
বর্ষায় অতি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কৃষি মাঠও প্লাবিত হয়। বন্যায় রোপা আমন এবং বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ভালো ফলনের মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশাবাদী কৃষকরা।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে সাতকানিয়ার ১১ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। বন্যার কারণে রোপা আমন এবং বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কৃষকদের উৎসাহিত করে নতুনভাবে বীজতলা তৈরি করা হয় এবং পানি নেমে যাওয়ার পর পুরোদমে কাজ করে ইতোমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ চাষাবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার কেঁওচিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিলের বিস্তৃর্ণ কৃষি মাঠ সবুজ আকার ধারণ করেছে। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। অথচ মাসখানেক আগেও এই কৃষি মাঠঘিরে শঙ্কা ছিলো, কৃষকদের মাঝে ছিলো কষ্টের আবাদ নষ্ট হওয়ার হাহাকার। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে শতভাগ চাষাবাদ সম্পন্ন হওয়ায় এখন কৃষকরা ভাল ফলনে আশার আলো দেখছেন।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা সংগ্রহ করে কৃষকরা নতুন করে আমন ধান লাগিয়েছেন। আবার অনেক কৃষক যখন বন্যায় আক্রান্ত হয় তখন নতুন করে বীজতলা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে নতুন জমিতে এবং নষ্ট হওয়া জমিতে ওই চারা দিয়ে আমন আবাদ করেছেন। এক্ষেত্রে সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন এবং কৃষকদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
কেঁওচিয়া এলাকার কৃষক আব্দুল মন্নান বলেন, এবার আমি ২ কানি জমিতে আমন আবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করেছিলাম। বন্যায় পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঋণ নিয়ে আবারও চারা লাগিয়েছি। যদি সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেতাম আমাদের জন্য অনেক উপকার হত।
কবির আহমদ নামে অন্য একজন কৃষক বলেন, টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ভেসে যায় কৃষকের স্বপ্ন। বন্যার পানি নামার পর আবারও চাষাবাদ করা হয়। এখন ভাল ফলন হলে কৃষকরা অন্তত তার ক্ষতি পোষাতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কাজ শুরু করে কৃষি বিভাগ। অল্প সময়ে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করছি কৃষকরা ভাল ফলন পাবে এবং তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।