নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে
লিফট ক্রয় এবং মেইনটেনেন্স-এ কোটি টাকা খরচ হলেও শিক্ষার্থীদের লিফট ভোগান্তি যেনো
কমছেই না। লিফটে আটকে পড়ার আতঙ্ক দিন দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবীর টুটুল হলের লিফটে আটকা পড়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে
লিফটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, 'লিফটে আমরা ৫ জন ২৫ মিনিট যাবত
আটকে ছিলাম। ইমার্জেন্সি বাটনে ক্লিক করছি কোন কাজ হচ্ছে না। লিফটে নেটওয়ার্ক পাওয়া
না যাওয়ায় কল দিতে পারছিলাম না। একটা লিফটে আটকা পরার পর কেনো ২৫ মিনিট লাগবে উদ্ধার
করতে।'
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন ও দুটি আবাসিক হলের জন্য ২০২১ সালে
১৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ টি লিফট ক্রয় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুরু থেকেই অনুষদ
ভবন দুটির চারটি লিফট অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। এর মধ্যে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অচল
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হলের একাধিক লিফট। আর বাকি যেগুলো সচল সেগুলোও প্রায়ই চলন্ত অবস্থায়
বিকল হয়ে পড়ছে। লিফটের ভেতর আটকা পড়ার ঘটনায় আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন
অনুষদ ভবনের লিফটে ৩৪ মিনিট ধরে আটকা ছিলেন ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী
তানভীর রানা। রানা বলেন, 'সকালে ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার জন্য লিফটে উঠি। কিন্তু ৮ তলায়
যাবার পর হঠাৎ লিফট বন্ধ হয়ে যায়। তখন ইমার্জেন্সি বাটনে বারবার ক্লিক করেও কোনো কাজ
হচ্ছিলো না। লিফটে এতো পরিমাণে গরম, শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো। পরে সহপাঠী ও বিভাগীয়
প্রধানের সহযোগিতায় লিফট থেকে বের হয়েছি।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী
প্রকৌশলী (ইন্সট্রুমেন্ট) মিজানুর রহমান বলেন, 'মাঝে মাঝে লিফট আটকানোর ঘটনা ঘটতে পারে,
অনেকদিন পর পর এটা সব জায়গাতেই ঘটে। আগেতো আরও বেশি ঘটতো। আগে সপ্তাহে এক দুটো ঘটনা
ঘটতো। তারপর আমরা লিফট প্রোভাইডারদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে এটা ধীরে ধীরে কমবে।
তখন থেকে ঘটনাগুলো কম ঘটছে। সম্প্রতি দুই তিনটা ঘটনা ঘটেছে। এটা মাঝে মাঝে ঘটতে পারে।'
এ ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে
তিনি বলেন, 'বড় বিল্ডিং হলেও লিফট অপারেটর থাকে একজন। তার কাছে খবর যদি দ্রুত পৌছাতো
তাহলে দ্রুত উদ্ধার করা যেতো। এক্ষেত্রে আমরা লিফটে ইন্টারকম ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা
করছি। বাজেট স্বল্পতার জন্য এটা করতে দেরি হচ্ছে। এটা হয়ে গেলে কেউ আটকা পড়লে দ্রুত
উদ্ধার করা সম্ভব হবে।'