তুরস্কের ১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ফলপ্রসূ
নির্বাচনে ভোট দিয়েছে দেশটির জনগণ। জরিপ বলছে, এবারের নির্বাচনে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়েছে, যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের ২০ বছরের শাসনামলের অবসান
ঘটাতে পারে।
এবারের নির্বাচনে তুর্কী প্রেসিডেন্টের সামনে
কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোলু।
ছয়টি বিরোধী দল নিয়ে গঠিত জোট ‘টেবিল অব সিক্সের’ প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। তাছাড়া বেশকিছু সরকারবিরোধী গ্রুপও কিলিচদারোলুকে
সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: মোখার তাণ্ডবে মিয়ানমারে নিহত ৩
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শুক্রবারের
(১২ মে) দুটি জনমত জরিপ অনুযায়ী, সরাসরি জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোটের বেশিই
যেতে পারে কিলিচদারোলুর পক্ষে। তবে রোববারের (১৪ মে) নির্বাচনে কেউই যদি ৫০ শতাংশের
বেশি ভোটে জিততে না পারেন, তাহলে ২৮ মে আরেকটি নির্বাচন হবে।
এদিকে বিবিসি বলছে, এবারের নির্বাচনে যারা
ভোট দিচ্ছেন তাদের আট শতাংশই প্রথমবারের ভোটার। তাই স্বাভাবিকভাবেই এবারের নির্বাচনী
প্রচারণায় সব প্রার্থী তরুণ ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন। তবে এরদোয়ান জোর দিয়েছেন
প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির ওপর। অন্যদিকে, কিলিচদারোলু আরও বেশি স্বাধীনতা
ও উন্নত কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে চলছে মোখার তাণ্ডব
খান নামের ১৮ বছর বয়সী এক প্রথমবারের ভোটার
বলেন, গত ২০ বছরে এরদোয়ান যথেষ্ট করেছেন। এখন আমি পরিবর্তন চাই। এটা বলার জন্য যদি
আমাকে জেলে রাখা হয়, তাতেও আমার কিছু যায় আসে না।
আঙ্কারার এক দম্পতি বলে, এবারের নির্বাচন
তুরস্কের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হবে ও আমাদের দুই বছরের মেয়ে সন্তানের জন্য ভাল
ভবিষ্যত নিয়ে আসবে।
একজন বয়স্ক নারী ভোটার বলেন, আজ তুরস্ক
গণতন্ত্রের মাধ্যমে একজন ‘স্বৈরশাসক’ থেকে মুক্তি পাবে বলে আশা করছি।
আরও পড়ুন: লিঙ্গ পরিবর্তন ইস্যুতে যুগান্তকারী আইন আনছে জার্মানি
অধিকাংশ তরুণের অভিযোগ, সরকারি হিসাবে বর্তমানে
তুরস্কে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশ। লাগামহীন এ মূল্যস্ফীতির কারণে নিজ দেশে
জীবন ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে বলে দাবি তরুণদের। দেশটির নাজুক এ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির
জন্য তারা এরদোয়ানের গৃহীত নীতিমালাকে ব্যাপকভাবে দায়ী করছেন।
তবে ২০ বছর বয়সী সালিহ’র স্পষ্ট বক্তব্য, আমি মনে করি এরদোয়ান একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা। তুরস্কের রাজনীতিতে
এ ধরনের ক্যারিশমা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
তুরস্কের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী নেতা এরদোয়ান
ন্যাটোর সদস্য ও ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশটিকে একটি বৈশ্বিক নেতৃত্বে পরিণত করেছেন।
নতুন নতুন অবকাঠামোসহ বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পের মাধ্যমে তুরস্কের আধুনিকীকরণ ঘটিয়েছেন
ও দেশটিতে একটি আধুনিক সামরিক শিল্প গড়ে তুলেছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান ভ্রমণে তিন দেশের সতর্কবার্তা
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও দুজন
প্রার্থী লড়াই করছেন। তাদের একজন হলেন মধ্য-বামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী মুহাররাম ইঞ্জে।
অপরজন হলেন ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী সিনান ওগান। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে তরুণ ভোটারদের
কাছে এ দুজন প্রার্থীরও গ্রহণযোগ্যতা দেখা গেছে।