প্রতিবেশী এক
বখাটের উত্ত্যক্তের শিকার হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী (১২)। পরিবারকে এই অভিযোগ দেওয়ায়
সেই বখাটে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধষর্ণ করে। এ ঘটনায় মামলা করলে বখাটেকে গ্রেপ্তার করে
পুলিশ। এরপর অভিযুক্তের পরিবার থেকে হুমকি ধামকি আসতে থাকে। তাকে ও তাঁর বোনকে সামাজিক
ভাবে হেনস্থা করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বিষপানে আত্মহত্যা করে সেই কিশোরী।
রংপুরের মিঠাপুকুর
উপজেলার পূর্ব জয়রামপুরে ঘটেছে এমন ঘটনা। কিশোরীর বোন অভিযোগ করে বলেন, বখাটের স্বজনদের
হুমকি ও সমাজের মানুষের কটূক্তি সহ্য করতে না পেরে তাঁর ছোট বোন আত্মহত্যা করেছে। মৃত্যুর
আগ মুহূর্তে ‘ওরা আমাকে বাঁচতে দিল না’ বলে কেঁদেছে সে।
গত শনিবার ওই
কিশোরী তার বড় বোনের বাড়িতে বিষপান করে। পরদিন রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার ২৭ দিন আগে গত ১ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার
হয় কিশোরী।
ভুক্তভোগীর বড়
বোন বলেন, বিষপান করার তিন-চার দিন আগে অপরিচিত চার জন যুবক বাড়িতে এসে তাকে হুমকি
দিয়ে যায়। তারা কিশোরীকে বলেছিল, ‘আমাদের ছেলে জেলে
আছে, তোকেও ভালো থাকতে দিব না’। এই কথা কিশোরী
তাঁকে বলেছে বলে জানান বড় বোন। এছাড়া যুবকেরা যাওয়ার সময় গ্রামের লোকজনকে বলে যায়,
এরা খারাপ চরিত্রের মেয়ে।
ভুক্তভোগীর পরিবার
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব জয়রামপুর আনোয়ার গ্রামের মতিয়ার রহমানের বখাটে ছেলে
লাবলু মিয়া (২০) প্রতিবেশী এক ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি লাবলুর
পরিবারকে জানালে সে ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে। গত ১ সেপ্টেম্বর অস্ত্রের মুখে ছাত্রীকে একটি
বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মামলা হলে থানা পুলিশ লাবলুকে গ্রেপ্তার করে।
বর্তমানে সে রংপুর কারাগারে রয়েছে।
এ ঘটনার পর লাবলুর
পরিবার ও প্রতিবেশীদের অনেকেই কিশোরীকে দেখলে কটূক্তি করতো। এলাকায় গঞ্জনা সহ্য করতে
না পেরে কয়েকদিন আগে বড় বোনের বাড়ি যায় সে। কিন্তু সেখানেও কথা শুনতে হয়। এ পরিস্থিতিতে
বিষপান করে কিশোরী।
মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ছাত্রীর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।