বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিংকেনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় এ বৈঠক শুরু হয়।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় মার্কিন সম্পৃক্ততা প্রত্যাশার পাশাপাশি সব দল নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার যে আন্তরিক, ঢাকার এমন বার্তাও দেওয়া হবে।
২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা মসৃণ রাখার জন্য ধারাবাহিক বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে মার্কিনিদের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বাজার-সুবিধা নিয়েও আলোচনা করতে চায় বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট অবস্থান রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি, বাকস্বাধীনতা, সুশীল সমাজের কাজ করার জায়গা, আইনের শাসন নিয়ে সাম্প্রতিক মানবাধিকার রিপোর্টে তাদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে।
এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে কোন বিষয়গুলো আলোচনা হবে, সেগুলো আগে থেকে ঠিক করা থাকে এবং সেই অনুযায়ী উভয়পক্ষ প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসে।
সূত্র জানায়, ঢাকার পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাওয়া, বহুপক্ষীয় সহযোগিতাসহ অন্য বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। অন্যদিকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র, রোহিঙ্গা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন অবস্থানকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বানসহ অন্য বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনে সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা চাই স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন। আমেরিকাও তা-ই চায়। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে আমাদের দুই দেশের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। অবশ্যই বলব আমরা খুব লাকি। আমরা পরপর তিনবার তার দাওয়াত পেলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন মহাসড়কের সঙ্গে আমেরিকা যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। আর আমাদের সম্পর্কেরও উন্নতি হয়েছে। দুই বছর কোভিডের জন্য আমাদের আনাগোনা কম ছিল। এখন তা অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কী আলাপ হবে জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, ‘বাণিজ্য যেন বাড়ানো যায়, সেই নিয়ে আলাপ হবে। আমেরিকা চায়, বাংলাদেশে যেন স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের নীতিও নির্বাচন। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছি।’
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছে গণতন্ত্র সমুন্নত করার জন্যই। সে কারণে আমাদের গণতন্ত্র শেখানোর প্রয়োজন নেই। এটা আমাদের অস্থিমজ্জায়। আমাদের রক্তে গণতন্ত্র। সরকার যে সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী আমরা সেটা তাদের জানাব।’