আজঃ মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪
শিরোনাম

ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসারদের পার্টিতে ধর্ষণ, ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ অক্টোবর ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ অক্টোবর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসারদের একটি পার্টিতে এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন এক নারী। সেই নারীই এবার অভিযোগ তুলেছেন, অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত হতে তাকে টু ফিঙ্গার টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে; যা দেশে নিষিদ্ধ।  

ওই নারীর এই টু ফিঙ্গার টেস্টের অভিযোগটি আবার মানতে রাজি না ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরী। ভয়েস অব আমেরিকা তাদের খবরে বলছে, বিবেক রাম চৌধুরী বলেছেন, কোনো টু ফিঙ্গার টেস্ট হয়নি। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা রক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্যাতনের শিকার নারী আরও অভিযোগ করেছেন তাকে তার যৌন সম্পর্কের ইতিহাস নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে। 

বিমানবাহিনী প্রধান আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনায় বিমানবাহিনীর আইন খুবই কঠোর। নারী অফিসারের টু ফিঙ্গার টেস্ট করানোর ভুল খবর বেরিয়েছে। কোনো টু ফিঙ্গার টেস্টই হয়নি। আমরা নিয়মবিধির ব্যাপারে পুরোপুরি সচেতন। যাবতীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অফিসারের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের এই অভিযোগের তদন্তভার বিমানবাহিনীর হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত ২৯ বছর বয়সী ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের বিচার হবে কোট মার্শাল আইনে, তা জানিয়েছে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাত্তুরের আদালত। অভিযুক্তকে ইতোমধ্যে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ভারতের মহিলা কমিশন এক বিবৃতিতে বলছে, বিমানবাহিনীর একজন নারী অফিসারের তোলা অভিযোগের বিষয়ে তারা ভারতীয় বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা ভারতীয় বিমানবাহিনী ডাক্তারদের আচরণে অত্যন্ত হতাশ, ক্ষুব্ধ, কেননা তারা নির্যাতিতার টু ফিঙ্গার টেস্ট করিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন, নির্যাতিতার সম্মান, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারেও হস্তক্ষেপ করেছেন।

প্রশিক্ষণ নিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কলেজে যাওয়া ওই নারী অফিসার অভিযোগ করেছিলেন, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে অফিসারদের মেসে পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। মাদকাসক্ত হয়ে ভোরে তার ওপরে চড়াও হন অভিযুক্ত। তখন পায়ে চোট থাকায় ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর তিনি আবিষ্কার করেন, তাকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে থানায় যান। ওই নারীর দাবি, বিমানবাহিনীতে দুবার তাকে অভিযোগপত্র তুলে নিতে চাপ দিয়ে বাধ্য করা হয়। আরেকবার তাকে বয়ান বদল করা একটি চিঠিতে সই করতে বলা হয়, কিন্তু তিনি রাজি হননি। ২০ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী অফিসার। ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিতেশ হরমুখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নির্যাতিতার অভিযোগ, ধর্ষণ প্রমাণের জন্য টু ফিঙ্গার টেস্টের কথা বলা হয় ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাসপাতালে। পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেন বাহিনীর দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এতে সংবাদমাধ্যমে বিমানবাহিনীর বদনাম হবে বলে জানানো হয় তাকে। এর পরই মূলত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ওই নারী।

বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে বিমানবাহিনী পিটিশন দাখিল করে জানিয়েছে, অফিসারকে গ্রেফতার করার অধিকার স্থানীয় পুলিশের নেই। সেনা আদালতে তার বিচার করা যাবে। অভিযুক্তকে বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক।


আরও খবর



আশুলিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শরবত বিতরণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সাভার প্রতিনিধি

Image

ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় এবং উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি, মোজাফফর হোসেন জয়ের সার্বিক সহযোগিতায়, তীব্র গরম ও তাপপ্রবাহে আশুলিয়ায় পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ করেছে সামাজিক ব্লাড ডোনার টিমের স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা।

গতকাল সোমবার দুপুরে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থানরত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে, সামাজিক ব্লাড ডোনার টিমের শেরআলী মার্কেট শাখা এই শরবত বিতরণ করেছে।

শেরআলী মার্কেট শাখা টিম লিডার ইমাম হুসাইন বলেন, আমরা পানীয় লেবুর শরবতের পাশাপাশি খাবার সেলাইন ও পানির বোতল বিতরণ করছি। সামনের দিনগুলোতেও আমাদের অন্যান্য শাখা টিম এই কাজ চলমান রাখবে যতদিন তাবদাহ থাকবে। এছাড়াও দেশের এই বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে, আমাদের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি চলমান রয়েছে, যা বাস্তবায়নে আমাদের সকল শাখা টিম একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।

সংগঠনটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ মোজাফফর হোসেন জয় এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও আজকের দর্পণের আশুলিয়া প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান খাইরুল, দৈনিক নয়া দিগন্তের আশুলিয়া প্রতিনিধি এবং আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য মোঃ মশিউর রহমানসহ আরও অনেকে এসময় এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

সাংবাদিক মোজাফফর হোসেন জয় জানান, কয়েকদিন ধরে বাড়ছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনসাধারণ। বিশেষ করে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়ছে চরম বিপাকে। রাস্তায় বেড় হলে প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণার্ত হচ্ছেন তারা। এতে করে হিটস্ট্রোকের সম্ভবনা রয়েছে। তাদের কথা ভেবেই শরীর শীতল রাখার জন্য সামাজিক ব্লাড ডোনার টিম এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ করে  আরও জানান, রাস্তায় বেড় হলে রোদ থেকে কিছুটা রক্ষার জন্য ছাতা ও একটি পানির বোতল সঙ্গে নিতে। যাতে হিটস্ট্রোকের মতো ঝুঁকি থেকে আমরা সকলে রেহাই পেতে পারি।

উল্লেখ্য এই সংগঠনটির উদ্যোগে এর আগেও ফ্রী ব্লাড গ্রুপিং ও রক্ত দেওয়াসহ নানা রকম সামাজিক কাজ করে আসছে।


আরও খবর



বায়ুদূষণে শীর্ষে বাগদাদ, ঢাকার অবস্থান ৬

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ বাড়ছে। মাঝে শহরটির বাতাসের মানের কিছুটা উন্নতি হলেও কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় ঢাকার বাতাসের মান আবারও দূষণের দিকে যাচ্ছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৫২ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৬ নম্বরে উঠে এসেছে ঢাকা। আজ ঢাকার বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য অস্বাস্থ্যকর’।

দূষিত শহরের তালিকায় ৪০১ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ইরাকের বাগদাদ, ১৯৭ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, ১৬৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে নেপালের কাঠমান্ডু, ১৬১ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই শহর। এ ছাড়া ১৫২ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে ভারতের কলকাতা।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে মাঝারি’ বা গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ’ বা ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে দিনের পর দিন ঢাকায় বায়ুদূষণ বেড়েই চলেছে। এর তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, বিশ্বে বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বাড়ছে।


আরও খবর



বিরিয়ানির প্যাকেট নিতে এসে লাশ হল ৬ বছরের শিশু

প্রকাশিত:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রবিউল বাশার খান, কুমিল্লা

Image

কুমিল্লায় টাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল ছয় বছরের শিশু সুমাইয়া। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৮ মে) বিকেলে উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের সরকার বাড়ি মসজিদের পাশে।

নিহত সুমাইয়া পদ্মকোট গ্রামের রিক্সা চালক আব্দুল আউয়ালের মেয়ে।

পদ্মকোট বাজারের প্রত্যক্ষদর্শি কাঠমিস্ত্রি জুয়েল মিয়া জানান, পদ্মকোট গ্রামে একটি ঈদগাঁহ প্রতিষ্ঠার জন্য এলাকার সভা শেষে আগতদের বিরিয়ানির প্যাকেট বিতরণ করা হয়। ওই বিরিয়ানি নিতে এসে শিশু ফারজানা আফরুজা সুমাইয়া সড়কের পাশে দাড়িয়েছিল, এসময় উপজেলার চরবাকর মনির ব্রিকস ফিন্ডের ইট বহনকারী একটি দ্রুতগামী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারাত্মক আহত হয়। স্থানীয়রা সুমাইয়াকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ফারহানা ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নয়ন মিয়া জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহতের বিষয়ে কেউ মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ করেননি। ইট বহনকারী ট্রাক আটক করা হলেও ড্রাইভার পালিয়ে যায়।

নিউজ ট্যাগ: কুমিল্লা

আরও খবর



অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো পরীক্ষা (ভিডিও)

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকত অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস। একইসঙ্গে সংযোগ দিয়ে পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল।

প্রশ্নপত্রের উত্তর সমাধানের জন্য বাইরে থেকে কাজ করত আরেকটি চক্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে ডিভাইসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের। বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ করা সংঘবদ্ধ এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. জুয়েল খান (৪০), মো. রাসেল (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল (৩৯), মো. আব্দুর রহমান (৩৮), মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫), মো. আজহারুল ইসলাম (২৯) এবং মো. মাসুম হাওলাদার (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ১০টি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, সাতটি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিম কার্ড এবং একটি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।

রোববার (১২ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সাপ্লাই করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রথমত তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্র ম্যানেজ করে প্রশ্নের ফটোকপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের একটা টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সলভ করে ফেলে। এরপর তারা উত্তরগুলো বলতে থাকে। পরীক্ষার্থীর কাছে যে ক্ষুদ্র ডিভাইস থাকে সেটা পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে থাকে। আর পকেটে একটা রাউটার থাকে। অথবা মেয়েদের অন্তর্বাসে বা ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড একটা সিম রাখে। এরপর বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করে সঙ্গে সঙ্গে  পরীক্ষার্থী শুনতে পাবে এবং ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরগুলো সলভ করে ফেলবে। চক্রটি বাইরে থেকে উত্তর বলবে আর যাদের অন্তর্বাস বা গেঞ্জির সঙ্গে ডিভাইস থাকবে তারা ভেতরে থেকে উত্তরগুলো শুনে সঙ্গে সঙ্গে এমসিকিউ দাগিয়ে ফেলবে।

হারুন অর রশিদ বলেন, দিন দিন এভাবে ক্রাইমের প্যাটার্নটা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এক সময় আমরা নকল প্রতিরোধের জন্য কাজ করেছি। সে সময় তারা পরীক্ষার হলে বই নিয়ে যেত। এভাবে কিন্তু দিন যাচ্ছে অপরাধীরা তাদের অপরাধের প্যাটার্ন চেঞ্জ করছে। আমরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছি। এখন সর্বশেষ আমরা যেটা পেলাম সেটা হচ্ছে তারা ক্ষুদ্রাকৃতির বল ব্যবহার করছে এবং ডিভাইসটা এমন জায়গায় রাখছে যেখানে ধরার বা চেক করার কোনো স্কোপ নেই।

ডিবি প্রধান বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কালেক্টর (গ্রেড ২) ও বুকিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (গ্রেড ২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ আরও বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় এসব পন্থায় অপরাধ কর্ম সংঘটিত করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে। চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

হারুন অর রশিদ বলেন, চক্রের মূলহোতা জুয়েল খান বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করত। মো. রাসেল ও মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল এবং মো. আব্দুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহারবিধি শিখিয়ে দেয়। মো. আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের অভ্যন্তর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধা মতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর তাদের সমাধান টিম অতি দ্রুত সেই প্রশ্নপত্র সমাধান করে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিত।

তিনি বলেন, বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত এই ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসটি মেয়েদের অন্তর্বাস ও ছেলেদের স্যান্ডো গেঞ্জির ভেতরে এমনভাবে সেলাই করে সংযুক্ত করা থাকে যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। ডিভাইসে একটি মোবাইল সিম কার্ড সংযুক্ত থাকে। কেন্দ্রের বাইরে থেকে ওই নম্বরে কল করা মাত্রই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিসিভ হয়ে যায়। এই ডিভাইসের সঙ্গে ব্লু-টুথের মাধ্যমে কানেক্ট থাকা ছোট্ট বল আকারের রিসিভার স্পিকারটি পরীক্ষার্থীদের কানের ভেতরে থাকে। ফলে বাইরে থেকে উত্তর বলে দিলে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীরা অনায়াসে তা লিখতে পারে। পরীক্ষা শেষে শক্তিশালী কলম সদৃশ চুম্বকের (ডিভাইসের বিশেষ অংশ) সহায়তায় সেটি কানের ভেতর থেকে বের করা হয়।


আরও খবর



প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে সমালোচিত সেই অধ্যক্ষকে অবশেষে বরখাস্ত

প্রকাশিত:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নরসিংদী প্রতিনিধি

Image

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অডিও ভাইরাল কাণ্ডে অবশেষে নরসিংদীর পলাশের ইছাখালী ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার সমালোচিত সেই অধ্যক্ষ আ.ক.ম. রেজাউল করিমকে বরখাস্ত  করা হয়েছে। শনিবার (১৮মে) জেলা প্রশাসন নরসিংদীর চিঠির আলোকে মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে তাকে বরখাস্ত  করা হয়। সেই সাথে বিতর্কিত পরীক্ষার নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়। পদমর্যাদার ভিত্তিতে অত্র মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আমজাদ হোসেনকে নতুন ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন অত্র মাদ্রাসার সভাপতি আল- মুজাহিদ হোসেন তুষার।

গভনিং বোর্ডের একাধিক সদস্য জানান, আগের সভাপতি পদত্যাগ করায় এতো দিন এ  বিষয়ে  সিদ্ধান্ত  নেওয়া যায়নি। আজকের সভায় জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে অধ্যক্ষকে বরখাস্ত  করা হয়েছে। সেই সাথে  বিতর্কিত পরীক্ষার নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়োগ স্থগিত  করা হয়েছে।

মাদ্রাসার সভাপতি ও ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আল মুজাহিদ হোসেন তুষার জানান, জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে আজকের সভায়   অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে  বিতর্কিত পরীক্ষার নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় অত্র মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ সকল সদস্যবৃন্দের প্রতি শিক্ষক -শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ  সচেতন মহল সন্তুষ্টি  প্রকাশ করেছেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসক জনতা এলাকায়  মিষ্টি বিতরণ করেন।

এর আগে গত ১৩, ১৪ ও ১৫ মে  নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে আড়াই মাসেও স্ব-পদে বহাল অভিযুক্ত অধ্যক্ষ শিরোনামে দেশের একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদে বিতর্কিত পরীক্ষার নিয়োগপ্রাপ্তরা মাদ্রাসায় যোগদান করে নিয়মিত চাকরি ও করছেন।  প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে ব্যবস্থা নিতে আড়াই মাসে ও জেলা প্রশাসনের চিঠি ও স্থানীয় সংসদ সদস্যর নির্দেশনা  কার্যকর হয়নি তা সংবাদে তুলে ধরা হয়। আর এসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের  ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যবৃন্দের কার্যকরী ভূমিকা কি তা জানতে চাওয়া হয়। 

এর আগে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ আ. ক. ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরিক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঘটনার ব্যবস্থা নিতে  তৎকালীন সভাপতি সরকার   কাউছার আহম্মদকে জেলা প্রশাসন নরসিংদী থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। চিঠিতে অধ্যক্ষ আ.ক. ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অসদাচরণের দায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, নিয়োগ প্রার্থীদের চাকরি প্রধানের প্রলোভন দেখিয়ে আর্থিক লেনদেনের ভিত্তিতে  প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। যা প্রকাশিত অডিও ক্লিপের কথোপথনের  মাধ্যমে  সু-স্পষ্ট  ভাবে  প্রতীয়মান। এরপর পর সভাপতি  সরকার কাউসার আহমেদ পদত্যাগ করায়  গত ১২ মে  নতুন সভাপতি আল মুজাহিদ হোসেন তুষারকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন নরসিংদী থেকে আর ও একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।

উল্লেখ, গত ১৪ ডিসেম্বর তিনটি শূন্য পদের বিপরীতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে ইবতেদায়ী শাখার প্রধান, কম্পিউটার অপারেটর ও ল্যাব সহকারী পদের জন্য আবেদন চাওয়া হয়।

এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকেলে কম্পিউটার অপারেটর পদে পলাশ উপজেলার তানভীর আহমেদ ও ল্যাব সহকারী পদে শিবপুর সাধারচর এলাকার ইতি আক্তারকে নির্বাচিত করা হয়।

এরপর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, নিয়োগ পরীক্ষার অন্য আবেদনকারীর সঙ্গে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের ফোনে প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হলে দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হলে  সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনতে সর্বমহলে ব্যাপক আলোচনা ও  সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

নিউজ ট্যাগ: নরসিংদী

আরও খবর