শরীয়তপুরের আবহাওয়ায় পেঁয়াজ একটি উচ্চ
ফলনশীল ফসল। তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, গত বছরের তুলনায় এই বছর পেঁয়াজের ফলন কম হওয়ায়
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। বৃহস্পতিবার
(২২ ফেব্রুয়ারি) শরীয়তপুরের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে এমন চিত্রই মিলেছে।
দেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও ডলার সংকটের
কারণে এবছর বিদেশ থেকে তুলনামূলক কম পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর প্রভাব পরেছে স্থানীয়
বাজারগুলোতেও। এদিকে পেঁয়াজের বীজ ও সারের দাম বাড়ায় তার প্রভাব পরেছে পেঁয়াজের
পাইকারি ও খুচরা বাজারে।
গত বছর যেখানে এক কেজি ডিএপি সার বিক্রি
হতো ১৬ টাকায় সেখানে এই বছর পেঁয়াজ লাগানোর
মৌসুমে তা বিক্রি হয়েছে ২১ টাকায়, ইউরিয়া বিক্রি
হতো ২২ টাকায় তবে এবছর বিক্রি হয়েছে ২৭ টাকায় এবং এমওপি গত বছর প্রতি কেজি ছিলো ১৫
টাকা যা বেড়ে এবছর বিক্রি হয়েছে ২০ টাকায়। এছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও শ্রমিক
খরচও বেড়েছে গত বছরের তুলনায়।
পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা নিয়ে কৃষক আব্দুল
রাজ্জাক বলেন, তিনি ২০ বিঘা জমিতে এইবছর পেঁয়াজ চাষ করেছে। তিনি এবছর প্রতিবিঘায় ৪০-৪৫
মণ পেঁয়াজ পেয়েছে। তার দাবি এবছর পেঁয়াজ লাগানোর মৌসুমে বৃষ্টির সমস্যা না দেখা দিলে
৬০-৭০ মন পেঁয়াজ পেতেন প্রতি বিঘায়। এবছর পেঁয়াজের উচ্চমূল্য পেয়েছেন তিনি। ১০৫-১১৩ টাকা
পর্যন্ত পাইকারী বিক্রি করেছেন।
কথা হয়েছে নুরুহক সরদার নামক এক পেঁয়াজ
ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি জানায় এলসি আসার খবরে পেঁয়াজের বাজার মুহুর্তে কমছে আবার কখনও
ভিন্ন খবরে বেড়েছে পেঁয়াজের বাজার দর। গত কাল ১০৫ টাকা কেজি পাইকারী পেঁয়াজ থাকলে এলসি
খুলেছে এই খবর সকালে বাজার দর তুলনামূলক কিছুটা কম। আজকে সকালে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৯৫ টাকা পর্যন্ত।
জাজিরা মিরাশার চাষী বাজারের
কমিটির সভাপতি ও আড়ৎ ব্যবসায়ী আবদুল জলিল মাদবর জানায়, গত বছরের তুলনায় এবছর পেঁয়াজের
উৎপাদন কম এবং ফলনও কম। গত বছর পেঁয়াজের উৎপাদন এবং ফলন দুইটাই বেশি ছিলো। এবছর পেঁয়াজের
বীজের দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক পেঁয়াজ লাগাতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
পেঁয়াজের সর্বোপরি বাজার ও উৎপাদন নিয়ে
কথা হয় শরীয়তপুর জেলা উপসহকারী কৃষি অফিস্যার বিষ্ণুপদ বিস্যাসের সাথে, তিনি জানায়
এবছর জেলার তাদের পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৪২৫ হেক্টর। তবে পেঁয়াজের চাষ তাদের
লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম হয়েছে, এবছর জেলায় মোট পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৩৯০৭ হেক্টর জমিতে। জাজিরায়
মোট পিয়াজের চাষ হয়েছে ২০১০ হেক্টর জমিতে।
এ বছর জেলায় পেঁয়াজ চাষীদের সরকারী ভাবে
৫২০ জন কৃষককে ১ কেজি করে পেঁয়াজের দানা, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে
বিতরণ করা হয়েছে।