চরম অর্থসংকটে পড়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাম্বানটোটা
গভীর সমুদ্রবন্দর চীনের হাতে তুলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। একই পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে পাকিস্তানও।
করাচি বন্দরের সব টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করার কথা বিবেচনা
করছে দেশটি। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে জিইয়ে রাখতে জরুরি তহবিল সংগ্রহে গত বছর প্রণীত আইনের
অধীনে প্রথম কোনো সম্পদ হস্তান্তরের ঘটনা হতে যাচ্ছে এটি।
নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি আন্তসরকার চুক্তি-সংক্রান্ত একটি মন্ত্রিসভা কমিটির একাধিক
বৈঠকের পর হস্তান্তর নিয়ে আলোচনার জন্য একটি এজেন্সি তৈরির ঘোষণা দিয়েছে।
তবে পাকিস্তান করাচি বন্দরের পরিচালনা
স্বত্ব হস্তান্তর নাকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে বন্দর বিক্রি করতে চাইছে—সেটি এখনো স্পষ্ট
নয়।
ওমান উপসাগরের ঠিক পূর্বে উত্তর আরব সাগরে
অবস্থিত করাচি বন্দরটি পাকিস্তানের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। এটির মাধ্যমে দেশের প্রায়
৬০ শতাংশ পণ্য পরিবহন করা হয়। এই সম্ভাব্য চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত অবশ্য
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চাচ্ছে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে পুলিশের অভিযানে ১৯ বাংলাদেশি আটক
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে ওমান
উপসাগর হয়ে করাচি পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের সময় বেশ কমবে। গত মে মাসে আমিরাতি বন্দরের
এক নির্বাহী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আরবের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হরমুজ প্রণালি দিয়ে
করাচিতে একটি চালান যেতে যত সময় লাগে, এই পথে তার চেয়ে অনেক কম সময় লাগবে।
নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি এবং ভয়াবহ বন্যার
কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সম্ভাব্য খেলাপির সম্মুখীন পাকিস্তান
সরকার সম্প্রতি চীন থেকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে। এটি পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের প্রায়
৩০ শতাংশ। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: মোদির সামনে ভারতের সংকটের কথা তুললেন বাইডেন
এদিকে পাকিস্তান প্রথমবারের মতো রাশিয়ার
সস্তা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানের
পরিস্থিতিকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা
সরকার হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে ইজারা দিতে বাধ্য হয়েছে।
গত বছর ঋণখেলাপি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভের পর সরকার পুনর্গঠন এবং
আইএমএফের ঋণ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশটি।