আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

শাকিব খান জানালেন নিজের ‘জীবন দর্শন’

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রে নয় মাস কাটানোর পর দেশে ফিরছেন শাকিব খান। এই লম্বা সময়ে তার কিছু উপলব্ধি হয়েছে, যা তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এ নায়ক। মূলত দেশটির স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এতদিন সেখানে অবস্থান করছিলেন।

সামাজিক মাধ্যমে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, জীবন যখনই আমাকে কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে, অথবা নিজেই যখন নিজেকে দিয়েছি ভেঙে গড়ার চ্যালেঞ্জ উপরওয়ালার রহমতে এবং আমার লাখো - কোটি ভক্তের ভালোবাসায় সবসময় আমি জয়ী হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রে বিগত নয়টা মাসও আমার জীবনে ছিল একটি চ্যালেঞ্জের মতোই এবং আবারও আমি আপনাদের ভালোবাসায় তা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। তবে এই নয়টা মাস ছিল অনেকটা অদৃশ্য শেকলে বাঁধা পড়ে থাকা জীবনের মতো। খেয়াল করেছি, মহান ব্যক্তিরা যখন বড় কিছু করেন, তার আগে এমন বিচ্ছিন্ন থাকেন! তারা যখনই নতুন উপলব্ধি নিয়ে আবার শুরু করেন তখনই তাদের সকাল!

আরো বলেন, দূরদেশে এই সময়ে অনেককে পেয়েছি, যারা আমাকে তাদের পরিবারের মানুষ ভেবে আপন করে নিয়েছে, সাপোর্ট দিয়েছে মানসিকভাবে। অন্যদিকে এও বুঝেছি, যাদের এতদিন আপন মনে করতাম তারা কেউ কেউ সত্যিকার অর্থে আমার আপন ছিল না। এর মাঝেও আমার এগিয়ে চলার এই জীবনে অন্ধের মতো সবচেয়ে বড় সাপোর্ট ছিল, দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা লাখো-কোটি ভক্ত-অনুসারীযারা সবসময় আমার পাশে থেকেছে, নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছে। কেন জানি মনে হয় নিজের জীবন-দর্শন, বাস্তবতা ও সবকিছুকে নতুন করে চেনা-জানা এবং বোঝার জন্য আমার এই পরিবর্তন ভীষণ প্রয়োজন ছিল। এ সময়ে খুব কাছ থেকে নিজের জীবনের সবকিছু নতুন করে কল্পনায় এঁকেছি, যেমনটা সিনেমায় করে থাকি। এ সময়টা আমায় পৃথিবী ও নিজের সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করেছে।

সর্বশেষ ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া গলুই ছবিতে শাকিব খানকে দেখা গেছে। মাস কয়েক আগে রাজকুমার নামের একটি ছবির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি, যার শুটিং হবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে। এ ছাড়া সরকারি অনুদানে ও তার প্রযোজনায় নির্মিত হবে মায়া

নিউজ ট্যাগ: শাকিব খান

আরও খবর



দেশব্যাপী টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা, মে মাসে মিলতে পারে স্বস্তি

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশব্যাপী টানা ২৯ দিন ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। চলমান এ তাপপ্রবাহ আরও দুইদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বলেন, গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের তাপপ্রবাহ। ১৯৯২ সালেও মাস জুড়ে টানা তাপপ্রবাহ হয়েছিল। তবে তার বিস্তৃতি এবারের মতো ছিল না। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ দেশব্যাপী টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ ঢাকা বিভাগে এই বৃষ্টির প্রকোপ বেশি থাকবে।

সোমবারের আবাওহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, যশোর ও রাজশাহী জেলা সমূহের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, পাবনা ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এ সময় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।


আরও খবর



লক্ষীপুরের ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

Image

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখাঁ, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ফলাফল ঘোষণা করে স্ব-স্ব রিটার্নিং অফিসার।

দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬২৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল উদ্দিন চৌধুরী চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২৬৯৮ ভোট।

দালাল বাজার ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন নজরুল ইসলাম। চশমা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৩৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর নবী চৌধুরী অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭৬০ ভোট।

বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নে মিজানুর রহমান চশমা প্রতীকে ৬৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ জামাল রিপন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩৯০ ভোট।

লাহারকান্দি ইউনিয়নে টেলিফোন প্রতীকে আশরাফুল আলম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খোরশেদ আলম শাহীন অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭৭৩ ভোট।

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ওমর হুসাইন ভুলু আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বোরহান চৌধুরী পেয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকে ৬২৩৯ ভোট।

দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার এবং তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক ও বাঙ্গাখাঁ এবং লাহারকান্দি ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম চৌধুরী ফলাফলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর



আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড বাংলাদেশের

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিদ্যুৎ উৎপাদনের আবারও রেকর্ড ছাড়ালো বাংলাদেশ। দেশের ইতিহাসে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বলা হয়, রাত ৯টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়ছে। এ সময় ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল। তার আগের দিন রাতে পিক আওয়ারে রেকর্ড ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল।

বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট। উৎপাদন করা হচ্ছে ১৩ হাজার থেকে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত। চাহিদা আছে সাড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াট।


আরও খবর



ঠাকুরগাঁওয়ে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ে গেছে ৬০ একর ধানখেত

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

উচ্চ তাপপ্রবাহে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বোরো ধান আবাদে কৃষক যখন নাজেহাল। ঠিক তখনই ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার অর্ধশত কৃষকের ৬০ একর জমির ধান পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষতি পূরণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রমিজ আলমসহ কৃষি কর্মকর্তারা ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পুড়ে যাওয়া ধান পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, জেলার পীরগঞ্জ পৌর শহরের গুয়াগাঁও গ্রামের ফসলি জমির আশেপাশের ঢাকাইয়া শাহজাহান, বেলাল ও আকবর আলী নামে তিন ব্যক্তি তিনটি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। তাদের ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া আর তীব্র গরম বাতাসে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ফসল ও বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গত কয়েক দিনে ইটভাটার ধোঁয়া আর গরম বাতাসে প্রায় ৬০ একর বোরো ধানখেত পুড়ে গেছে। পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ইটভাটা মালিককে ক্ষতি পূরণ দিতে অনুরোধ জানালেও তাদের কথায় কোন কর্ণপাত করেন নি। উপায় না পেয়ে ক্ষতিপূরণ চেয়ে বুধবার (৮ মে) উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

কৃষকরা জানান, তীব্র দাপদাহের মধ্যে ঋণ মহাজন করে অতিরিক্ত খরচে ধান আবাদ করেছি। এখন ধানের শীষ বের হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঠিক এই সময়ে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া আর গরম বাতাসে তাদের ধানের পাতা পুড়ে হলুদ হয়ে গেছে। আর যেসব ধানের শীষ বের হয়েছে তার সবটাই আঠালো হয়ে গেছে। শীষে কোনো ধান নেই। এ অবস্থায় চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

এদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কৃষি বিভাগ মাঠ পরিদর্শন করে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন জানান কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন রায়।

এ বিষয়ে ইট ভাটা মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ফসলি জমির ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষি অর্থনীতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক। তাই এসব ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষক।

আর কৃষকের ক্ষতি পূরণ প্রদানে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রমিজ আলম।


আরও খবর



মূল্যবান খনিজ জমিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ডংগিংয়ে গতবছর নতুন জ্বালানি তেলের একটি ডিপো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে চীন। আর চলতি বছরের শুরু থেকেই সেখানে নজরে আসছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ব্যস্ততা। কৌশলগত জ্বালানি মজুত হিসেবে অভিহিত ডংগিংয়ের এ বিশাল তেলের ডিপোর ধারণ ক্ষমতা ৩ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল। মূলত রাশিয়া থেকে ভর্তি হয়ে আসা ট্যাংকারগুলোই এখানে খালাস করছে তাদের তেল। দ্রুত খালাস করেই নতুন চালান ভরতে চীনা ট্যাংকারগুলো ফের ছুটছে রাশিয়ার বন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে।

যেভাবে তেলের মজুত বাড়াচ্ছে চীন

দিন দিন রাশিয়া থেকে চীনের এ জ্বালানি আমদানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে ২১ লাখ ব্যারেল তেল মস্কো থেকে আমদানি করছে বেইজিং। টানা দুবছর ধরে বেইজিংয়ের জ্বালানি সরবরাহের প্রধান উৎস মস্কো। এতো বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত জ্বালানি তেলের মজুত বর্তমানে উঠানামা করছে ২৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ব্যারেলের মধ্যে।

যেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জ্বালানি মজুতের পরিমাণ ৩৬ কোটি ব্যারেলের আশপাশে। শান্তিপূর্ণ সময়ে চীনের দৈনিক জ্বালানি চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময়ের তেলের মজুত নিজের হাতে ধরে রেখেছে চীন।

চীনের তেলের মজুত গড়ে তোলার এ পরিসংখ্যানই পশ্চিমা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক মহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য যথেষ্ট। তাদের ধারণা, সামনে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা আঁটছেন চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর অংশ হিসেবেই দ্রুত ডংগিংয়ের মতো এসব ডিপোকে তেলে ভর্তি করছে বেইজিং।

অন্যান্য খনিজের মজুতও বাড়াচ্ছে চীন

শুধু জ্বালানি তেলই নয়, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কৌশলগত প্রায় সব শিল্প কাঁচামালের মজুত গড়ে তুলছে বেইজিং। পশ্চিমা মহলের ধারণা, ভবিষ্যতে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কিংবা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকেই এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বেইজিংকে সুযোগ করে দিচ্ছে ডিসকাউন্ট দরে মস্কো থেকে তেলসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ব্যাপারে। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি অনেক সস্তায় মস্কো থেকে নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ কিনতে সক্ষম হচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলো। আর চীনের এ মূল্যবান ধাতু কিনে মজুত করার প্রবণতার গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়ার নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার ওপর আরোপ করা সর্বশেষ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের এক-তৃতীয়াংশই চীনের কব্জায়

এসব ধাতুর পাশাপাশি বেইজিংয়ের নজরে রয়েছে বর্তমান যুগের অন্যতম মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে পরিচিত লিথিয়ামের ওপরও। ব্যাটারি শিল্পের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে চীন মজুত বাড়িয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন দেশে থাকা লিথিয়ামের খনি থেকে শুরু করে পরিশোধনাগার পর্যন্ত কিনে ফেলতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গত মার্চে জানায়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বের সব লিথিয়াম সরবরাহের তিন ভাগের একভাগই চলে যাবে চীনের কব্জায়।

অবশ্য চীন অনেক আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ধাতু ও বিরল মৃত্তিকার মতো খনিজ পদার্থের মজুত গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে মার্কিন খনি বিষয়ক দফতর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের হাতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, কপার, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, ইরিডিয়াম, ট্যানট্যালাম, টিন, টাংগেস্টন, জিংক ও জিরকোনিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা পদার্থের মজুত রয়েছে। এরপরের বছরগুলোতে চীন এসব খনিজ মজুত করার তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।

চীন স্বর্ণের মজুদও বাড়াচ্ছে, টান পড়ছে সারা বিশ্বে

শুধু এসব খনিজ পদার্থই নয়, বরং স্বর্ণের মজুতও দিন দিন বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। আর এ স্বর্ণ শুধু সরকারই কিনছে না, বরং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বেড়ে গেছে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা। মূলত চীনাদের এ স্বর্ণ কেনার প্রবণতাই বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দামকে রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ডলারে।

মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনেই চীনের এ স্বর্ণ কেনার উদ্দেশ্য বলে কেউ কেউ মনে করছে। তবে এর পেছনে দেশটির জনগণের একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা আঁচ করতে পেরেই চীনের এলিট সমাজ তাদের সম্পদ দেশের বাইরে জমা করার বদলে দেশেই নিজের হাতের নাগালে রাখতে চাইছেন। আর স্বর্ণ কিনে জমা রাখার মাধ্যমেই তা সবচেয়ে ভালোভাবে সম্ভব। অর্থাৎ চীন যে তাইওয়ানকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে, সে বিশ্বাস দানা বাঁধছে চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

টার্গেট তাইওয়ান, ডেডলাইন ২০২৭

জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুত চীন যেভাবে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে নিচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের সামরিক বাহিনীকেও ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করছে বেইজিং। এমন এক সময়ে এই সামরিকীকরণ চলছে যখন তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বেরও উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আর চীনের এসব প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন সামরিক মহল। মার্কিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন শি জিনপিং তাইওয়ান দখলে তার সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আর এজন্যই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত নৌবাহিনীর সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুলিনো বলেন, অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চীন সচেতনভাবে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। যা কিনা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ক ব্লগিং সাইট ওয়ার অন দ্য রকস’-এ নিজের এক লেখায় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক স্টুডম্যান বলেন, শি জিনপিং (চীনা প্রেসিডেন্ট) তার দেশকে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য এক বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য শি জিনপিং চীনা সমাজকে সামরিকীকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বর্মে মুড়িয়ে ফেলছেন।’

এর অংশ হিসেবেই চীনা কর্তৃপক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামালের একটি কৌশলগত মজুত গড়ে তুলছে বলে মনে করেন মার্কিন এ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই বেইজিং এই মজুত গড়ে তুলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাইক স্টুডম্যান আরও বলেন, ২০২২ সালে চীনের শীর্ষে নেতৃত্বের যে রদবদল, সেখানেও শি জিনপিংয়ের এ যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে। বেছে বেছেই তাইওয়ান সম্পর্কে অভিজ্ঞদের নিজের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে চীনের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনকেই মনে করা হয় তাইওয়ান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

এমনকি তাদের মধ্যে সামিল রয়েছেন এমন একজন সামরিক কর্মকর্তা, পলিটব্যুরোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে তার আগের ধাপ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না তিনি। তাইওয়ান বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতাই পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দেয় তাকে। এ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সাবেক কমান্ডার। আর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোন সামরিক অভিযানের সার্বিক দায়িত্ব প্রথমে এই ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের ওপরেই বর্তাবে।

যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা বিশ্ব

তবে চীন যখন দ্রুত তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে, তখনও চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা মহল। জ্বালানি ও কাঁচামালের আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বেইজিংকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে এখনও দৃশ্যমান কোন শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো চিপ থেকে চীনকে বঞ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। বরং চলতি মাসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চীন সফরের মধ্যদিয়ে এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে যে, ইউরোপীয়রা চীনের সঙ্গে বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী।


আরও খবর