বগুড়া ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রতিদিন ধারণ ক্ষমতার তিনগুন রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাবে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর চাপ।
জানা যায় হাসপাতালে ৫০০টি সিট বরাদ্দ থাকলে ও প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে গড়ে ১৫০০-১৬০০ জন। এছাড়া প্রতিটি রোগীর সাথে কমপক্ষে ২-৩ অ্যাটেন্ডেন্ট ত আছেই। অপরদিকে ১২০০জন রোগীর খাবার অনুমোদন থাকলেও দিতে হয় ১৫০০-১৬০০ জন রোগীকে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ২০০০-২৫০০ জন রোগী আউটডোরে সেবা গ্রহণ করেন এবং গড়ে ৫০-৭০টি সার্জারি করা হয়। ফলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালটি ১০তালার ফাউন্ডেশনে ৬-৭ তালা সম্পূন্ন হয়েছে। আবাসনসহ নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে চলছে রোগীদের সেবা। তাই এই বিপুল সংখ্যক রোগীর আবাসন সংকট সমাধান করতে বাকি তালা দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা অতীব জরুরী। সেই সাথে জনবলসহ হাসপাতালটি ১৫০০ শয্যায় উন্নিত করার দাবি জানায় সেবা গ্রহিতারা।
দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা মারাত্নক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। বাড়তি রোগীদেরকে সেবা দিতে চাপ পড়েছে চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারির উপর। বগুড়া জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলার লক্ষাধিক মানুষ চব্বিশ ঘন্টা নির্ভর করে এ হাসপাতালের উপর।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, ২৩০টি চিকিৎসকের মধ্যে ৩৫টি পদ খালি এবং ৫২৩টি পদের বিপরীতে ৫২১ জন নার্স কর্মরত আছেন। এছাড়া ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীর ১৭২টি পদের ১১৫ জন কর্মরত আছেন, যেখানে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ৪১৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২৯৩ জন। বিভিন্ন পদে দীর্ঘদিন ধরে পদ শূন্য থাকায় রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ডাক্তাররা রোগীদের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন তবে তারা প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোর উভয় জায়গায় বিপুল সংখ্যক রোগীদের সেবা দিতে হাঁপিয়ে উঠেছেন।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার রোগী শাওন বলেন, হাসপাতালে জায়গার সংকটে আউটডোরের রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয়। সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে রোগীদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
খুলনা জেলার নভারণ উপজেলার রোগী রাইহান জানান, আমার এক আত্নীয় কাছে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কথা শুনে আমি এখানে ভর্তি হয়েছি। বেড সংকটে প্রথমে আমাকে কিছুদিন বারান্দায় থাকতে হয়েছে তবে পরে আবার বেড পেয়েছি।
এলাকার সুধীজনরা বলেন, হাসপাতালটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সময়ে রোগী ভর্তি ছিল প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ জন। কিন্তু বর্তমানে ২০২৩ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০০-১৬০০ জন ভর্তি থাকে তাই বেড় সংখ্যা বৃদ্ধি করা সময়ের দাবি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, রোগীদের নির্বিঘ্নে সেবা নিশ্চিত করতে তিনি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তার ও অন্যান্য পদের কর্মচারীর পদায়নে চিঠি পাঠিয়েছেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জুলফিকার আলম বলেন, আধুনিক উন্নত সকল প্রকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।