রাসেলস ভাইপারের নামে মেরে ফেলা সাপের ৯০ ভাগই অন্য প্রজাতির ও বিষহীন বলে দাবি করেছে বন বিভাগ। তারা বলছে, মানুষের সচেতনতার অভাব আর ভুল তথ্যের কারণে সব সাপের জীবনই এখন হুমকির মুখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় ২৪ বছর আগে অতি বিপন্ন হওয়া একটি সাপের বিস্তার এতো দ্রুত হওয়ার সুযোগ নেই।
প্রতি বছরে বিষধর সাপের কামড়ে বাংলাদেশে মারা যায় প্রায় সাত হাজার মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে- গেলো ১১ বছরে দেশে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা গেছে ৬৯ জন। শতাংশের বিচারে দেশে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার ১ শতাংশ রাসেলস ভাইপারের দংশনে। ৯৫ শতাংশ মৃত্যুর কারণ শঙ্খিনী গোখরার ছোবল। লোকালয়ে শঙ্খিনী ও গোখরার আনাগোনা প্রতিনিয়ত। কিন্তু রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে এখন বিপন্ন সব শ্রেণীর সাপ।
বন বিভাগ বলছে, দেশে প্রায় ২০ প্রজাতির বিষধর সাপের মধ্যে রাসেলস ভাইপার একটি এবং এটি সংখ্যায় কম। সম্প্রতি সাপটির বিস্তার কিছুটা বাড়লেও আতঙ্কিত হবার মতো নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাপটি নিয়ে অতিরঞ্জিত ও ভুল প্রচার হচ্ছে। এতে অন্য প্রজাতির সাপই বেশি মেরে ফেলা হচ্ছে। এটি অপরাধ, বলছে বনবিভাগ।
আইইউসিএন এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ বি এম সারোয়ার আলম দীপু বলেন, যেকোনো সাপের কামড়েই, সেটাতে বিষ আছে কি নাই, এমনকি পোকামাকড় কামড় দিলেই আমাদের ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। ফেসবুক বা বিভিন্ন মিডিয়ায় রাসেলস ভাইপার সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করছে বিভিন্নভাবে। কেউ অতি উৎসাহী হয়ে যাচ্ছে, কেউ অতি সচেতন হয়ে যাচ্ছে, অথবা আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান না থাকার কারণে আমরা যেকোনো সাপকেই মেরে ফেলছি।
আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন, বাংলাদেশ ২০০০ সালে রাসেলস ভাইপার সাপকে অতি বিপন্ন হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু ২০১৫ সালে রাজশাহীর ছয়টি জেলায় রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি পাওয়ায় সাপটিকে প্রায় বিপন্ন বলে চিহ্নিত করা হয়।
বন্যার পানিতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রাসেলস ভাইপার দেশে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে সাপটির বিপুল বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।