আজঃ শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪
শিরোনাম

লঞ্চঘাটে প্রবাসীকে পিটিয়ে ডলার ও স্বর্ণালংকার ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৩ জুন ২০২৪ | পত্রিকায় প্রকাশিত
মামুন হোসাইন, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

Image

ভোলার চরফ্যাশনে বেতুয়া লঞ্চ ঘাটে এক প্রবাসীকে পিটিয়ে ২ হাজার ৬'শ ডলার ও ৩ ভরি স্বর্ণ লুট করার অভিযোগ উঠেছে ঘাটের কুলিদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় গত শনিবার (২২ জুন) রাতে প্রবাসী রাকির পাটোয়ারী বাদী হয়ে ৪ জন ঘাট কুলিদের আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলা করেন। ওইদিন রাতেই তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে গতকাল রবিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এর আগে, গত শনিবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, লঞ্চঘাট শ্রমিক- কামাল হোসেন, হাবিব উল্লাহ এবং রিপন বেপারী। ওমান প্রবাসী মো. রাকিব পাটওয়ারী উপজেলার চর মানিকা ইউনিয়নের দক্ষিণ আইচা গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ওমান প্রবাসী।

প্রবাসী মো. রাকিব পাটওয়ারী জানান, শুক্রবার সন্ধায় ঢাকা সদরঘাট থেকে বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চযোগে চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাটে ভোর ৫টায় নামিয়ে দিলে বেতুয়াঘাটের লেবার কামাল, হাবিবুল্লাহ, রিপনসহ ৬-৭জন একত্রিত হয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। এসময় তাদের দাবি করা মোটা অংকের টাকা কম দিতে চাইলে তার ওপর চড়াও হয়ে লেবার কামালের নেতৃত্বে মারপিট শুরু করেন। এসময় তারা প্রবাসীর সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার মালামাল ও মানিব্যাগে থাকা সাড়ে ২ হাজার ৬০০ ডলার লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা ভগ্নিপতি হাছান ও বোন ফাতেমা এগিয়ে আসলে তাদের ওপর হামলা চালায় তারা।

বেতুয়া ঘাটের অভিযুক্ত কুলি হাবিবুল্লাহ বলেন, ঘাটের রিপন তার কাছ থেকে মালামাল নামানের জন্যে ২ হাজার টাকা দাবি করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে। তার ডলার ও স্বর্ণালংকার লুটের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলার ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।


আরও খবর



বেড়েছে আলু-পেঁয়াজ ও ডিমের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ৩১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আবারও বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম। এছাড়াও দাম বেড়েছে কাঁচামরিচ, আদা রসুনসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের। তবে চাল, ডাল ও আটা-ময়দার দাম আগের মতোই রয়েছে। রাজধানীর মহাখালী, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমাগার গেটে আলুর দর বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচামরিচ ও সবজির দাম বাড়তি। গরমে মুরগি মারা যাওয়ায় বেড়েছে ডিমের দাম। আর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি বলে দর বেড়েছে।

গত বছরের মে মাসে বাড়তে শুরু করে আলুর দর। এরপর আমদানির আলু আসার পর পণ্যটির দর কিছুটা কমে। এবার মৌসুমেও আলুর দর তেমন কমেনি।

আলু ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান বলেন, হিমাগারের গেটে পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা দরে। এরপর পরিবহন খরচ ও ঘাটতি আছে। সব হিসাবনিকাশ করে ৫৫ টাকার কমে বেচলে লাভ থাকে না। খুচরায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে এক মাস ধরে কাঁচামরিচের বাজার চড়া। মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে। মাসখানেক আগেও প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। সেই হিসাবে এক মাসে দর বেড়েছে দ্বিগুণের মতো।

দাম বাড়ায় সপ্তাহখানেক আগে কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এক সপ্তাহে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৩০০ টন কাঁচামরিচ আমদানিও হয়। তবে বাজারে এখনও পণ্যটির দর কমেনি।

এদিকে ডিমের বাজারও চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। বাজারে বেশি বেচাকেনা হয় বাদামি রঙের ডিম। খুচরায় এ ধরনের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা দরে। হালি হিসাবে (৪টি) কিনতে গেলে গুনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এ ছাড়া সাদা রঙের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।

ডিমের দর বাড়ার জন্য করপোরেটদের দায়ী করছেন ছোট খামারিরা। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, বড় প্রতিষ্ঠান ও ঢাকার বড় পাইকাররা সিন্ডিকেট করে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করছে। এতে ছোট খামারিরা হুমকির মুখে পড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানির অনুমতি থাকলেও ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে কম। ফলে দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। এতে দরও বাড়ছে। এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।


আরও খবর



‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে স্মার্ট নাগরিক হতে হবে: চবি উপাচার্য

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৩ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি) উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে চবি ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ভার্চুয়াল ক্লাশরুমে প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি উপ-উপাচার্যবৃন্দ। চবি আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসি এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. কমল দে ও ড. তানজিনা শারমিন নিপুন। কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

চবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য আইকিউএসি আয়োজিত বিজ্ঞ রিসোর্স পার্সনদের মাধ্যমে প্রদত্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত কাজের মাধ্যমে শিখতে হবে এবং এ শেখার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল প্রয়োগ করে নিজেদের মেধা ও দক্ষতার সাক্ষর রেখে সেবার মানসিকতা নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রাপ্ত জ্ঞান পারস্পরিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অনুষঙ্গসমূহকে আয়ত্ত করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে সকলকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহবান জানান।


আরও খবর



বাংলাদেশে সব পণ্যই নকল হয়: ভোক্তার ডিজি

প্রকাশিত:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

বাংলাদেশে এমন কোনো পণ্য নেই যা নকল হয় না। কসমেটিক থেকে শুরু করে শিশু খাদ্য সবকিছু নকল হচ্ছে। এ বিষয়ে তথ্যগুলো আমাদের দেন আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

রোববার (২ জুন) সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

তিনি আরও বলেন, এ নকল পণ্যের তথ্য সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের মানুষের কাছে বার্তা যাচ্ছে বাংলাদেশে ভেজাল পণ্য তৈরি হয়। আমাদের সব অর্জন ম্লান হচ্ছে এই ভেজালের কারণে। তাই সবাই সতর্ক থাকবেন। এদের বিরুদ্ধে কোনো ছাড় নেই।

সভায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, ক্যাব কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জামিল চৌধুরী, সাংবাদিক, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা।

এর আগে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্টক হোল্ডারদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কথা শোনেন ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক। পরে তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাজার মনিটরিং করেন। এসময় সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল, ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক আল আমিন, নিরাপদ খাদ্য অফিসার শরীফ উদ্দিন, জেলা মার্কেটিং অফিসার অনুপা চক্রবর্তী ও জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ।


আরও খবর



সৌদিতে ২১ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু, কাল শুরু ফিরতি ফ্লাইট

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চলতি বছর হজ করতে গিয়ে গত দুদিনে সৌদি আরবে আরও তিন বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশি মোট ২১ জন হজযাত্রী মারা গেলেন। বুধবার (১৯ জুন) হজ পোর্টালে আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হজ শেষে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত ৩টা পর্যন্ত বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবে মোট ২১ বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। সর্বশেষ তোফাজ্জল হক (৭০) নামে একজন হজযাত্রী মারা গেছেন। এর মধ্যে পুরুষ হজযাত্রী ১৮ জন, নারী হজযাত্রী ৩ জন। মক্কায় ১৬ জন, মদিনায় ৪ জন ও জেদ্দায় একজন মারা গেছেন।

শনিবার (১৫ জুন) এবারের হজ অনুষ্ঠিত হয়। ১২ জিলহজ জামারায় পাথর নিক্ষেপ করার শেষ দিন, হাজিরা পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম এবং বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করার মধ্যদিয়ে শেষ করেন হজের আনুষ্ঠানিকতা। হাজিরা মঙ্গলবার সূর্যাস্তের আগেই মিনা ত্যাগ করে মক্কায় ফিরে এসেছেন বলে বুলেটিনে জানানো হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন।

৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে ২১৮টি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ১০৬টি, সৌদি এয়ারলাইনস পরিচালিত ফ্লাইট ৭৫টি ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস পরিচালিত ফ্লাইট ৩৭টি।

হজ শেষে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে এবং শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস অর্ধেক হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাকি অর্ধেক পরিবহন করবে সৌদি এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস।


আরও খবর



মাদক মামলায় পুলিশ সদস্যকে বাঁচাতে চার্জশিটে ‘জালিয়াতি’

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

ঠাকুরগাঁওয়ে ইয়াবা ও হেরোইনসহ গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনকে বাঁচাতে মামলার চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফরহাদ আকন্দের বিরুদ্ধে।

ওই মামলার এক আসামি এ বিষয়ে অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা যায়, মামলার বাদী ফরহাদ আকন্দ চার্জশিটের পাতায় অগ্রগামীর জন্য ওই দপ্তরের সহকারী পরিচালকের অনুপস্থিতিতে তার স্থলে নিজেই স্বাক্ষর করেছেন এবং স্বাক্ষরকৃত চার্জশিট আদালতে দাখিলও করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, এটি এক ধরনের জালিয়াতি। কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট ওই দপ্তরের সহকারী পরিচালকের অনুপস্থিতিতে মামলার বাদী স্বাক্ষর করতে পারেন না।

তবে ফরহাদ আকন্দ বলছেন, সফট কর্নার থেকেই পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনকে মাদক মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আদালতে সুপারিশ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০২ পিস ইয়াবা ও ৫ গ্রাম হেরোইনসহ আতিকুল ইসলাম আতিক ও পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফরহাদ আকন্দ ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক আজাহারুল ইসলাম।

মামলার এজাহারের মধ্যভাগে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃত দুজন আসামি দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা ট্যাবলেট ও হেরোইনের ব্যবসা করে আসছিল। পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ঠাকুরগাঁও জেলায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মরত।

এদিকে গত ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক সৌমিক রায় বদলি হয়ে যায়। এ সময় মামলার চার্জশিট তৈরি করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আর ওই চার্জশিটে সহকারী পরিচালকের অনুপস্থিতিতে তার সিল ব্যবহার করে মামলার বাদী ফরহাদ আকন্দ নিজেই চার্জশিট অগ্রগামীর জন্য স্বাক্ষর করেন এবং গত ২১ মে আদালতে তা দাখিল করা হয়।

স্বাক্ষরকৃত চার্জশিটে আতিকুল ইসলাম আতিককে অভিযুক্ত করা হয় এবং পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনকে অব্যাহতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার কারণেই মাদক মামলা থেকে বাঁচাতে তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এটা বোঝা যায়। এখানে কৌশলের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, এটা গুরুতর অপরাধ।

ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক সহকারী পরিচালক সৌমিক রায় বলেন, ২৫ এপ্রিল আমি বদলি হয়ে যায় এবং ২৭ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে শেষ কর্মদিবস ছিল। মামলার চার্জশিট থেকে আসামিকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

ফরহাদ আকন্দ বলেন, সফট কর্নার থেকে চার্জশিটে পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আদালতে সুপারিশ করা হয়েছে। চার্জশিট দেওয়ার সময় এখানে সহকারী পরিচালক ছিলেন না। তাই নিজেই চার্জশিট অগ্রগামীর জন্য সহকারী পরিচালকের পক্ষে স্বাক্ষর করে আদালতে জমা দিয়েছি এবং বিষয়টি রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তা অবগত রয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও জজকোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোজাফ্ফর আহমেদ মানিক বলেন, দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক বদলি হয়েছেন। এই সুযোগে জালিয়াতি করে ওই কর্মকর্তার সিল ব্যবহার ও স্বাক্ষর করে চার্জশিট অগ্রগামী করেন মামলার বাদী। কোনোভাবেই এটি তিনি করতে পারেন না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট দপ্তর অথবা আদালত নিতে পারবেন।

বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দীন বলেন, আমার কর্মস্থল নীলফামারী জেলায়। কিন্তু ঠাকুরগাঁও জেলায় সহকারী পরিচালকের পদটি শূন্য। ফলে গত ২৮ মে অতিরিক্ত হিসেবে আমাকে ঠাকুরগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মাদক মামলা থেকে আসামিকে উপযুক্ত ডকুমেন্টস ছাড়া বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। সেই সঙ্গে সহকারী পরিচালকের সিল ব্যবহার ও স্বাক্ষর করার বিষয়টি নজরে এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক আলী আসলাম হোসেন বলেন, চার্জশিটের বিষয়টি জানতে চেয়েছি, আসুক তারপর দেখব। আর সব মামলায় যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতামত লাগবে এমনটি নয়। তবে কোনো মামলা যদি গুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জানা উচিত কীভাবে কী হলো। চার্জশিট দাখিলে অনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর