এনআইডি জালিয়াতি করে স্বামীর সহযোগিতায় শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা বানানো কুড়িগ্রামের সেই গৃহবধূ এবার আদালতে হলফনামার মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মজনু মিয়ার আদালতে গেলে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে হলফনামা করার চেষ্টার অপরাধে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে আদালত।
এ ঘটনায় আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে গৃহবধূ সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) নুরুল হুদাকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দিয়েছেন।
এর আগে, গৃহবধূ সোনালীর বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিতে সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশে তার মুক্তিযোদ্ধা শ্বশুরকে বাবা এবং শাশুড়িকে মা দেখিয়ে এনআইডি তৈরি করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে আরটিভি অনলাইনসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সোনালী খাতুন নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙা গ্রামের আনিছুর রহমানের স্ত্রী। সম্প্রতি তার স্বামী আনিছুর রহমান চেক ডিজঅনারের (এনআই অ্যাক্ট) একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। সোনালীর বাবার নাম রবিউল হোসেন এবং মায়ের নাম আছমা। তার পৈত্রিক নিবাস উলিপুর উপজেলার গুনাই গাছের নন্দুনেফরা গ্রামে।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে অভিযুক্ত গৃহবধূ সোনালী নিজের ও তার বাবা মায়ের নামের স্থলে দেওয়া শ্বশুর শাশুড়ির নাম পরিবর্তন করে তার প্রকৃত বাবা মায়ের নাম দিয়ে হলফনামা করতে যান। তার দাখিলকৃত কাগজপত্রে তিনি নাম ও জন্ম তারিখ ১৯৯০ সাল পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ ১৯৯৪ সাল দেখিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি জন্ম সনদ দাখিল করেন। তার সেই জন্ম সনদের তথ্য ব্যবহার করে নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু তাকে নাগরিকত্ব সনদ প্রদান করেন।
এ ছাড়াও তার দাখিলকৃত বিয়ের কাবিন নামায় দেখা যায়, কাজি কর্তৃক সরবরাহ করা কাবিন নামায় বয়সের ঘর ফাঁকা রেখেই কাজি কাবিন নামার প্রতিলিপি সরবরাহ করেছেন। সরবরাহকৃত সকল সরকারি কাগজপত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় আদালত সোনালিকে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে গৃহবধূ সোনালী, সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌর এলাকার কাজি নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, এ বিষয়ে এজাহার পেয়েছেন তিনি। আটক গৃহবধূকে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হবে।