নতুন করে পবিত্র
কাবাঘরের চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছেন শায়েখ আবদুল ওয়াহাব বিন জাইন আল-আবিদিন আল-শাইবি।
গতকাল সোমবার (২৪ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পবিত্র কাবাঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল হারামাইন শরিফাইনের এক খবরে এ তথ্য
জানানো হয়েছে।
শনিবার (২২
জুন) ইন্তেকাল করেন পবিত্র কাবাঘরের চাবি রক্ষক ড. শায়খ সালেহ আল শাইবা। তার ইন্তেকালের
পর কাবাঘরের নতুন অভিভাবক মনোনীত করা হয়েছে ৭৮ বছর বয়সী শায়েখ আবদুল ওয়াহাব বিন জাইন
আল-আবিদিন আল-শাইবিকে।
তিনি মহানবী
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিখ্যাত সাহাবি উসমান বিন তালহা রা.-এর
১১০তম উত্তরসূরি।
শায়েখ আবদুল
ওয়াহাব বিন জাইন আল-আবিদিন আল-শাইবিকে পবিত্র কাবার চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সৌদি
আরবে বিশিষ্ট ব্যক্তি, অভিজাত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রাচীন ঐতিহ্য
ও রীতিনীতির অনুসরণে তার হাতে কাবাঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। এখন থেকে তিনিই পবিত্র
এই ঘরের চাবি সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন।
কাবার চাবির
দায়িত্ব গ্রহণের সময় শায়েখ আবদুল ওয়াহাব বিন জাইন আল-আবিদিন আল-শাইবি তার উপর রাখা
আস্থার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং পবিত্র কাবা ঘরের ঐতিহ্য ও পবিত্রতা বজায় রাখতে
প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার
আহ্বান জানান এবং মুসলিম বিশ্বের সেবায় তার পূর্বসূরিদের মতো অবদান রাখার অঙ্গীকার
করেন। আল-শাইবা পরিবার বংশ পরম্পরায় পবিত্র কাবা রক্ষার সম্মানিত দায়িত্ব পালন করছে।
যা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে তাদের সম্মানিত করেছে।
প্রসঙ্গত, জাহেলি
যুগ থেকেই কাবাঘরের চাবি শায়বা গোত্রের কাছে থাকত। মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ সা.
নিজেই ওই গোত্রের উসমান ইবনে তালহার (রা.) কাছে চাবি হস্তান্তর করে তাকে সম্মানিত করেন।
এসময় তিনি বলে
দেন, ‘এখন
থেকে এ চাবি তোমার বংশধরের হাতেই থাকবে, একেবারে কেয়ামত পর্যন্ত। তোমাদের হাত থেকে
এ চাবি কেউ নিতে চাইলে সে হবে জালিম।’
সেই ধারা এখনো
চলমান। উসমান ইবনে তালহা রা.-এর বংশধরেরা পর্যায়ক্রমে চাবি বহন করে আসছেন। তাদের কাছ
থেকে চাবি নিয়েই বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের বাদশাহ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পবিত্র কাবা
ঘরে প্রবেশ করে থাকেন। তারাই কাবার দরজা খুলে দেন।
এ পর্যন্ত অসংখ্যবার
কাবার তালা-চাবি পরিবর্তন করা হয়েছে। কাবাঘরের চাবি একটি বিশেষ ব্যাগে রাখা হয়। এই
ব্যাগটি পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ নির্মাণ কারখানায় বানানো হয়। কাবাঘরের চাবি কখনো হারায়নি।
তবে বহু বছর পূর্বে এক ব্যক্তি এই চাবি চুরি করেছিল। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং
তার কাছ থেকে কাবাঘরের চাবি ফেরত নেয়া হয়। আব্বাসী, আইয়ুবী, মামলুক ও ওসমানিয়া যুগে
কয়েকবার কাবাঘর মেরামত করা হয়েছে। তখন প্রয়োজনমতো নতুন তালা-চাবিও বানানো হয়েছে।
২০১৩ সালের
১৮ নভেম্বর সর্বশেষ কাবাঘরের চাবি পরিবর্তন করা হয়। এখনো ওই তালা-চাবি ব্যবহার করা
হচ্ছে।