ঢাকাসহ সারা দেশেই শিশুরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত
হচ্ছে। তবে দেশের অন্য সব এলাকার চেয়ে ঢাকা শহরে শিশু ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি
দেখা যাচ্ছে। তবে এর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা
থেকে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত সারা দেশে নতুন করে আরও ১ হাজার ৫৬৫ জন ডেঙ্গু নিয়ে
হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে এই বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগী ৯৫ হাজার
৮৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
কন্ট্রোল রুম ঢাকা শহরের এবং বাইরের রোগীর
তথ্য পৃথকভাবে দেয়। তাতে রোগীদের বয়সভিত্তিক বিভাজনও থাকে। সেখানে দেখা যায়, ঢাকা শহরের
হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৯৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫
বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ১১ হাজার ৮৬১। অর্থাৎ ঢাকা শহরে মোট রোগীর ২৫ শতাংশই শিশু।
আরও পড়ুন>> এক কোটি কিশোরী পাবে জরায়ু ক্যান্সারের টিকা
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঢাকা শহর বাদে
সারা দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৪ জন। এর মধ্যে ১৫ বছরের
কম বয়সী শিশু ৭ হাজার ৫ জন। সে হিসাবে এই বয়সী শিশু ডেঙ্গু রোগী সেখানকার মোট রোগীর
১৫ শতাংশ।
পার্থক্যটা স্পষ্ট। ঢাকা শহরে ১৫ বছরের
কম বয়সী শিশুদের আক্রান্তের হার ঢাকা শহরের বাইরে আক্রান্ত শিশুদের হারের চেয়ে ১০ শতাংশ
বেশি। কিন্তু কেন এই হার ঢাকা শহরে বেশি?
একাধিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ববিদ
বলছেন, এটা জানতে রোগতাত্ত্বিক গবেষণার প্রয়োজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা
বলেন, এর পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, পরিসংখ্যান বলছে সারা দেশের তুলনায় ঢাকা
মহানগরের জনসংখ্যায় শিশুদের হার বেশি, সে কারণে আক্রান্তের ঝুঁকি শিশুদের বেশি। দ্বিতীয়ত,
ঢাকা শহরের বাইরের বয়স্ক রোগীদের অনেকেরই ভ্রমণ ইতিহাস আছে, তাঁরা ঢাকা থেকে আক্রান্ত
হয়ে যেতে পারেন। সেই ইতিহাস শিশুদের ক্ষেত্রে কম। ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া রোগীদের
সংখ্যা বাদ দেওয়া সম্ভব হলে দেখা যাবে বয়স্ক রোগীদের অনুপাত কম এবং শিশুদের অনুপাত
বেশি।
এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ
ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ঢাকা
শহরের শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করার সুযোগ বেশি। এ ছাড়া আক্রান্ত শিশুদের ঢাকার হাসপাতালগুলোতে
পাঠানোর (রেফার্ড) প্রবণতাও বেশি। তবে এসবই ধারণা, সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট
নয়।
শুক্রবার পর্যন্ত চলতি বছর ডেঙ্গুতে ৪৫৩
জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৯ জনের বয়স ১৫ বছরের নিচে।