বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে
রূপ নিয়েছে। এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে
অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। এরই মধ্যে চেন্নাইয়ে
প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে অনেক আবাসিক এলাকা। চেন্নাইয়ে সোমবার
পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চেন্নাই পুলিশ জানিয়েছে, শহরের বেসান্ত নগর এলাকায় গাছ পড়ে
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এক নারী ও পুরুষের
অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া চেন্নাই শহরে আরও দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
খবর-এনডিটিভি
চেন্নাইয়ে প্রবল বর্ষণে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে। চেন্নাই বিমানবন্দর মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। রাজ্য সরকার চেন্নাই, চেঙ্গলপাট্টু, কাঞ্চিপুরম ও তিরুভাল্লুর জেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের যতটা সম্ভব বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন>> ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ১১ পর্বতারোহীর মৃত্যু
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত বাতাসের
গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার। এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সে কারণে তামিলনাড়ুর
চেন্নাই, তিরুভাল্লুর ও কাঞ্চিপুরম জেলার কাছে বাতাসের গতিবেগ ধীরে ধীরে কমছে। তামিলনাড়ু
উপকূলের কাছে আরও কমবে। ধীরে ধীরে বাড়বে অন্ধ্র প্রদেশের দিকে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত
বাতাসের গতিবেগ এমন চলবে।
তিনি জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ছোট ও মাঝারি গাছ উপড়ে পড়তে পারে। মাটির ঘরে বড় আকারের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া টেলিফোন ও বৈদ্যুতিক খুঁটির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। ঝড়ের কারণে জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণ উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন>> লোহিত সাগরে দুই ইসরায়েলি জাহাজে হামলা
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
সোমবার তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয়
সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, পর্যাপ্ত জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর
কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত দলও সহায়তার জন্য প্রস্তুত।
অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার কালেক্টর
রাজা বাবু বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ
চালাতে প্রস্তুত স্বেচ্ছাসেবকরা। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে আশ্রয়
নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আটটি জেলার জন্য সতর্কতা
জারি করেছে। জেলাগুলো হলো- তিরুপতি, নেলোর, প্রকাশম, বাপটলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী,
কোনাসিমা ও কাকিনাদা। পুদুচেরি উপকূলীয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে
মানুষের চলাচল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।