আধঘণ্টা পর একটি দরজা খুলে
দু’জন লোক রাস্তায়
বেরিয়ে আসে। তারা বলেছিল, বন্ধুরা, চলুন আমার একটি চুক্তি করি’ উত্তরে গ্লেব
জানায়, এখানে চুক্তি করার কী আছে? এটা আমাদের শহর।’
আরও পড়ুন<< বিশ্বব্যাপী স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধের পরামর্শ জাতিসংঘের
রোস্তভ শহর ও তার আশপাশের অনেক সরকারি
ভবনের একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন সাংবাদিকরা। ওয়াগনার বাহিনী প্রথমে ড্রোন উড়িয়ে
ভবনগুলোকে ঘিরে ফেলে। সে সময় ভেতরে থাকা কাউকে কাউকে বাইরে আসতে দেওয়া হয়নি। শুধু খাবার
নিয়ে আসা ডেলিভার কুরিয়ারগুলোকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়েছিল।