ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির নিকটবর্তী জেলা
গুরগাঁওয়ে এবার একটি মসজিদ জ্বালিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। পরে মসজিদের ইমামকেও গুলি
করে হত্যা করেছে তারা। স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে, প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল মসজিদটিতে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানিয়েছেন দিল্লি
পুলিশের পূর্বাঞ্চলের ডিসিপি নিতীশ আগারওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, অগ্নিসংযোগের পর দলটি
এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে আর সেই গুলিতেই নিহত হন মসজিদের নায়েবে ইমাম।
স্থানীয় পুলিশ কমিশনার কালা রামাচন্দ্রন
বলেন, ‘সোমবার দিবাগত
রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে আঞ্জুমান মসজিদে একদল লোক আক্রমণ করলে একজন নিহত এবং অন্য
একজন আহত হন। পরে খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর কর্মীরা আগুন নেভান। পুলিশ হামলাকারীদের শনাক্ত
করেছে এবং রাতভর অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।’
আরও পড়ুন: ভারতে গার্ডার লঞ্চিং মেশিন ভেঙে নিহত ১৬
গতকাল সোমবার বিকালে বজরঙ্গী ডাল ও বিশ্ব
হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়।একসময় তা রূপ নেয় জাতিগত দাঙ্গায়। এখন
পর্যন্ত এই সহিংসতায় অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন নিরাপত্তা রক্ষীও
রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ঘটনার
সূত্রপাত হিসেবে বলা হয়েছে, গুরুগ্রাম–সংলগ্ন নুহ এলাকায়
একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা চলাকালে সংঘর্ষ বাধে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ব্রিজ মণ্ডল জালাভিষেক
যাত্রা নামে শোভাযাত্রা বের করে। এই শোভাযাত্রা গুরুগ্রাম–আলওয়ার জাতীয়
মহাসড়কে পৌঁছা মাত্রই একদল তরুণ শোভাযাত্রা থামিয়ে দেন। এরপর তারা পাথর ছুড়তে শুরু
করেন।
পুলিশ জানায়, তারা পাথর নিক্ষেপ ছাড়াও
গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় দুইজন নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে
এবং তৃতীয়জন রাতভর সহিংসতা চলাকালীন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের হরিয়ানায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, নিহত ২
সহিংসতার তীব্রতা বাড়তে থাকলে সরকারি ও
ব্যক্তিমালিকানাধীন বেশ কয়েকটি গাড়ি উন্মত্ত জনতার রোষের মুখে পড়ে। সন্ধ্যা নাগাদ এই
সহিংসতা গুরুগ্রাম-সোহনা হাইওয়ে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সেইসময় বেশকয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে
দেওয়া হয় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে কারফিউ
জারি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এমএল খাত্তার এই সহিংসতাকে দু”খজনক বলে উল্লেখ
করেছেন। তিনি সবপক্ষকে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন।