সশস্ত্র দুই বাহিনীর সংঘাত শুরুর পর থেকে
এ পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ সুদান ছেড়ে পালিয়েছে। দেশটির ভেতর বাস্তুচ্যুত হয়েছে
আরও তিন লক্ষাধিক বাসিন্দা। দ্রুত এ সংঘাতের সমাপ্তি না হলে ‘সর্বাত্মক বিপর্যয়’ নেমে আসবে বলে
সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। খবর বিবিসির।
উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে সেনাবাহিনী এবং
আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) তিনদিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত
হলেও রাজধানী খার্তুমে এখনো তীব্র লড়াই চলছে।
সোমবার (১ মে) সুদানে নিযুক্ত জাতিসংঘের
বিশেষ দূত ভলকার পার্থেস বলেছেন, উভয় পক্ষ একটি ‘স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য’ যুদ্ধবিরতির
আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। আলোচনার সম্ভাব্য ভেন্যু হতে পারে সৌদি আরব।
আরও পড়ুন: সংঘাতে সুদান থেকে পালাতে পারে ৮ লাখ মানুষ : জাতিসংঘ
যদি সত্যিই শান্তি আলোচনা শুরু হয়, তবে
দু’পক্ষের মধ্যে
সংঘাত শুরুর পর থেকে এটিই হবে প্রথম বৈঠক।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে,
গত ১৫ এপ্রিল দেশটিতে সংঘাত শুরুর পর থেকে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন
চার হাজারেরও বেশি।
কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি মিললেও
তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। আরএসএফ’কে দুর্বল করতে খার্তুমে বিমানহামলা চালিয়ে
যাচ্ছে সেনাবাহিনী। লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমের দারফুর অঞ্চলেও।
আরও পড়ুন: ফ্রান্সে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক পুলিশ আহত
ইউএনএইচসিআর’র মুখপাত্র ওলগা
সাররাডো জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেছেন, সংঘাত থেকে বাঁচতে অন্তত এক লাখ লোক সুদান ছেড়ে
পালিয়েছে। শরণার্থীরা ভিড় করছেন প্রতিবেশী মিশর এবং চাদের সীমান্তেও।
বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ তাদের নাগরিকদের
সরিয়ে নেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেছে। মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে, তারা নিজেদের এবং ‘বন্ধুত্বপূর্ণ
দেশগুলোর’ নাগরিক মিলিয়ে
২০০ জনেরও বেশি লোককে সুদান থেকে সরিয়ে নিতে চারটি সামরিক প্লেন পাঠাচ্ছে।
সুদানে কীভাবে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা
হবে, মূলত তা নিয়ে দুই ক্ষমতাধর সামরিক অধিনায়কের দ্বন্দ্ব থেকে এই লড়াই চলছে।
আরও পড়ুন: সুদানে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়লেও চলছে সংঘর্ষ
দেশটির বর্তমান সামরিক সরকার চলে মূলত
সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে। তার সঙ্গে উপনেতা হিসেবে রয়েছেন
আরেকটি আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান
হেমেডটি দাগালো। বেসামরিক শাসনে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী এ দুটি বাহিনীকে
একীভূত করার কথা।
কিন্তু আরএসএফ তাদের বিলুপ্ত করার বিপক্ষে
এবং এই পরিকল্পনা থামানোর জন্য নিজেদের বাহিনীকে রাস্তায় নামায়। এরপর তা সেনাবাহিনী
এবং আরএসএফের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে।